।। প্রথম কলকাতা ।।
India Nepal: ভারতের ওপর ফুঁসছে নেপাল, অখন্ড ভারতের পর এবার সীতা-মা কাদের? কে বারবার ব্রেনওয়াস করছে নেপালের? সীতা মাকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি, ভারতের আবেগে ঘা ভারতের বড় কাজ রুখে দেওয়া হল কাঠমান্ডুতে। নেপাল যেন টগবগ করে ফুটছে৷ ভারতের সব কাজে এত বাধা? এত সমস্যা আদিপুরুষ সিনেমা নিয়ে রীতিমত হইচই পড়ে গিয়েছে নেপালে। সীতা মা- ভারতের নয় ছিলেন নেপালের কন্যা! এমনটাই সরাসরি দাবি নেপালের। এর পরিণতিতে কতটা মারাত্মক হল জানেন? ভারতের তরফ থেকে পাল্টা কি দাবি করা হল?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নেপালের এই দাবি আগেও ছিল সীতা মা নেপালের কন্যা৷ সম্প্রতি পরিচালক ওম রাউতের আদিপুরুষ সিনেম নিয়ে জোর বিতর্ক। নেপালে ইতিহাস কি বলছে সত্যিই কি সীতা মা নেপালের ছিলেন? অখন্ড ভারতের ম্যাপ দেখে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছিল নেপালের তরফ থেকে। নেপালের লুম্বিনি, সহ আরও দুই জায়গা কেন ভারতের বলে দেখানো হয়েছে? এবার আদিপুরুষ চলচ্চিত্রে সীতাকে ভারতের কন্যা বলায় রীতিমত বিদ্রোহ শুরু দিল প্রচন্ডর দেশ৷ যার ফলস্বরূপ বলিউডের সমস্ত ছবিতেই নিষেধাজ্ঞা লাগিয়ে দিল নেপাল। অনেকেই প্রশ্ন তুলছে ভারতের ওপর বারবার এত চোটপাট কেন? এবার সরাসরি দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বড় কোনও প্রভাব ফেলবে না তো?
কাঠমাণ্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহ নেপালের রাজধানীর সমস্ত সিনেমা হলে বলিউডের সমস্ত ছবির প্রদর্শন বন্ধ করার নির্দেশ জারি করেছেন। এমনকি ছবিতে সংলাপের আপত্তিকর অংশ, ‘‘সীতা ভারতের কন্যা’’
তিন দিনের মধ্যে সিনেমা থেকে মুছে ফেলতে হবে এমন নোটিশও জারি করা হয়। কিন্তু কিন্তু ছবির নির্মাতাদের তরফে এই বিষয়ে কোনও সাড়া না পেয়ে বলিউডের সব ছবি ব্যান করার সিদ্ধান্ত নেন নেপাল৷ কিন্তু এ নিয়ে ইতিহাসবিদরা কি বলছেন? এখানে কোনও বক্তব্যই প্রথম কলকাতার নিজস্ব নয়৷ বিভিন্ন ইতিহাসবিদদের মন্তব্য ও সংবাদমাধ্যমের তথ্যকে এখানে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সীতা মা রাজা জনকের কন্যা। এক্ষেত্রে অনেকেই বলে থাকেন নেপালের জনকপুরই সীতার জন্মস্থান। সেখানে রয়েছে জানকী মন্দির কিন্তু বিশেষজ্ঞদের এক অংশ বলছেন এত সহজেই এটা বলা যাবে না কারণটা খুঁজতে হবে জনকপুরের ইতিহাসে। তখন অবশ্য এই জায়গা জনকপুর ছিল না।
মিথিলা রাজ্যের রাজা ছিলেন জনক। তাঁর নামেই জনকপুর নাম হয়েছে পরে। এই মিথিলা রাজ্যের সীমানা শুধুমাত্র নেপালের পূর্ব তরাই অঞ্চলেই ছিল না। এছাড়াও বিহারের উত্তরদিকের বেশ কিছু এলাকাও মিথিলার মধ্যে ছিল। তেমনই একটি এলাকা বর্তমান বিহারের সীতামাড়ি। সেখানেও অবস্থিত সীতা জন্মভূমির প্রতীক জানকী মন্দির। ম্যাপে দেখলে দেখা যায়, সড়কপথে এই সীতামাড়ির সঙ্গে নেপালের জনকপুরের দূরত্ব মাত্র ৫৫ কিলোমিটার। তাই এই এলাকায় জনকরাজার চাষবাস করতে আসাটা খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু না। যা এখানকার উপকথা কিংবা রামায়ণের প্রচলিত গল্পের সঙ্গে মিলে যায়। সেই গল্প অনুসারে সীতা মা জনকের পালিত সন্তান। যাকে মাঠে চাষ করতে এসে লাঙলের ফলার নীচে খুঁজে পেয়েছিলেন রাজা জনক। তাই লাঙলের ফলার অর্থের সঙ্গে মিলিয়েই কন্যার নাম রেখেছিলেন সীতা।
এদিকে আরেক অংশের দাবি, জনকপুরীতেই কেটেছে সীতার জন্মের পরের মুহূর্তগুলো। সেই হিসেবে সীতাকে জনকপুর তথা নেপালের মেয়ে বলার দাবিকে সমর্থন করাই যায়। এক্ষেত্রে যদি অদ্ভুত রামায়ণ বা সাঙ্ঘাদাসার জৈন রামায়ণের প্রসঙ্গ ওঠে তাহলে সেখানে বলা আছে সীতা হলেন বাসুদেবাহিন্দি এবং রাবণের কন্যা জন্মের পরে সীতার কারণে রাজ্য ধ্বংসের ভবিষ্যদ্বাণী শুনে
তাকে অনুচরদের দিয়ে দূরে ফেলে এসেছিলেন রাবণ। সেখান থেকেই তাঁকে খুঁজে পান জনক। এবার এই তত্ত্ব মানলে তো এই বিতর্কে ভারত নেপালের সঙ্গে শ্রীলঙ্কাও এসে হাজির হবে। তবে
কূটনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, বাস্তবে সেই রামায়ণ রচনার যুগে এই সমস্ত এলাকাই একই ভূখণ্ডের মধ্যে বিভিন্ন রাজায় বিভক্ত এলাকার মধ্যে ছিল। আলাদা করে ভারত-নেপালের অস্তিত্ব তখনও ছিল না। তাই সীতা-মা ভারতীয় নাকি নেপালি এটা প্রমাণ করাটা নেপালের পক্ষেও এত সহজ নয়। এক্ষেত্রে বিশেষ উল্লেখ্য, এখানে কোনও বক্তব্যই প্রথম কলকাতার নিজস্ব নয়৷ বিভিন্ন ইতিহাসবিদদের মন্তব্য ও সংবাদমাধ্যমের তথ্যকে এখানে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কূটনীতিবিদদের দাবি, কাঠমান্ডু সরকারের একটা ঝুঁকি থাকছেই বারবার বিভিন্ন ইস্যুতে এভাবে ভারতের বিরুদ্ধাচারণ করলে হয়ত তা ভবিষ্যতে দুদেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে৷
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম