।। প্রথম কলকাতা ।।
ইজরায়েল যুদ্ধ বন্ধ করে দিল গাজায় থেমে গেল গোলাগুলি। হামাসের সঙ্গে ডিল ফাইনাল এমন কী চুক্তি হল? হামাসের ভাগ্য খুলে যেতে পারে এই কয়েকটা ঘন্টায়। নেতানইয়াহুকে দিয়ে এমন কী প্রমিস করালো হামাস! এটা খবর কি শান্তি আনবে মধ্যপ্রাচ্যে? না আসল যুদ্ধ এখনও শুরুই করেনি ইজরায়েল। গাজায় কয়েক ঘন্টায় আর শোনা যাবে না গোলাবারুদের আওয়াজ। ট্যাঙ্ক, সাইরেন, আতঙ্কের চিতকার হঠাৎ করে এমন কি সমঝোতা হল ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে? দুপক্ষেই যারা যুদ্ধবন্দি হয়েছিল তাদের কি ছেড়ে দেওয়া হল? যুদ্ধে ৪৭ দিন পরে কিছুক্ষণের জন্য হলেও রেহাই। কারণ আগামী চারদিনের যুদ্ধবিরতির ঘোষণায় অনুমোদন দিয়েছে ইজরায়েলর। তবে খালি হাতে অনুমোদন নয় রয়েছে পাল্টা শর্তও। হামাসের শিড়দাঁড়া কি একেবারেই ভেঙে দিয়েছে তেল আভিভ? যুদ্ধবিরতি পেয়েও কি হামাস উঠে দাঁড়াতে পারবে না এই প্রশ্নটাও ঘোরাফেরা করছে অনেকের মুখেই।
এ মূহুর্তে হামাসের সিক্রেট প্ল্যান ফাঁস না হলেও যা জানা যাচ্ছে তা হল এই ৪ দিনে ঘটবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে এইসময়ে দেশটির সরকার সব বন্দিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর। সরকার যে ব্লুপ্রিন্ট বানিয়েছে তাতে নারী ও শিশুদের সমন্বয়ে কমপক্ষে ৫০ জিম্মি আগামী চার দিনে মুক্তি পাবে। শুধু ইজরায়েলি বন্দিরাই নয় ইজরায়েলের সেনারা যে পাল্টা প্যালেস্তানীয়দের বন্দি বানিয়েছে ছাড়তে হবে তাদেরকেও। হামাস ডিলের শর্ত হিসেবে যে তালিকা দিয়েছে তাতে। ৫০ জন বন্দিকে ছেড়ে দেয়ার বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে আটক ১৫০ জন ফিলিস্তিনি নারী ও শিশু মুক্তি পাবে। সেই সঙ্গে ওই চুক্তির অংশ হিসাবে মানবিক সহায়তা, ওষুধ ও জ্বালানি নিয়ে শতাধিক ট্রাককে গাজায় প্রবেশ করার সুযোগ দেয়া হবে বলে হামাস তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে। এছাড়াও যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকার সময় গাজা ভূখণ্ডে কোন হামলা বা গ্রেফতার করবে না ইসরায়েলি বাহিনী।
দীর্ঘ আলোচনার পর শেষপর্যন্ত এসব শর্ত মানতে রাজী হয়েছে দুপক্ষই কিন্তু প্রশ্ন হল এরপর কী? এরপর কী আবারও গাজায় একইভাবে কবজা করে নেবে ইজরায়েল? বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই যুদ্ধবিরতি নিতান্তই সাময়িক। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সঙ্গে কথা বলার সময় সিঙ্গাপুরের মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো জেমস ডোর্সে জানাচ্ছেন তাঁর ধারণা, ইজরায়েল এখনই যুদ্ধ থামাতে রাজি নয়। তাঁর মতে, এটা সবে প্রথম ধাপ দীর্ঘকালীন শান্তি এখনও গাজা থেকে বহু দূরে। এদিকে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভা গাজায় যুদ্ধবিরতির অনুমোদন দেওয়ার খবরে উচ্ছ্বসিত যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে মার্কিন প্রেসিডেন্টের একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে জো বাইডেন হামাসের হাতে বন্দিদের মুক্তির চুক্তিকে বিশেষ করে স্বাগত জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা আশা প্রকাশ করেছেন যে হামাসের হাতে বন্দি হয়ে আছে এমন অন্তত তিনজন মার্কিন নাগরিক আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মুক্তি পাবে। এর মধ্যে তিন বছর বয়সী একটি শিশুও আছে। ওই শিশুর বাবা মা সাতই অক্টোবরের হামলায় মারা গেছে। তবে হামাস এত জলদি তাদেরকে মুক্ত করবে কিনা সেটাও ম্যাটার। এদিকে নেতানইয়াহুর পক্ষ থেকে অলরেডি বলে দেওয়া হয়েছে যুদ্ধবিরতি শেষ হলেই গাজায় অভিযান শুরু করবে তারা। পাল্টা হামাসের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বিরতি শেষ হওয়ার পর আমাদের আঙুল থাকবে বন্দুকের ট্রিগারে। এবার দেখার এই যুদ্ধবিরতির পরিণতি ঠিক কী হয়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম