।। সুচিত্রা রায় চৌধুরী ।।
Bangladesh Myanmar: মোকার পর মায়ানমার থেকে আরও রোহিঙ্গা ঢুকতে পারে বাংলাদেশে? বাংলাদেশ কঠোর হচ্ছে একবার হাত তুলে নিলে সর্বনাশ হবে। মোকায় ঠিক কত রোহিঙ্গা প্রাণ হারাল সত্যিটা ফাঁস হয়ে গেল। জান্তা সরকারের অতিচালাকিই ডাকছে কীভাবে বিপদ বাড়াচ্ছে? আরেকটা জলজ্যান্ত মিথ্যে মায়ানমারের৷ বাংলাদেশকে টেকেন ফর গ্রানটেড নিচ্ছে জান্তা সরকার? মোকার জেরে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফেরার অনিশ্চয়তা এবারো জাঁকিয়ে বসল। বাংলাদেশ চরম বিরক্ত হাতেনাতে মিলল তার প্রমাণ। কিন্তু মোকার রাখাইনে কত মানুষ প্রাণ হারাল সেই তথ্য কেন চাপা হচ্ছে?
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সাফ বক্তব্য বাংলাদেশ এতো টাকা খরচ করার মতো ধনী দেশ নয়। তবুও আমরা করছি। জানেন ঠিক কত সংখ্যক রোহিঙ্গাদের মুখে ভাত জোগাচ্ছে বাংলাদেশ? সংখ্যাটা চমকে দেবে রীতিমত। বাংলাদেশ যদি এখনি হাত তুলে নেয় তাহলে কতটা বিপদ বাড়বে? রিপোর্ট বলছে মোকা ঘূর্ণিঝড়ে মায়ানমারের বহু অঞ্চল লন্ডভন্ড। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের একেবারে পাশে থাকা আরাকান। বিশেষভাবে তার প্রধান শহর আকিয়াব (যা সেখানে সিতওয়ে নামে পরিচিত এখন) প্রায় দেড় লাখ মানুষের আকিয়াবে অক্ষত বাড়িঘর খুঁজে পাওয়াই মুশকিল হয়ে গেছে।
আর মৃতের সংখ্যা? খুব বেশি মাথা ঘামাতে না চাইলেও যেনে রাখুন। মায়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি আরাকানের রোহিঙ্গারা তাদের কমিউনিটির প্রায় ৪০০ জনের মৃত্যুর কথা ইতিমধ্যে জানিয়েছে। কিন্তু জান্তা সরকারের দাবি মাত্র ১৪৫ জনেরই মৃত্যু হয়েছে। আর বাকীদের মুখ বন্ধ করতে নেওয়া হবে অ্যাকশন। ২০২২ সালের একটি রিপোর্ট বলছে, এখনও পর্যন্ত প্রায় ১২ লক্ষ রোহিঙ্গাদের দেখভাল করছে বাংলাদেশ সরকার। যেমনটা ১৯৭১র যুদ্ধের সময় ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গ করেছিল পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা শরনার্থীদের। বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু জন্মগ্রহণ করছে। রোহিঙ্গাদের জন্য ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার ভাষাণচরে রিফিউজি ক্যাম্পে বাংলাদেশ বিনিয়োগ করেছে এমনটাই দাবি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।
কিন্তু মায়ানমারের জান্তা প্রত্যাবাসনের আশ্বাস দিয়েও হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে বাস্তবে। জান্তা সরকারকে এবার তীব্র ভর্তর্সনা করতে বাধ্য হল আওয়ামি সরকার। পরিস্কার বলে দেওয়া হল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে মায়ানমারের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৯৭২ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছিল। ২০১৬ সালে রাখাইন থেকে প্রাণ বাঁচাতে অন্তত ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছিল বাংলাদেশে। এর আগে থেকে বাংলাদেশ প্রায় আড়াই লাখ রোহিঙ্গার উপস্থিতি তো ছিলই। তবে এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন মোকার পর আবারও রোহিঙ্গা সংখ্যা বাড়বে না তো?
সে দেশের সরকার পরিস্কারই করছে না সেখানকার দুর্দশার ছবিটা। ঘূর্ণিঝড় চলে গেলেও বন্যায় ভাসছে বহু এলাকা। ফ্যাক্ট বলছে মায়ানমারের মোখা–উপদ্রুত এলাকায় প্রায় ৫০ লাখ মানুষ এ মুহূর্তে সাহায্যের আশায় বসে আছেন। মোদ্দা কথা তারা তাকিয়ে আছেন বাংলাদেশের সাহায্যের দিকে। ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশের ফরেন পলিসি হচ্ছে ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো জন্য শত্রুতা নয়’। কিন্তু তাই বলে কি বাংলাদেশের ভালোমানুষীর সুযোগ আর কতদিন তুলবে মায়ানমার? প্রশ্নটা অনেকেই তুলছেন৷
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম