।। প্রথম কলকাতা ।।
North Korea: গোটা বিশ্বজুড়ে যেন যুদ্ধের (War) চাপা উত্তেজনা চলছে। ইউক্রেন (Ukraine) আর রাশিয়ার (Russia) মধ্যে হওয়ার যুদ্ধ প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়নি। উপরন্তু বারংবার উত্তেজনামূলক পরিস্থিতি তৈরি করছে উত্তর কোরিয়া (North Korea)। জাপানের (Japan) প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসুকাজু হামাদা বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি পূর্ব দিকে উচ্চ কোণে নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। দেশটি মাঝে মধ্যে এই মিসাইল হামলা চালায় পার্শ্ববর্তী দেশ গুলিতে। যেগুলিকে টেস্ট কিংবা মহড়া বলে চালিয়ে দেয়। বৃহস্পতিবারও ঠিক তেমন তেমনই ঘটনা ঘটেছে, যার জেরে সতর্কতা জারি করেছে জাপান।
উত্তর কোরিয়া বৃহস্পতিবার একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে যা আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে জাপান এবং কোরীয় উপদ্বীপের মধ্যে পড়ে। এর পর দ্বীপে বসবাসকারী লোকজনকে সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দেয় জাপান। এখন আদেশটি প্রত্যাহার করা হয়েছে কারণ কর্মকর্তারা বলছেন যে জরুরি সতর্কীকরণ ব্যবস্থা একটি ভুল ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল যে ক্ষেপণাস্ত্রটি দ্বীপের কাছে পড়বে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, তাঁর সরকার উৎক্ষেপণের বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একটি বৈঠক করবে।
জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসুকাজু হামাদা বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি পূর্ব দিকে উচ্চ কোণে নিক্ষেপ করা হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রটি জাপানের ভূখণ্ডে পড়েনি। জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরো বিস্তারিত জানার জন্য উৎক্ষেপণটি বিশ্লেষণ করছে। একই সঙ্গে জাপানের উপকূলরক্ষীরা জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি উত্তর কোরিয়ার পূর্ব দিকে সমুদ্রে পড়েছে। হামাদা বলেন, ক্ষেপণাস্ত্রটি জাপানের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের উপর দিয়ে উড়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা যায়নি। দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ বলেছেন যে ক্ষেপণাস্ত্রটি উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের কাছে থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছিল এবং জাপান ও কোরীয় উপদ্বীপের মধ্যবর্তী সমুদ্রের দিকে উড়ে গেছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) অনুসারে, ক্ষেপণাস্ত্রটি মাঝারি বা দূরপাল্লার, তবে এটি কতদূর উড়েছিল তা স্পষ্ট নয়। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন কয়েক দিন আগে তাঁর দেশের সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। আরো ব্যবহারিক এবং আক্রমণাত্মক পদ্ধতির উপর জোর দিয়েছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ বলেছেন যে, ক্ষেপণাস্ত্রটি পিয়ংইয়ংয়ের কাছে থেকে স্থানীয় সময় অনুযায়ী সকাল ৭টা ২৩মিনিটে নিক্ষেপ করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর মতে, তারা উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করছে। সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সাম্প্রতিক সিরিজের যৌথ সামরিক মহড়া বেশ সমালোচনা করেছে। কিমের সরকার বিষয়টি একেবারেই ভালো চোখে দেখছে না।।
যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই আবার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। যা যুদ্ধের উস্কানি বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীকে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া উস্কানি হিসেবে জাপান সাগরের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এর পর নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে জাপান সরকার। উত্তর কোরিয়ার দাবি অনুযায়ী, এসব অস্ত্র তেজস্ক্রিয় সুনামি ঘটাতে সক্ষম। জাপানও উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। একই সময়ে, জাপান সরকার হোক্কাইডো দ্বীপের বাসিন্দাদের অবিলম্বে সরে যেতে এবং ভবন বা ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে বলে। যদিও হোক্কাইডোর স্থানীয় কর্মকর্তারা পরে বলেছিলেন যে দ্বীপটিতে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করার কোন সম্ভাবনা নেই। চলতি বছরের শুরু থেকেই উত্তর কোরিয়া ধারাবাহিকভাবে অস্ত্র পরীক্ষা করে আসছে। সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া একটি পারমাণবিক সক্ষম আন্ডারওয়াটার ড্রোন এবং দুটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন সোমবার কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। যেখানে আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদী ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্বাসঘাতকদের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের যুদ্ধ চালানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম