।। প্রথম কলকাতা ।।
রাত পোহালেই বিশ্ব ফুটবলের মহারণ। ১৮ ক্যারেটের সোনালী ট্রফি জয়ের লক্ষ্যে নামবে বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশগুলি। প্রিয় তারকাদের পায়ের জাদু দেখতে শীতের আমেজ গায়ে মেখে টিভির পর্দায় চোখ রাখবে আট থেকে আশি সকলেই। সাম্বা ঝড়, মেসি ম্যাজিক কিংবা রোনাল্ডোর সেই চেনা সেলিব্রেশনের অপেক্ষায় বিশ্ব ফুটবল। একে একে কাতারে পা রাখছে দলগুলি। পৌঁছে গিয়েছে মেসির আর্জেন্টিনাও। শেষ বিশ্বকাপে নিজেকে রাঙাতে প্রস্তুত হচ্ছেন বিশ্ব ফুটবলের জাদুকর। মেসিকে ঘিরেই বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখছে আলবিসেলেস্তারা।
মঙ্গলবার বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট দল হিসেবে কাতারে পৌঁছেছে আর্জেন্টিনা। অন্যান্য দলগুলি যখন বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেলকেই বিশ্বকাপের জন্য নিজেদের দুর্গ বানিয়ে ফেলেছে, সেখানে আর্জেন্টিনা ঘাঁটি গেড়েছে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে। যেখানে আর্জেন্টিনা শিবিরের অনুমতি ছাড়া একটা মাছি গলারও উপায় নেই। সেখানে পাঁচতারা হোটেলের চাকচিক্য না থাকলেও, রয়েছে খোলামেলা পরিবেশ। এর আগেও আমরা দেখেছি ব্রাজিল বিশ্বকাপে একটি গ্রামের মধ্যে শিবির গড়েছিল আর্জেন্টিনা। এছাড়াও রাশিয়া বিশ্বকাপে নদীর ধারে ঘাঁটি গড়েছিল মেসিরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবাসনে ঘাঁটি গাড়ার একটি প্রধান কারণ হলো মাংস পোড়ানোর জন্য খোলামেলা জায়গা রয়েছে। যাকে বলা হয় ‘আসাদো’। মাংস পুড়িয়ে উপভোগ করা আলবিসেলেস্তাদের সংস্কৃতির একটি অঙ্গ। ফলে অবসর সময়ে খেলোয়াড়রা যাতে সেই সুযোগ পান তা নিশ্চিত করতেই ছাত্র আবাসনকে বেছে নিয়েছে আর্জেন্টিনা দল। আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থার সূত্রে ডেইলি মেইল-কে বলা হয়েছে, “এটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। কাতারেও যাতে ফুটবলাররা বাড়ির মত স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে সেই জন্যই এই ব্যবস্থা। মাঠে খেলার সঙ্গে বাড়ির মত খাবার পেলে ফুটবলাররা আরও বেশি খোলামনে থাকতে পারবে।”
গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনার সঙ্গে রয়েছে সৌদি আরব, মেক্সিকো ও পোল্যান্ড। আগামী ২২ নভেম্বর সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে অভিযান শুরু করবে আর্জেন্টিনা। নভেম্বর ২৭ ও ১ ডিসেম্বর গ্রুপের বাকি দুই ম্যাচে আর্জেন্টিনা খেলবে যথাক্রমে মেক্সিকো ও পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে। তাঁর আগে নিজেদের প্রস্তুত করতে কোন খামতি রাখছেন না মেসিরা। প্রস্তুতি ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৫ গোল দিয়েছে। সব মিলিয়ে ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে মাঠে নামবে লিওনেল স্কোলানির দল।
২০০৬ ও ২০১০ সালে কোয়ার্টার ফাইনালেই থেমে গিয়েছিল আর্জেন্টিনার দৌড়। দু’বারই জার্মানির কাছে হেরে যায় আর্জেন্টিনা। এরপর ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালেও উঠলেও, সেই জার্মানির কাছেই হারতে হয় মেসিদের। ২০১৮ সালে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালেই ফ্রান্সের কাছে ৩-৪ গোলে হেরে বিদায় নেয় আর্জেন্টিনা। এবার আশার আলো দেখছেন আর্জেন্টাইন সমর্থকরা। দলের প্রাণভোমরা লিওনেল মেসির সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স স্বপ্নের পালে হওয়া দিচ্ছে আর্জেন্টাইনদের। সমর্থকদের পাশাপাশি ফুটবল বিশারদরাও ভাবতে শুরু করেছেন মেসি হয়তো ২০১৪ সালের মতো আর নিরাশ করবেন না।