।। প্রথম কলকাতা ।।
Bangladesh: বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এক ছোট্ট শান্ত গ্রাম বুড়িচং জামতলা গ্রাম। কোথাও মাটির আঁকাবাঁকা রাস্তা আবার কোথায় ঢালাই করা আঁকাবাঁকা রাস্তা আর তার দু’পাশে অজস্র সবুজ গাছ। এই গ্রাম থেকে একটু এগোলেই বাংলাদেশ ভারতের সীমান্ত। যে সীমান্তে একটি কাটাতারের বেড়া দুটো দেশকে আলাদা করেছে ঠিকই কিন্তু দু দেশের বাতাস দুদেশের মাটি দুদেশের জল এখানে একে অপরের সাথে মিশে গেছে। অনেকেই এই জামতলা গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা জানেই না।
অথচ যুগ যুগ ধরে সবুজের সমুদ্র গায়ে মেখে শান্ত নিরিবিলি হয়ে জেগে রয়েছে এ গ্রাম। সৃষ্টিকর্তা এখানে যেন খুব যত্নে গুছিয়ে সবুজ বুনেছে। দেখলে মনে হবে যেন হাতে আঁকা ছবি। বড় বড় গাছে তারই মাঝে জমির পর জমিতে সবুজ, সোনালি ধান আর তার মাঝ বরাবর সাপের মতো রাস্তা। আম,জাম, নারকেল, খেজুর, অশ্বত্থ, বট গাছে ছেয়ে আছে এ গ্রাম। এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ করে। ভোরে মোড়গের ডাকে সকাল হয় তাদের, আর তারপর থেকেই শুরু জমিতে হাল দেওয়া। গ্রামের পুকুরে মাছ ধরাও তাদের একটা পেশা।
দুপুর হলেই দেখা যায় গ্রামের সমস্ত কৃষিকাজ করা মানুষ গুলো লাইন দিয়ে দুপুরের খাবার খেতে আসছে। আবার বিকেল হলেই দেখা যায় পুকুর থেকে মাছ ধরে ছোটো বাচ্চা থেকে গ্রামের বুড়োরা মহানন্দে ঘরে ফিরছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় অনেক কষ্ট করে লড়াই করে জীবন অতিবাহিত করতে হয় জামতলার মানুষদের। কিন্তু তবুও যেন মুখে নেই ক্লান্তির ছাপ। নিজেদের গ্রামে অচেনা মানুষ দেখলেই এক মুখ হাসি চলে আসে তাদের মুখ জুড়ে। সীমান্ত লাগোয়া এই জামতলায় এতো বড় বড় গাছের বাগান দেখা যায় যে, এই বাগানের ভেতরে প্রবেশ করলেই মনে হবে যেন ছোটো খাটো কোনো অভয়ারণ্যে পা রেখেছেন আপনি। উঁচু নীচু মাটির টিলা মনে করিয়ে দেবে পাহাড়ি কোনো জায়গার কথা।
বর্ষাকালে আবার বেশির ভাগ নীচু জায়গা গুলো জলে ভরে যায়। আর তখন মাছ ধরার হিড়িক পরে যায় সমগ্র গ্রাম জুড়ে। কাঁচা রাস্তা, মাটি ও টিনের তৈরী বাড়িঘর আর চারিদিকে অগণিত সবুজ গাছের সম্ভার এ গ্রাম এখনও পল্লী সমাজের রুপ ধারণ করে রেখেছে। সমগ্র দেশ গরমে হাসফাস করলেও এখানকার অজস্র সবুজ গাছই যেন শান্তি দিয়েছে এখানকার মানুষকে। গাছেদের ছায়া যেন হার মানিয়েছে আধুনিক সভ্যতার এয়ার কন্ডিশনকেও। হ্যাঁ, জামতলা এতটাই শান্তির জায়গা। যে গ্রাম বাংলাদেশের এক ছোট্ট কোণে নিজের মতো করে এক অদ্ভুত শান্তির জায়গা হয়ে থেকে গেছে আজও।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম