।। প্রথম কলকাতা ।।
পুড়ছে কুয়েত, তীব্র গরমে সিদ্ধ হচ্ছে মানুষ। মারা যাচ্ছে পশু পাখি। ভয়ঙ্কর করুণ অবস্থা। চোখে দেখা যাচ্ছে না। কাজে লাগছে না টাকা। তাহলে কি এভাবেই শেষ হয়ে যাবে পৃথিবী? চরম বিপদে গোটা মধ্যপ্রাচ্য। মাথায় হাত আরব, ইরাক, ইরানের। ধনী হয়েও কোনো লাভ নেই। কীভাবে বাঁচবেন? কী বলছে বিশেষজ্ঞরা?
বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ কুয়েত। ধনসম্পত্তির অভাব নেই। দেশটার বুদ্ধির কাছে হার মানে তাবড় তাবড় শক্তিধর দেশ। কিন্তু সেই দেশটাই পেরে উঠছে না প্রকৃতির কাছে। বড্ড অসহায়। তীব্র গরমে শুধুই হাহাকার। পারস্য উপসাগরের তীরবর্তী দেশগুলো বিগত কয়েক দশকে তেল আর গ্যাস বিক্রি করে বিশাল বিশাল অট্টালিকা তৈরি করেছে। রয়েছে অত্যাধুনিক সব স্থাপনা। কিন্তু এত ব্যয়ের পরেও মানুষ বসবাস করতে পারবে তো? এটাই এখন বড় প্রশ্ন।
একদিকে প্রচণ্ড দাবদাহ, অপরদিকে জলের অভাব। রাস্তায় ধুঁকছে বিড়াল কুকুর। শুকিয়ে গেছে মরুদ্যান। অত্যন্ত গরমে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছে মানুষ। প্রাণ যাচ্ছে উপসাগরের সিহর্সদেরও। এককথায় শুকিয়ে যাচ্ছে কুয়েত। বাঁচতে গোটা রাস্তায় ছাদ দিয়ে আবৃত করেছে দেশটা। ভিতরে বসিয়েছে পাম গাছ, রয়েছে ইউরোপীয় শৈলির বুটিক। তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছে ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে গ্রীষ্মকালে। কুয়েত এখন হয়ে উঠেছে পৃথিবীর অন্যতম উষ্ণ দেশ। ২০৭১ সাল থেকে ২১০০ সাল নাগাদ কুয়েতের গড় উষ্ণতা বাড়বে প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২০২১ সালে দেশটাতে টানা ১৯ দিন তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৫০ ডিগ্রির বেশি এবার সেই রেকর্ড ভাঙবে চলতি বছরে। শুধু তাপমাত্রা নয়, তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ধুলি ঝড়। এভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। বেশি তাপমাত্রার কারণে ক্লান্তি, হিট স্ট্রোক, কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এই বিপদের মুখে কিন্তু গোটা বিশ্ব। যার প্রথম আঁচ পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। মহা চিন্তায় বিজ্ঞানীরা। যদিও মধ্যপ্রাচ্যের বহু দেশ এই বিষয়ে সচেতন। সৌদি আরব ২০৬০ সালের মধ্যে শূন্য কার্বন নিঃসরণ অর্জনের প্রতিশ্রুতি নিয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যে একই প্রতিশ্রুতি নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ যেভাবে জলবায়ু নিয়ে তৎপরতা দেখাচ্ছে, সেখানে অনেকটাই পিছিয়ে কুয়েত। একইভাবে খারাপ অবস্থায় ইরান। নজিরবিহীন তাপমাত্রার কারণে ঘোষণা করেছে সরকারি ছুটি। দেশটাতে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে রয়েছে অনেকেই।
বিজ্ঞানীরা বারংবার সতর্ক করছে। গ্রীন হাউস গ্যাসের পরিমাণ কমাতেই হবে। না হলে গড় তাপমাত্রা বাড়বে প্রায় ২° পর্যন্ত। তার উপর দাপট চালাচ্ছে এল নিনো।।কমে যেতে পারে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। গবেষণা বলছে, পৃথিবীতে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে মৃত্যুর সংখ্যা ৫.১% থেকে বেড়ে পৌঁছাতে পারে ১১.৭% এ। দেখা দেবে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব। ধ্বংস হয়ে যাবে বস্তুতন্ত্র। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে জীব বৈচিত্র। মারাত্মক প্রভাব পড়বে কৃষি উৎপাদনে। বাড়বে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস। এখনই সাবধান না হলে ভয়ঙ্কর বিপদে পড়বে গোটা বিশ্ব।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম