।। প্রথম কলকাতা ।।
Organic Fertilizer : সঠিক পদ্ধতিতে কীভাবে জৈব সার তৈরি করা যায় তা কৃষকরা জানতে পারলে খুব সহজেই নিজের বাড়িতে গোবর থেকে জৈব সার তৈরি করে নিতে পারবেন। এই জৈব সার চাষের কাজে ব্যবহার করলে একদিকে যেমন ফসলের ফলন বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে। প্রাকৃতিক জৈব সার ফসলকে পুষ্টিগুণে ভরপুর করে দিতে সক্ষম। তবে রাসায়নিক সারের ফলে বর্তমানে বহু রকমের রোগ দেখা দিচ্ছে সাধারণ মানুষের শরীরে। তাই কৃষকরাও এখন জৈব সার তৈরি করে সেই জৈব সার দিয়ে চাষাবাদের দিকে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
* কী ভাবে তৈরি করবেন জৈব সার ?
বাড়িতে গৃহস্থলির কাজকর্মের পর জমে থাকা খড়কুটো, লতাপাতা, ছাই, পালিত হাঁস মুরগির বিষ্ঠা, গরুর গোবর, ঘরবাড়ি ঝাড় দেওয়ার পর যে আবর্জনা সেইসব এক জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে। আর তারপর ধীরে ধীরে সেগুলিকে পচিয়ে তৈরি হবে উৎকৃষ্ট মানের জৈব সার। যার ব্যবহার স্বাস্থ্যসম্মত চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এর কোন বিকল্প নেই বলেই মনে করেন কৃষকরাও। জৈব সারের ব্যবহার বাড়লে রাসায়নিক সারের উপর নির্ভরশীলতা বেশ খানিকটা হ্রাস পাবে।
* কীভাবে সংরক্ষণ করবেন জৈব সার ?
১. উন্নত মানের জৈব সার তৈরি করার জন্য গোয়াল ঘরের কাছাকাছি কোন জায়গায় দেড় মিটার চওড়া, ৩ মিটার লম্বা এবং এক মিটার গভীর একটি গর্ত তৈরি করতে হবে। সেই গর্তের মধ্যে এনে জমাতে হবে গরুর গোবরসহ ঘর গৃহস্থলির বেঁচে যাওয়া বিভিন্ন আবর্জনা যেমন সবজির খোসা, খড়কুটো প্রভৃতি।
২ . এরপর ওই গর্তের নিচে বালি দিয়ে তার উপরে খড় বিছিয়ে দিতে হবে। এমন ব্যবস্থা করতে হবে যাতে জল শুষে না নিতে পারে মাটি।
৩. প্রয়োজনে গর্তের ভেতরে এবং চারপাশের গোবরের প্রলেপ দিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
৪. এরপর প্রতিদিন সেই গর্তে গোবর এবং অন্যান্য পচনশীল জিনিস এনে ফেলতে হবে। মাঝেমধ্যে পুকুর কিংবা ডোবায় যে পাক মাটি থাকে তা এনেও দেওয়া যেতে পারে । এতে স্তর খানিকটা আঁটোসাঁটো হবে।
৫. এক দেড় মাস এইভাবে গোবর জমা করার পর পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে সেটিকে নেড়েচেড়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে গো-চনা ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ এটিও একটি সার বলেই বিবেচিত হয় কৃষকদের কাছে।
৬. গোবরের সারের সাথে যদি কিছুটা পরিমাণ টিএসপি মিশিয়ে দেওয়া যায় তাহলে জৈব সারের মান অত্যন্ত ভালো হয় । প্রতি টন গোবর সারের জন্য ১৫ থেকে ২০ কেজি টিএসপি সার যথেষ্ট।
৭. ওই গোবর সার যাতে কড়া রোদে একেবারে শুকিয়ে না যেতে পারে অথবা বৃষ্টির জলে ধুয়ে না চলে যেতে পারে তার জন্য গর্তের ওপর ছাউনি তৈরি করুন। ছাউনি তৈরি করার জন্য তাল পাতা, নারকেল পাতা কিংবা খেজুর পাতার ব্যবহার করা যেতে পারে অল্প খরচে।
এইভাবে যদি গোবর সংরক্ষণ করে রাখা হয় তবে দু মাসের মধ্যেই তা চাষের কাজে ব্যবহারের জন্য একেবারে উপযুক্ত জৈবসারে পরিণত হবে । সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করা গেলে তা চাষের কাজে ব্যবহার করেও বিশেষ কোনো লাভ হয় না। তাই এই পদ্ধতিতে গোবর সংরক্ষণ করলে কৃষক বন্ধুরা অবশ্যই লাভ পাবেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম