।। প্রথম কলকাতা ।।
কানাডা খড়কুটোর মতো উড়ে গেল, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে পড়লো চন্দ্রযানের এফেক্ট। যুক্তরাষ্ট্রকে শান্তনা পুরস্কার জয়শঙ্করের? ১৮০° অ্যাঙ্গেলে ঘুরে গিয়ে কীসের ইঙ্গিত দিল নয়াদিল্লি? জয়শঙ্করের চাল, হারে হারে টের পেল আমেরিকা। নিউইয়র্কে বসে মস্কোর নাম নেওয়ার পর লন্ডনে বসে আমেরিকার নাম। শুধু দেখলে হবে? ভারতের কূটনীতি শিখতে হবে। নিজ্জর-কানাডা কোনোটাই ধোপে টিকলো না। ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে চন্দ্রযানের সঙ্গে তুলনা বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের। নয়াদিল্লির এক চালে জাস্ট ছিটকে গেল তো যুক্তরাষ্ট্র?ভারতের চরম কূটনৈতিক চাল, ধরতে পারলো কি আমেরিকাও?
দুদিন আগে নিউইয়র্কের মাটিতে বসে পশ্চিমা বিশ্বের দু চোক্ষের বিষ মস্কোর নাম নিয়ে দম দেখিয়ে দিয়েছিলেন জয়শঙ্কর। আর, এবার সব জেনে বুঝেও ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক নিয়ে অন্য সুরে কথা বললেন জয়শঙ্কর লন্ডনের ইন্ডিয়া হাউসে বসে। বললেন ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক সেরা পর্যায়ে। দুদেশের সম্পর্ককে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, ভারত-মার্কিন সম্পর্ক প্রতিটি পর্যায়ে তাঁর এক্সপেক্টেশন ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই কারণেই তাঁরা দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ককে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টাও করেন না। ভারতীয় দূতাবাস আয়োজিত ‘সেলিব্রেটিং কালার অফ ফ্রেন্ডশিপ’ প্রোগ্রামে গুছিয়ে খেললেন জয়শঙ্কর। অথচ, দুদিন আগেই নিউইয়র্কের মাটিতে বসে পশ্চিমা বিশ্বের দুচোক্ষের বিষ রাশিয়ার কথা তুলে এনেছিলেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। স্ট্রেটকাট বলে দিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে ভারত রাশিয়ার সম্পর্ক সবথেকে স্থিতিশীল। বিশ্বের দুই শক্তিধর দেশ ভারত-রাশিয়া নিজেদের মধ্যে সাত দশক ধরে সম্পর্ক বজায় রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বুকে লাগলেও সবটা মুখ বুজে সহ্য করতে হয়েছে বৈকি।
কানাডার হয়ে কম বাড়াবাড়ি তো করছে না আমেরিকা।
তাহলে, কি এই কারণেই টিট ফর ট্যাট নীতিতে হেঁটেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী? ঠেস দিতেই দিব্যি আমেরিকার মাটিতে বসে মস্কোর নাম নিয়েছিলেন অথচ আমেরিকার নামটুকুও মুখে আনেননি সেদিন। জয়শঙ্করের ওই ডোজ হজম করতে পারলো না আমেরিকা। তার মধ্যেই, ১৮০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে ঘুরে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষততে মলম লাগালো দিল্লি। জয়শঙ্কর কিছুটা সাফাইয়ের সুরে বুঝিয়ে দিলেন কেন ভারত আমেরিকার সম্পর্ক কিরকম তা নিয়ে কিছু বলার দরকার পড়ে না, কেন দুদেশের সম্পর্ককে সংজ্ঞায়িত করার প্রয়োজন হয় না। জয়শঙ্কর বুঝিয়ে দিলেন, ভারত যেমন বন্ধুত্ব করতে জানে, আবার প্রয়োজনে টিট ফর ট্যাট নীতিতেও হাঁটতে জানে। কিন্তু, যে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে এতো কথা, সেই দুদেশের সম্পর্ককে অন্য উচ্চতায় তোলার ক্রেডিট কার? জয়শঙ্করের কথায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর মার্কিন সফর ছিল সকলের থেকে একেবারে আলাদা। কেন? একটা উদাহরণ দিলে বুঝতে সুবিধা হবে
বিদেশ মন্ত্রী বলেছেন, গত কয়েক বছরে আমেরিকায় ভারতীয়দের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করতে সাহায্য করেছে। পন্ডিত নেহেরু যখন ১৯৪৯ সালে আমেরিকায় গেছিলেন তখন সেখানে ৩ হাজার ইন্দো- আমেরিকান মানুষ ছিলেন! ১৯৬৬ সালে যখন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যান, তখন সেখানে ৩০০০০ ইন্দো-আমেরিকান ছিলেন। আর যখন মোদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন তখন সেই সংখ্যা ৫০ লাখ।
হিসেব সবটা বলে দিচ্ছে। দুদিন আগেই বড় প্রেডিকশন করেছিলেন জয়শঙ্কর। বলেছিলেন ভবিষ্যতে রাশিয়া আরও বেশি করে এশিয়ার কাছে আসবে। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, পশ্চিমা বিশ্ব যতই রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞার জালে জড়াক ভারত-রাশিয়ার সম্পর্ক সুপারহিট। আর, এবার তো ২০ টা দেশের কথা টেনে আনলেন একসাথে। বললেনয়ভারতের কথা আজ সকলের মুখে মুখে। আজকের এই ভারত চন্দ্রযান মিশনে সফল। এই ভারত G-20 আয়োজন করতে সক্ষম। আজকের ভারত তাদের ভুল প্রমাণ করেছে, যারা বলেছিলেন যে আমরা ২০ টি ভিন্ন মতাদর্শের দেশকে এক মঞ্চে আনতে পারব না
মোদ্দা কথা, ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিলেন ভারত কানাডা নয়। যে দেশ গোটা বিশ্বকে এক পৃথিবী, এক পরিবার হিসেবে গড়তে চায়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম