।। প্রথম কলকাতা ।।
Sudan Grass: ভারতে বহু আগে থেকেই কৃষিকাজ এবং গবাদি পশু পালন একটা বড় অংশের মানুষের জীবিকা। বর্তমানে সেই গবাদি পশু পালনকে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে বড় বড় ফার্ম। সেখানে গবাদি পশু রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে পাওয়া দুধ লাভের মুখ দেখাচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এই সময়ে পশুপালন (Animal Husbandry) যত বেশি ব্যবসায়িক রূপ পেয়েছে তেমন ভাবে কিন্তু গো খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ বাড়েনি। তাই ভারতে গো খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ যদি বাড়ানো যায় এবং গবাদি পশুদের জন্য সুষম খাদ্য হিসেবে যদি সুদান ঘাস (Sudan Grass) চাষ করা যায় তাহলে সেটা ভালো আয়ের পথ হতে পারে।
সুদান হল এক ধরনের ঘাস, যা গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে পরিচিত। এই ঘাসটি উচ্চ ফলনশীল। এটি গবাদি পশুর দুধ উৎপাদনের পরিমাণকে বাড়াতে পারে। এছাড়াও গবাদি পশুদের সুষম খাদ্য হিসেবে পরিচিত এই ঘাস। খড়ের সঙ্গে মিশিয়ে এই ঘাস খেতে দেওয়া হয় গবাদি পশুদের। কিন্তু এটি চাষ (Farming) করার জন্য বিশেষ কোনো ঝঞ্ঝাট নেই। এমন অনেক জমি পতিত অবস্থায় সারা বছর পড়ে থাকে যেখানে আগাছা জন্মায় । সেই জায়গাগুলিকে ব্যবহার করে যদি সুদান ঘাস চাষ করা যায় তাহলে বিপুল অর্থ উপার্জন করা যেতে পারে। আরও একটি ভালো বিষয় হল এই ঘাস আপনি সারা বছর ধরেই চাষ করতে পারবেন।
মাটি: সুদান ঘাস চাষ করার জন্য বেলে দোঁআশ মাটি সব থেকে ভালো। যেই মাটিতে জল দাঁড়ায় না সেই ধরনের মাটিতে চাষ করা হয় এই ঘাস।
চাষের সময় এবং পদ্ধতি: সাধারণত সারা বছর ধরে এই ঘাস চাষ করা যেতে পারে। তবে প্রচন্ড শীত এবং ভারী বর্ষার সময় বীজ বপন করা তেমন ফলদায়ক হয় না। যেই জমিতে সুদান ঘাস চাষ করা হবে সেটি আগে আগাছা মুক্ত করে নিতে পারলে রোপণের ক্ষেত্রে সুবিধা হয়। জমির মাটি প্রস্তুত করার সময় জৈব সার মিশিয়ে নিতে হয় মাটির সঙ্গে। আর বীজ বপনের আগে সেই বীজগুলিকে এক থেকে দুই ঘন্টা হালকা রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। তারপর জলে ভিজিয়ে রাখতে হয় প্রায় দুদিন পর্যন্ত। এরপরই বীজগুলি বপনের উপযুক্ত হয়।
ঘাস কাটার পদ্ধতি: সুদান ঘাসের বীজ বপন করার পর যখন চারা বের হবে তার থেকে প্রায় ৪০ দিন পর প্রথমবার ঘাস সংগ্রহ করতে পারবেন আপনি। তবে এই ঘাস কাটার একটি বিশেষ নিয়ম রয়েছে। মাটি থেকে ৫-৬ ইঞ্চি ছেড়ে তারপরে ঘাস কাটতে হয়। কারণ সেখান থেকে পুনরায় নতুন ঘাস জন্মায়। তিন সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় বারের জন্য ঘাস কাটতে পারেন আপনি। এই সময় ফলন কিছুটা কম হয় কিন্তু তারপর ধীরে ধীরে ফলন বাড়তে থাকে।
সুদান ঘাস শুকিয়ে তারপর গবাদি পশুকে খাওয়ালে বিশেষ কোন লাভ হয় না। তাই ঘাস যাতে শুকিয়ে না যায় সেই দিকে নজর দিতে হয়। গোটা ঘাস গবাদি পশুদেরকে যদি খেতে দেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে অপচয় হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি থাকে। তাই ওই ঘাসগুলিকে দুই থেকে তিন ইঞ্চি লম্বা করে কেটে নেওয়া হয়। আর তারপর মিশিয়ে দেওয়া হয় ঘরের সঙ্গে। সুদান ঘাসের মধ্যে রয়েছে প্রায় বারো শতাংশ প্রোটিন। এই ঘাস গবাদি পশুদের কাঁচা ঘাসের চাহিদা মেটায় এবং তাদের দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। কাজেই সুদান ঘাসের চাষ অল্প খরচে লাভবান হওয়ার অন্যতম একটি পথ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম