।। প্রথম কলকাতা ।।
মালদ্বীপে সোনার মোহর? চীনা অ্যাঙ্গেলে ঘুরছেন মুইজ্জু। বেইজিং এর এফেক্ট, ইন্ডিয়ান আর্মি এ কোন সংকটে পড়ে গেল? ভোট জিতে নতুন প্রেসিডেন্ট চিনপন্থী মুইজ্জু। শি’এর মনোবাঞ্ছা পূরণ হলেই সাড়ে সর্বনাশ। মালদ্বীপে চীনের হাওয়া বইছে? ভারতের অ্যাকশন ফেস করতে পারবে তো মালদ্বীপ? এবার মুইজ্জুর দৌড় দেখবেন মোদী। চীনের পালে হাওয়া দিচ্ছেন মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। কত বড় রিস্ক নিচ্ছেন আন্দাজ আছে তো? মসনদে বসেই ভারতকে নিশানা। মালদ্বীপের মাটি থেকে বিদেশি সেনাদের সরানোর প্ল্যান। আর এতেই বিপত্তি, কতটা সমস্যায় পড়লো ইন্ডিয়ান আর্মি?
নয়াদিল্লির উদ্দেশেই যে একথা বলছেন মুইজ্জু এটা কিন্তু স্পষ্ট। কারণ মালদ্বীপে বিদেশী সেনা বলতে আছে শুধু ইন্ডিয়ান আর্মি। যে সেনা গেছিল মালদ্বীপেরই দুর্দিনে অসময়ে। সে দেশে গৃহযুদ্ধ ঠেকাতে প্রায় চার দশক আগে ভারতীয় সেনা গিয়েছিল। তারপর থেকে দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে ভারতীয় সেনা মালদ্বীপের সেনা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি ভারত মহাসাগরের ওই অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছে। সেক্ষেত্রে মুইজ্জুর এই ডিসিশন ভারত-মালদ্বীপের দীর্ঘ সম্পর্কে কালো ছায়া ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু, হঠাৎ মুইজ্জুর এই সিদ্ধান্ত কেন? সোজা হিসেব। চীনা এফেক্ট কাজ করছে মালদ্বীপে। বেইজিং কী চীনপন্থী মুইজ্জু কে অপারেট করছে? ভারত মহাসাগরের কেন্দ্রে থাকা মালদ্বীপে চীনের প্রভাব আটকানোটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ মোদীর সামনে।বহুবছর ধরেই ভারত-চীন সমানতালে কূটনীতির জাল বিছাচ্ছিল মালেতে।
শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ–পশ্চিমে এবং ভারত মহাসাগরের একেবারে কেন্দ্রে থাকা মালদ্বীপ ভূরাজনৈতিক দিকে থেকে গুরুত্বপূর্ণ। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মাঝে জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে মালদ্বীপের অবস্থান কৌশলগত ভাবে খুবই ইম্পরট্যান্ট। এখানে ভারতের প্রভাব বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর নয়াদিল্লি। নয়াদিল্লির দিক থেকে ভারত মহাসাগরের বিরাট গুরুত্ব। সেক্ষেত্রে মালদ্বীপের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার আশা ছিল ভারতের। জেতার পর চিনপন্থী মুইজ্জুকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মালদ্বীপের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত রাখতে এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সার্বিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে ভারত এখনও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, লিখেছিলেন এক্স হ্যান্ডেলে গোটা বিশ্ব এক পরিবার। ভারত সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে জানে। কিন্তু, মুইজ্জুর মালদ্বীপ থেকে ইন্ডিয়ান আর্মি সরানোর ডিসিশনে ভারত কি রিঅ্যাকশন দেবে, আর কি অ্যাকশন নেবে সেটাই এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন।
দুদিন আগেও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ছিলেন সোলিহ, যে কিনা ভারতপন্থী বলে পরিচিত। তাই তাঁর জমানায় ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গাঢ় হয়েছিল মালদ্বীপের। কিন্তু ২০১৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ছিলেন আবদুল্লা ইয়ামিন। যার আমলে মালদ্বীপ ক্রমশ চীন ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। ইয়ামিন সরকারের সময় মালদ্বীপ চীনের কাছ থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল। দিল্লির সঙ্গে ক্রমশ সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করেছিল। সেই সুযোগে চীন চায় এই দ্বীপপুঞ্জে নিজেদের প্রভাব খাটাতে-আধিপত্য বাড়াতে। তাই, কূটনৈতিক মহল মনে করছে মুইজ্জুর বিদেশী সেনা সরানোর ঘোষণার পেছনে চিনের হাত রয়েছে। চীনপন্থী একটা ঝড় এবার উঠেছে মালদ্বীপে দেশটির ঘাড়ে এখন চীনের বিপুল ঋণের বোঝা। মুইজ্জু চীনের কথায় উঠছেন বসছেন? পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগেই চিনপন্থী প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে জেলে ঢোকান ভারতপন্থী প্রেসিডেন্ট সলিহ। কিন্তু দেশের নিয়ন্ত্রণ মুইজ্জুর হাতে যাওয়ার পরেই চিমপন্থী ইয়ামিনকে জেল থেকে ছাড়া হয়েছে। তারপর ভারতের বিরুদ্ধে বড় ডিসিশন। সবমিলিয়ে চীনের দিকে ভিড়ছে মালদ্বীপ। এখন দেখার ভারত কিভাবে খেলা ঘোরায়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম