।। প্রথম কলকাতা ।।
Economic Recession: আমেরিকার অর্থনীতিতে দুর্যোগের পূর্বাভাস। ইউরোপের অনেক বড় বড় দেশও মন্দার আতঙ্কে ভুগছে। কিন্তু কখন বলা যায় মন্দা এসেছে? মন্দা আসলে কি? বিশ্বের সব বড় অর্থনীতি গুলোর যখন এরকম অবস্থা তখন ভারত নিরাপদ তো? ওয়ার্ল্ড অফ স্ট্যাটিস্টিক্স এর রিপোর্ট কি বলছে? ভারতে অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ে ঠিক কি পূর্বাভাস রয়েছে? যুক্তরাষ্ট্রের মন্দাভাবের প্রভাব পড়বে কি ভারতের অর্থনীতিতে? রিপোর্টের শুরুতেই ভারতের জন্য সুখবর। IMF-এর মতে, চলতি বছরেও ভারতের অর্থনীতি হবে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি।
ওয়ার্ল্ড অফ স্ট্যাটিস্টিক্স এর রিপোর্টেও আশার আলো। কি বলছে রিপোর্ট? ভারতে মন্দার কোনো সম্ভাবনাই নেই। হ্যাঁ, বড় দেশগুলোর মধ্যে ভারতই একমাত্র দেশ যেখানে মন্দার “জিরো পার্সেন্ট” সম্ভাবনা রয়েছে। এককথায়, ভারতের অর্থনীতি ক্রমশ গতিশীল হচ্ছে। কিন্তু, তারপরেও খুব বেশি স্বস্তিতে থাকতে পারবে কিভারত? প্রশ্নটা উঠছে কারণ, আমেরিকায় যে ভয়াবহ মন্দা আসন্ন তার জন্য কি এফেক্টেড হবে ভারতের অর্থনীতি? হলে কতটা হবে?
আসলে, ওয়ার্ল্ড অফ স্ট্যাটিসটিক্স এর রিপোর্ট অনুযায়ী, আমেরিকায় মন্দার আশঙ্কা ৬৫ শতাংশ, তালিকায় আমেরিকা রয়েছে সপ্তম স্থানে। বর্তমানে সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না। আমেরিকার জন্য গত দু’মাসে দেশের ৩ টে বড় ব্যাঙ্ক লোকসানের শিকার। ব্যাঙ্কিং সঙ্কটের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে নগদ অর্থেরও সঙ্কটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এককথায়, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ঋণখেলাপি হওয়ার রিস্কে আছে। সরকার ঋণসীমা অতিক্রম করার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে বলেই এটার চান্স বাড়ছে। দেশটায় মন্দার আশঙ্কা তীব্র হচ্ছে।
মন্দা বলতে কি বোঝায়?
এমন একটা সময় কাল যখন অন্তত দুটো ত্রৈমাসিক পর্বে জাতীয় গড় আয় কমে যায়।অনেক অর্থনীতিবিদ, ১২ মাসের মধ্যে বেকারত্বের পরিমাণ ১.৫ শতাংশ বৃদ্ধিকে মন্দার সংজ্ঞা বলে চিহ্নিত করেন। বেকারত্বের হারও এই ক্ষেত্রে ইম্পরট্যান্ট একটা ফ্যাক্টর। তো এই মূহুর্তে
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিষয়টা মোটেই সুবিধার ঠেকছে না। আমেরিকা মন্দার কবলে পড়লে তার ভয়াবহ পরিণতি সারা বিশ্বজুড়ে দেখা দিতে পারে। হ্যাঁ, অর্থনীতিবিদরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এমনটা হলে মার্কিন অর্থনীতি, দেশটার মানুষ এর জীবন জীবিকা, বৈশ্বিক আর্থিক স্থিতিশীলতার অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ঋণখেলাপি হলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ধাক্কা লাগবে। এর জন্য ভোক্তা এবং বিনিয়োগকারীরা প্রভাবিত হতে পারে। এতে জাতীয় প্রতিরক্ষার মতো সরকারি কার্যাবলীও প্রভাবিত হতে পারে। কিন্তু, এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব থেকে ভারত নিজেকে কতটা বাঁচিয়ে রাখতে পারবে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়েক লক্ষ কর্মচারী এই মুহূর্তে তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে কর্মরত। এই ব্যবসার বেশিরভাগটাই আমেরিকা এবং ইউরোপের বাজারের উপর নির্ভরশীল। তার মধ্যে আমেরিকার বাজার থেকে আসে ৪০ থেকে ৭৮ শতাংশ লভ্যাংশ। তাই আমেরিকায় মন্দা শুরু হলে তার একটা কুপ্রভাব যে পড়বেই সেটা নিশ্চয়ই নতুন করে বলে দিতে হবে না। বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে। জ্বালানি থেকে শুরু করে খাদ্যদ্রব্য, সবকিছুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অর্থাৎ, পরিস্থিতি সামাল দিতে মেপে পা ফেলতে হবে। তবে, শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়। ওয়ার্ল্ড অফ স্ট্যাটিসটিক্স এর রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বে মন্দার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি রয়েছে যুক্তরাজ্যে, ৭৫ শতাংশ। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে নিউজিল্যান্ড,৭০ শতাংশ। আগেই বলেছি, ৬৫ শতাংশ আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে এই তালিকায় আমেরিকা রয়েছে সপ্তম স্থানে। এদিকে, ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে জার্মানি, ইতালি, কানাডায় মন্দার সম্ভাবনা ৬০ শতাংশ। ফ্রান্সে ৫০ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৪৫ শতাংশ,
অস্ট্রেলিয়ায় ৪০ শতাংশ, রাশিয়ায় ৩৭.৫ শতাংশ, জাপানে ৩৫ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩০ শতাংশ এবং মেক্সিকোতে এই সম্ভাবনা ২৭.৫ শতাংশ। স্পেন ২৫ শতাংশ, সুইজারল্যান্ড ২০ শতাংশ, ব্রাজিলে ১৫ শতাংশ আশঙ্কা রয়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনেও এই হার চলতি বছরে ১২.৫ শতাংশ, সৌদি আরবে ৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ২ শতাংশ মন্দার আশঙ্কা রয়েছে। অথচ, রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতে মন্দার আশঙ্কা শূণ্য শতাংশ।
আর ভারত এখানেই এগিয়ে। ইঙ্গিত দিয়েইছিল আইএমএফ, বিশ্বের জিডিপি-তে উন্নয়নের ধ্বজা ওড়াবে ভারত। বলতেই হচ্ছে, সত্যিই চিন, আমেরিকাকেও অনায়াসেই টেক্কা দিচ্ছে ভারত।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম