।। প্রথম কলকাতা ।।
Child mobile: আধুনিক প্রযুক্তির অন্যতম আবিষ্কার হচ্ছে স্মার্টফোন। তবে বাবা-মায়ের ব্যবহার করা ফোন শিশুদের হাতে দেওয়ার অভ্যাস করা খুবই বিপজজনক। কারণ এভাবে শিশুদের মোবাইল আসক্তি তৈরি হচ্ছে। এই ফোন ব্যবহারের ফলে শিশুর স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যায় এবং পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমান সময়ে শিশুরা এখন আর বাইরে গিয়ে খুব একটা খেলাধুলা করে না। তারা খেলা বলতে মোবাইল ফোনে হরেক রকম খেলা বোঝে। এই খেলা নেশায় পরিণত হয়। এই নেশা শিশুদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। মোবাইল পর্দার দিকে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকলে মাথা ধরা ,মাইগ্রেন, পেশিতে ব্যথা চোখের জ্যোতি কমে যায়। আর আট বছরের কম বয়সের শিশুদের অবশ্যই মোবাইল থেকে দূরে রাখতে হবে। বেশিরভাগ সময় মোবাইল ঘেঁটে কাটালে তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ হয় না। তাই শিশুদের মোবাইল নেশা থাকলে তা তাড়াতেই হবে।
করোনা ও তার পরবর্তী সময়ে শিশু ,কিশোরদের মোবাইলে আসক্তি মারাত্মক বেড়েছে। ঘরবন্দী শিশুদের কাছে ইন্টারনেট, স্মার্টফোন এখন খুবই সহজলভ্য। স্মার্ট ফোন বা মোবাইলের যন্ত্রে একসঙ্গে বিভিন্ন রকম বিনোদন হচ্ছে। গেম নানান ধরনের বিনোদনমূলক অত্যাধুনিক অ্যাপের হাতছানি ইন্টারনেট প্রভৃতি এক জায়গায় উপলব্ধ যা আগে ছিল না। বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করা, খেলাধুলা বই পড়া প্রভৃতির মাধ্যমে ধীরগতিতে আমাদের কল্পনা শক্তির বিকাশ ঘটে। কিন্তু মোবাইলে খেলা ভিডিও দেখার সময় অতিসত্বর শিশু মনে আনন্দ উদ্দীপনা সৃষ্টি হলেও কল্পনা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে।
তবে এই আসক্তি কাটানোর উপায় রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাচ্চাদের স্মার্ট ফোনে হাতে খড়ি হয় তার অভিভাবকদের হাতে। কিন্তু চাইলে অভিভাবকরাই পারেন সন্তানকে মোবাইলের আসক্তি থেকে বের করে অন্য জগতে তাদের ভুলিয়ে রাখতে। বাবা মা যা করবেন সেটা দেখেই শিশু শিখবে ।স্মার্টফোন ছাড়াও দুনিয়াতে আনন্দের আরো অনেক কিছু রয়েছে যেখানে অনেক ভালো অভিজ্ঞতার হাতছানি থাকবে। সেদিকে শিশুর ঝোঁক বাড়াতে হবে।
বাচ্চার চোখে চোখ রেখে কথা বলা তার ভেতরের সুপ্ত প্রতিভা, ইচ্ছাগুলোকে চিনতে বা জানতে পারলে তবেই শিশুদের অন্যদিকে ঝোঁক বাড়ানো সম্ভব। শিশুদের কোমল মন থেকে মোবাইল আসক্তি কাটানো খুব সহজ নয়। তবে তার অন্যদিকে আগ্রহের জায়গাটা খুঁজে মোবাইলের সম বিকল্প এবং আকর্ষণীয় জিনিসের প্রতি তার আগ্রহকে বাড়িয়ে তুলতে পারলে তবে মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তি কমবে। যেমন গান গাওয়া, বাদ্যযন্ত্রের প্রতি খুদেদের কৌতুহল থাকলে সেই আগ্রহকে আরো বাড়িয়ে দিতে হবে । এছাড়াও ছবি আঁকাতেও দিতে পারেন। পাশাপাশি কম্পিউটার কোডিং ল্যাঙ্গুয়েজ শেখানো, বিভিন্ন রহস্য রোমাঞ্চকর গল্পের প্রতি ঝোঁক তৈরি করা খুব দরকার।
সন্তানকে সময় না দিয়ে তার বদলে হাতে মোবাইল ধরিয়ে দেওয়া বা টিভিতে কার্টুন চালিয়ে দেওয়াটা অনুচিত। অনেক শিশু একাকিত্বের কারণে মোবাইল ফোনের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। বাড়ির আবহে পড়াশোনা খেলাধুলার পরিবেশ থাকা অত্যন্ত জরুরি। রাতে ঘুমানোর আগে এক ঘন্টা সকালে ঘুম ভাঙার পর প্রথম এক থেকে দুই ঘন্টা খুদেদের ফোন ব্যবহার নিষেধ রাখতে হবে। স্মার্ট ফোন ও ইন্টারনেটের প্রতি নির্ভরশীলতা বাড়লে শিশুর আনন্দ সূচক ক্রমে কমতে থাকে এবং তারা অসহিষ্ণু হয়ে পড়ে। শিশুদের তাড়াতাড়ি ঘুমোনোর অভ্যাস করান আর ঘুমানোর আগে দুধ খাওয়ান। শিশুদের খাবারের প্রতি যত্ন নিতে হবে। খাবারে পুষ্টি ঠিক রাখতে হবে, সবুজ শাকসবজি খেতে দিন জাঙ্ক ফুড বন্ধ করুন। সপ্তাহের এমন একটা দিন বেছে নিন যেদিন স্মার্টফোনের ব্যবহার করাই যাবে না। এটি পরিবারের সকলের ছুটির দিন হলে সবচেয়ে ভালো হয়। স্মার্ট ফোনে কোন কোন অ্যাপ আপনার সন্তান বেশি ব্যবহার করে সেদিকে নজর রাখুন। দেখা যাবে বহু অ্যাপ রয়েছে যা ওর কাজে লাগে না অথচ সেগুলি নিয়েই সময় কাটায় সবচেয়ে বেশি। দ্রুত ফোন থেকে সেগুলো মুছে ফেলুন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম