।। প্রথম কলকাতা ।।
India Chaina: ভারতকে ফাঁদে ফেলার চীনের কৌশল বানচাল। বন্ধ হয়ে যেতে পারে চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রজেক্ট? SCO তে জিনপিং যা বললেন বাস্তবে তার কোনও মিল নেই। চিনকে প্রকাশ্যে সায়েস্তা করে দিল নয়াদিল্লি। বেজিং ভেবেছিল ভারত তাদের এই গেম ধরতে পারবে না। যেটা ঘটল সেটা পাকিস্তান-রাশিয়া- উজবেকিস্তানের সামনেই ঘটল। পাকিস্তান বুঝে গেল একেই তো লস হচ্ছিল এবার লোকসান আরও বাড়বে। তাহলে কি বন্ধ হয়ে যেতে পারে চিনের থুরি, জিনপিংয়ের স্বপ্নের প্রজেক্ট ‘BRI’। রাশিয়ার কাছে সাধু সাজার জন্য এসসিও সামিটে চীনের প্রেসিডেন্ট যে বুলি আওড়ালেন বিশেষজ্ঞরা বলছেন এর সঙ্গে চীনের বাস্তব ইমেজের বিন্দুমাত্র মিল নেই। দুনিয়ার কাছে যে ভাবমূর্তি তৈরি করে রেখেছে বেজিং এটা বোধহয় তারই ড্যামেজ কন্ট্রোল।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে তীব্র আপত্তি জানাল ভারতবর্ষ। তাতে কী প্রভাব পড়বে সেই তথ্যে একটু পরে আসব। তবে আগে জানুন BRI নিয়ে কীভাবে দিল্লিকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন জিনপিং। আপনারা জানেন এসসিও বৈঠকে প্রথমবারের জন্য সভাপতিত্ব করেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
তাঁর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার ভার্চুয়াল শীর্ষ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান-সহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতারা। সম্মেলন শেষে যৌথ ঘোষণাপত্রে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের প্রতি সব সদস্যের সম্মতি রয়েছে বলে একটি অনুচ্ছেদ রাখা হয়। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড নিয়ে ভারত কবে সম্মতি জানিয়েছিল। এর মানে এটা যদি কোনওভাবে দিল্লির চোখ এড়িয়ে যেত তাহলে চীন প্রমাণ করে দিত যে পিওকের গিলগিট বালটিস্তানের ভিতর দিয়ে যাওয়া বিআরআই নিয়ে ভারতের কোনও আপত্তি নেই। ভালো করে বুঝুন কতো বড় কূটনৈতিক চাল ছিল বেজিংয়ের৷ কিন্তু ঠান্ডা মাথায় তা বানচাল করে দিল ভারত। বেজিংয়ের কৌশল বুঝতে পেরে তীব্র আপত্তি জানায় নয়াদিল্লি। BRI নিয়ে বিবৃতিতে রাশিয়া পাকিস্তানের স্বাক্ষর থাকলেও সই করেনি ভারত।
কেন করেনি এবার বুঝিয়ে বলছি। দীর্ঘ দিন ধরেই নয়াদিল্লির আপত্তি রয়েছে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ প্রকল্পের একটি নির্দিষ্ট অংশ নিয়ে। চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (সিপিইসি) নামের এই রাস্তা চিন অধিকৃত উইঘুর এলাকা শিনজিয়াংয়ের কাশগড়কে যুক্ত করেছে। পাকিস্তানের গোয়াদর সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে ওই রাস্তার একটি অংশ গিয়েছে পাকৎঅধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট-বালটিস্তান এলাকার ভিতর দিয়ে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে পাকিস্তানের অংশ বলে স্বীকার করে না ভারত। তাই নয়াদিল্লির দাবি, এই রাস্তা তৈরি করে ভারতের সার্বভৌমত্বে ভাগ বসিয়েছে চীন। স্ট্র্যাটোজিক্যালি চীনকে বড় সবক শেখালো ভারত এমনটাই বলছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। শি জিনপিং এসসিও বৈঠকে সদস্য দেশগুলোকে বলেন পারস্পরিক বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে বেজিংয়ের প্রধানের মুখে এমন কথা শুনে রীতিমত হতবাক ওয়াকিবহাল মহল। এর মানে মুখে এক আর কথা, কাজে আরএক। সাম্প্রতিক অতীতে ভারতের বিরুদ্ধে চিনা আগ্রাসন অবশ্য অন্য কথা বলছে। বারবার বৈঠক করেও নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি এখনও ফেরানো যায়নি। যদিও ভারত বারবার জানিয়ে দিয়েছে, ভারতের আঞ্চলিক অখণ্ডতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে না। কেউ এদেশের সূচ্যগ্র ভূমিও দখল করতে পারবে না।
সেই চীনের মুখে নাকি বড় বড় কথা৷ প্রশ্ন হচ্ছে ভারত এই প্রকল্পে স্বাক্ষর না করলে কি বন্ধ হয়ে যাবে BRI প্রজেক্ট? তথ্য বলছে বিভিন্ন দেশের মধ্যে দিয়ে যাওয়া এই প্রজেক্ট এমনিতেই কার্যত ধুঁকছে। নেপাল তো বলেই দিয়েছে তারা ২০১৭ তে স্বাক্ষর হওয়ার এই প্রজেক্টের কাজও শুরু করেনি। তাতে BRI এর আসলে ভবিষ্যত কতটা আলোকিত তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে এবারের এসসিও বৈঠকেই বেজিং বুঝে গেল ভারতের সঙ্গে অতিচালাকি করে পার পাবে না তারা৷
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম