।। প্রথম কলকাতা।।
Netaji : নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে ভারতবাসীর কাছে আলাদা করে কোন ভূমিকা অবশ্য দিতে হয় না। তিনি তাঁর কাজের জন্যই সুভাষচন্দ্র থেকে নেতাজি হতে পেরেছিলেন । ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তাঁর মতো এক মহান চরিত্রের উপস্থিতি আজও উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে । প্রতিবছর ২৩ জানুয়ারি তাঁর জন্ম দিবস উপলক্ষ্যে ভারতবাসী শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। তিনি স্পষ্ট বক্তা সহ ছিলেন স্থির লক্ষ্যের মানুষ। এখনও পর্যন্ত সুভাষচন্দ্র বসুকে (Subhashchandra Bose) নিয়ে মানুষের কৌতুহল ধামাচাপা পড়েনি। তিনি বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে একজন রহস্য মানব হিসেবেই থেকে গিয়েছেন। আর সেই রহস্য তাঁর জীবনের শেষ ভাগকে কেন্দ্র করে।
তাকে নিয়ে এবং তাঁর অন্তর্ধান রহস্যকে কেন্দ্র করে বর্তমান সময়ে বহু সিনেমা , ওয়েব সিরিজ তৈরি হয়েছে। চলেছে বহু গবেষণা। নেতাজি বিষয়ক গবেষকরা ভিন্ন তথ্যের উপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন মতামত রেখেছেন। তবে নেতাজিকে নিয়ে এতটুকু মানুষের মধ্যে কৌতূহল কমেনি। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম (Young Generation) তাঁর সম্পর্কে আরও বেশি জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলা থেকে শুরু করে হিন্দি সিনেমা এবং ওয়েব সিরিজের মাধ্যমে তাঁর সম্পর্কে যতটুকু তথ্য পাওয়া যায় সব শুষে নেওয়ার চেষ্টা করেছে ভারতের ভবিষ্যৎরা।
তাই ওয়াকিবহাল মহল মনে করেন, নেতাজি হওয়া উচিত ভারতের ( India) আগামী ধারক এবং বাহকদের জীবনের আদর্শ। তিনি যে পথে নিজের জীবন চালিত করেছিলেন এবং তাঁর উদ্দেশ্য যতটা স্বচ্ছ ছিল ঠিক সেই পথেই তরুণ প্রজন্ম চালিত হোক। তবেই দেশের তথা জনজাতির প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট অধ্যাপক এবং নেতাজি বিষয়ক গবেষক সুগত বসু নেতাজি প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন, সুভাষ চন্দ্র বসু আজীবন দুটি বিষয়কে ভীষণভাবে গুরুত্ব দিয়ে দেখেছিলেন। প্রথমটি হল সাম্য এবং দ্বিতীয় হল সমানাধিকার। দুটোই একটা গণতান্ত্রিক দেশ গড়ে তোলার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ।
তাঁর কথায় আজাদ হিন্দ সরকারের প্রোক্লমিনেশনে স্পষ্ট ভাষায় সমাধিকারের কথা বলা হয়েছে। নেতাজি কখনই একথা বলেন নি যে , একে অপরকে অযথা সহ্য করতে হবে। বরং তিনি বলেছেন নিজের সংস্কৃতির সান্নিধ্যে থাকার কথা। দুজন ব্যক্তি যারা একই দেশের নাগরিক তাদের মধ্যে বোঝা পড়া থাকা চাই, অন্তর দিয়ে একে অপরকে জানা চাই , চেনা চাই। সহ নাগরিকের প্রতি ভালোবাসা থাকা চাই । যদি শুধুমাত্র আত্মকেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা করা হয় তবে নেতাজি এবং তাঁর মত আরও বীর সন্তানদের দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগকে যথাযথ সম্মান জানানো যাবে না।
অধ্যাপকের কথায়, নেতাজি দেশপ্রেম বলতে খাঁটি ভালবাসাকে বুঝতেন । তাঁর মতে দেশপ্রেম ছিল এমন আবেগ যা আমাদের সৃজনশীলতাকে অনুপ্রাণিত করবে। তিনি জানতেন দেশপ্রেমের দুটি দিক থাকতে পারে। একদিকে গেলে দেশ উন্নতির আলো দেখতে পারবে । আর অপরদিকে গেলে দেশবাসী জড়িয়ে পড়বে বিভেদ এবং কলহের মধ্যে। নিশ্চিতভাবে তিনি দ্বিতীয় পথের উদ্দেশ্যে তরুণ প্রজন্মকে চালিত করার স্বপ্ন দেখেননি। তাই নেতাজির মত এক মহান চরিত্রের আদর্শকে সামনে রেখে তরুণ প্রজন্ম চললে তাদের ব্যক্তিজীবন এবং সমাজ জীবন দুই উন্নতির পথে পাড়ি দেবে । আজকের দিনে তরুণ সমাজের মধ্যে নেতাজিকে নিয়ে যে কৌতুহল রয়েছে সেখানে তাদের সঠিক তথ্য জানার প্রয়োজন। নেতাজিকে নিয়ে আরও গভীরে চর্চা করার প্রয়োজন রয়েছে। আর যে সকল তরুণরা নেতাজিকে নিজেদের রোল মডেল ( Role Model) তৈরি করতে চান তাদের আরও দুটি শব্দ ‘ঐক্য’ এবং ‘সাম্য’- এর সঙ্গে পরিচয় ঘটা জরুরী।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম