।। প্রথম কলকাতা ।।
RPF: চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়েই এক যাত্রীর পা পিছলে গেল। সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে ওই যাত্রীকে বাঁচালেন এক আরপিএফ কর্মী। নিজের প্রাণের তোয়াক্কা না করে ছুটে যান। জাপটে ধরেন ওই যাত্রীকে। পা পিছলে তিনি নিজেও পড়ে যেতে পারতেন। এক যাত্রীর মুর্খামির মাশুল দিতেই হতে পারত ওই আরপিএফ কর্মীকে। সেসব মাথাতেও আসেনি। দৌড়ে যান। নাহলে সব শেষ হয়ে যেত। আর একটু হলেই ট্রেনের তলায় চলে যেতে পারত পা। তার আগেই ছুটে গিয়ে বাঁচিয়ে দেন আরপিএফ কর্মী। শান্তিতে ট্রেনে যাতায়াত করতে পারছেন এই মানুষগুলোর জন্যই। আরপিএফের জীবন রক্ষা মিশন কী জানেন? একটি স্টেশনে একজন আরপিএফের কাজটা কী? কর্তব্যরত কর্মীরা কতটা ততপর তা এই ভিডিও দেখেই স্পষ্ট।
বিকেল ৪টে ২০ মিনিটে এর বয়স্ক ব্যক্তি ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করছিলেন মধুপুর স্টেশন থেকে। মধুপুর থেকে গিরিডির দিকে যাচ্ছিল ট্রেনটি। কিন্তু চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়ে টাল সামলাতে পারেননি ওই ব্যক্তি। পা পিছলে যায় তাঁর। ট্রেনের রডটা ধরেও সামলাতে পারেননি তিনি।
নেটদুনিয়ায় ভাইরাল ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও। যেখানে দেখা গিয়েছে, সবেমাত্র স্টেশন ছেড়ে ধীর গতিতে চলতে শুরু করেছে ০৩৫২৫ মধুপুর-গিরিডি নটি। ট্রেনে উঠতে গিয়ে প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনের মধ্যে যে ফাঁক তাতে পড়ে যান। ওই অবস্থায় যাত্রীটি ঘষতে ঘষতে বেশ কিছুটা যায়। এই দৃশ্য চোখে পড়তেই আরপিএফের কনস্টেবল এম কে মণ্ডল ছুটে যান ওই বৃদ্ধের কাছে। সেখানে কর্তব্যরত ছিলেন তিনিই। সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নেন ওই আরপিএফ। ওই যাত্রীকে জড়িয়ে ধরে পিছনে টেনে এনে প্ল্যাটফর্মে বসে পড়েন। কোনও ক্রমে প্রাণ রক্ষা হয় ওই যাত্রীর। নাহলে তাঁকে দেখতে পেতেন না পরিজনেরা।
এই ঘটনার গোটাটাই সিসি ক্যামেরায় বন্দি হয়েছে। আরপিএফ-এর পক্ষ থেকে যাত্রীদের বারবার অনুরোধ করা হলেও এক শ্রেণির যাত্রীরা চলন্ত ট্রেনে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে উঠছেন। তার ফলেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে ওঠা-নামার ব্যাপারে রয়েছে কড়া নিষেধাজ্ঞা। এরপরেও কিছু মানুষ সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চলাচল করেন। তাড়াহুড়ো করেন। নিজের বিপদ ডেকে আনেন সাথে অন্যেরও। যার পরিণামে জীবন শেষ হতে পারে। ঠিক যেমনটা হতে চলেছিল এই ব্যক্তির সঙ্গে । একজন আরপিএফ কর্মী সবসময় সতর্ক থাকেন যাত্রী নিরাপত্তায়। তাঁদের মূলত আর কী কাজ জানেন?
রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স অর্থাত্ আরপিএফ-র মূল কাজ হল রেলের সম্পত্তি ও যাত্রী সাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। ২৪ ঘণ্টা আরপিএফ-এর কর্মীরা যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তা সুরক্ষা এবং শান্তিতে ভ্রমণের বিষয়ে সচেতন থাকেন। এর জন্য যা যা করণীয় সেই কাজগুলি করে চলেছেন। আরপিএফ দেশজুড়ে রেলের যে বিপুল সম্পত্তি আছে তা রক্ষা করে চলেছে। এছাড়াও রেলের সম্পত্তির মধ্যে কোনো অপরাধমূলক কাজ হলে সেটি শনাক্ত করা আরপিএফ-এর আর একটি গুরু দায়িত্ব। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও এই বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং বিভিন্ন রাজ্য ও জাতীয় স্তরের নির্বাচনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনায় আরপিএফ-এর সাহায্য নেওয়া হয়। আরপিএফ কর্মীদের জীবনরক্ষা প্রকল্পটি বহু যাত্রীর প্রাণ বাঁচিয়ে চলেছে দিনের পর দিন। বিপন্ন যাত্রীদের প্রাণ বাঁচানোর লক্ষ্যেই ভাবা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ট্রেনিংও দেওয়া হয় তাঁদের। দূরপাল্লার ট্রেনের মহিলা যাত্রীদের জন্য সুরক্ষার বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে মেরি সহেলী কর্মসূচী চলছে তত্পরতা সঙ্গে।
ফের আরেক আরপিএফের সাহসিকতায় প্রাণে বাঁচালেন আরেক যাত্রী। দিন হো বা রাত নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করতে পারেন তার কারণ এই আরপিএফরাই।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম