।। প্রথম কলকাতা ।
Iran Saudi Arabia India: ভারতকে একঘরে করতেই চীনের চাল ছিল ইরান-সৌদিকে এক ট্র্যাকে আনা। বেজিংয়ের চক্রান্তে বড় লাভ হয়ে গেল ভারতের। ইরান-সৌদির যে বন্ধুত্ব আগ বাড়িয়ে করাল চীন সেটা আদৌ টিকবে তো? বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন তা চমকে দেওয়ার মতো প্রেডিকশন। ইরান আসলে কেন চিরশত্রু সৌদির সঙ্গে বন্ধুত্ব করল? আসল সত্যি ফাঁস হয়ে গেল। খবর একটাই কিন্তু বিশ্লেষণ হতে পারে হাজারটা৷ কারণ মধ্যপ্রাচ্যের দুটো দেশের বন্ধুত্বে কারোর পৌষমাস তো কারোর সর্বনাশ। ইরান-সৌদি আরবকে মিলিয়ে দিয়ে ভারতকে কোন কূটনৈতিক প্যাঁচে ফেলতে চেয়েছিল চিন? কিন্তু হয়ে গেল বুমেরাং। মধ্যপ্রাচ্যে ভারতের বাণিজ্যের রাস্তা এখনও মসৃণ নয় সুযোগ তুলতে চেয়েছিল ড্রাগনের দেশ। ইরান বাধ্য হল চিনের কথা মানতে, চিরশত্রুর সঙ্গে হাত মেলাতে, কিন্তু কেন?
ওয়াশিংটন বুঝে গেল বেজিংয়ের এই অ্যাকশনের নেপথ্যে কোন অঙ্ক রয়েছে৷ তবে এখন চীন যেটা করল কয়েকবছর আগে এটাই ছিল সেখানকার পররাষ্ট্রনীতির বিরোধী। বহু বছর ধরেই চিনের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম ঘোষিত স্তম্ভ ছিল ‘অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলানো’। এখন নতুন ট্রেন্ড৷ জেনে রাখুন মধ্যপ্রাচ্যকেই পশ্চিম এশিয়াও বলা হয় আর এই পশ্চিম এশিয়ায় চীনের সক্রিয়তা বা অ্যাকটিভিটি বাড়ছে প্রতিটা দিনে। ভারত ইরানের দিকে নাকি সৌদি আরবের পক্ষে? নাকি আমেরিকার মতোই এধরণের শান্তিচুক্তিতে অস্বস্তি বাড়ল দিল্লির? স্পষ্ট ভাষায় জানতে চায় চীন। চিনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডল ইস্টার্ন স্টাডিজ় সেন্টারের অধিকর্তা ইউ বিংবেন দ্য ওয়্যারকে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, পশ্চিম এশিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে চীন নতুন একটি কাঠামো গঠন করেছে। সাম্প্রতিক শান্তিচুক্তিও তারই অন্তর্গত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে ওয়াকিবহাল৷ তাই তারা জানে সৌদি জ্বালানি তেল দেয় ভারতকে। ইরানের হরমুজ প্রণালী মারাত্মক গুরুত্বপূর্ণ ইরান ও সৌদি উভয় দেশ যেমন ভারতের মিত্র। তেমনই আমেরিকাও কিন্তু ভারতের অতি ভালো বন্ধু। এখানে কারও বিরুদ্ধে বলা মানে অপস্তুতে পড়তে হবে দিল্লিকে। ভারতকে কোনঠাসা করার সোজা হিসেব কষল চীন। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন দুটো, যে ইরান-সৌদি চুক্তি নিয়ে এত হইচই সেটা টিকবে তো আদৌ? জেনে রাখুন চীনের চক্রান্তে লাভই হয়ে গেল ভারতের আর সেটা দিল্লিকে জানিয়ে দিল ইরান নিজে। কূটনৈতিক মহল বলছে আসল গল্পটা শুনুন আগামী ২৫ বছরে চীনের পক্ষ থেকে ইরানে ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ইরানের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারও চীন। তাই বলা যায় তেহরান চীনের মধ্যস্থতায় করা যেকোনো চুক্তি মানতে বাধ্য। ইরান যদি চুক্তি মেনে না চলে, তবে আঞ্চলিক শান্তির ক্ষেত্রে বড় ধরনের সুযোগ হাতছাড়া হবে৷
ভারতের লাভ এখানেই ইরানের ভারতে থাকা রাষ্টদূত ইরাজ ইলাহির দাবি পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ও শান্তি বৃদ্ধি হলে ভারতের বাণিজ্যের বিস্তারের পক্ষে তা ভালো খবর। কারণ তুরস্ক, ছাড়াও কাতার, কুয়েত এমনকি ইরানেও নুপুর শর্মার একটা মন্তব্যের পর রীতিমত পণ্য বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। ভারতের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক আগের থেকে বেটার হলেও তিক্ততা সব যে মিটেছে তেমনটা নয় এদিকে সৌদি আরবের থেকে অন্তত ১৮ শতাংশ জ্বালানি তেল আমদানি করে ভারত। তাই সৌদি ইরানের সম্পর্ক যত ভালো হবে ততই ভারতের লাভ। অনেকেই বলছেন ইরানের সঙ্গে সৌদির চুক্তি যেকোনো সময় ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু ইরান জানে সৌদি এখন তাদের কাছে সোনার ডিম দেওয়া হাঁস হতে পারে। তাই হয়ত এই চুক্তি এফেকটিভ হলেও হতে পারে। ভারত ইরান-সৌদির বন্ধুত্বের পরই জানিয়ে দিয়েছিল পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক রয়েছে এবং এই অঞ্চলে আমাদের গভীর স্থায়ী স্বার্থ রয়েছে”। সেক্ষেত্রে বলা যেতেই পারে ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে গিয়ে আদতে ভারতের লাভই করে দিল চিন৷
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম