।। প্রথম কলকাতা ।।
Indus Water Treaty: সিন্ধু জল চুক্তি (Indus Water Treaty) নিয়ে ভারত (India) আর পাকিস্তানের মধ্যে বহুবার আলোচনা হয়েছে। অবশেষে সেই চুক্তি নিয়ে এবার কড়া অবস্থান ভারতের। সেই বিষয়ে ভারত পাকিস্তানকে (Pakistan) একটি নোটিশ (Notice) জারি করল।
পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধ বাঁধল বলে। অর্থনৈতিক অবস্থা রীতিমত ভেঙে পড়েছে। একটা গ্যাস সিলিন্ডারের দাম প্রায় দশ হাজার টাকা। বাজারে সামান্য পিয়াঁজ, আলু, রুটি কিনতে গিয়ে কপাল চাপড়াচ্ছেন সাধারণ মানুষ। যে টাকায় একসময় পাঁচ কেজি জিনিস পাওয়া যেত সেই টাকায় এক কেজিও পাওয়া যাচ্ছে না। দেশটির এখন ঋণের ভারে বিধ্বস্ত। যার কারণে জনজীবন ওলটপালট হয়ে গেছে। এমত পরিস্থিতিতে ইসলামাবাদের উপর এক্সট্রা চাপ বাড়ল।
সিন্ধু জল চুক্তি (Indus Water Treaty) নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সমস্যা বহুদিনের। এই চুক্তিতে বেশ কিছু সংশোধনের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের বারংবার আপত্তিতে সেই সংশোধন আটকে রয়েছে। যার কারণে দীর্ঘ ৬২ বছর কেটে গেল এই চুক্তি নিয়ে কোন সুরাহা হয়নি। এবার বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে ভারত। নোটিশ পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট কমিশনারের মাধ্যমে। এই নোটিশের মূল উদ্দেশ্য সিন্ধু জল চুক্তির সংশোধন। এই চুক্তির জটিলতার কারণে দুটি বড় প্রকল্প আটকে রয়েছে। ভারত পাকিস্তানকে ৯০ দিন সময় দিয়েছে। এই ৯০ দিনের মধ্যে পাকিস্তানকে আলোচনায় বসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন নয়াদিল্লি।
সেই ১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বরে তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জহরলাল নেহেরু এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আয়ুব খানের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। মূলত হিমালয় থেকে বিভিন্ন নদী উৎপন্ন হয়ে কাশ্মীর ও লাদাখের উপর দিয়ে বয়ে গেছে। যার মধ্যে কিছু নদী পশ্চিম দিকে গিয়ে পাকিস্তানে পৌঁছেছে। আবার কিছু নদী চলে এসেছে পূর্ব দিকে। সেক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে জলবন্টন নিয়ে এবং নদীর উপর তৈরি হওয়া প্রকল্প নিয়ে একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনার প্রয়োজন ছিল। তাই এই জল চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সমস্যা হল অন্য জায়গায়। চুক্তি মানেনি পাকিস্তান। চুক্তি অনুযায়ী, পাকিস্তান পশ্চিম দিকের সিন্ধু, চেনাব, ঝিলামের মতো নদীর জল পাবে। অপরদিকে ভারত পাবে সুজলেট, বিয়াস, রবির মতো পূর্বদিকের নদীগুলির জল।
২০১৫ সালে কিসেনগঙ্গা আর রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে আপত্তি জানায় পাকিস্তান। এখনো পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কোন সুষ্ঠ সমাধান হয়নি। ভারত বারংবার আলোচনা চাইলেও পাকিস্তানের তরফ থেকে সেভাবে আগ্রহ দেখা যায়নি। উপরন্তু দিনের পর দিন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। পাকিস্তানের পরিস্থিতি এখন বেশ জটিল। কিছুদিন আগেই শাহবাজ শরীফের গলায় শোনা যায় উল্টো সুর। যেখানে তিনি ভারতের সাথে বিবাদ নিয়ে নরম সুরে কথা বলেন।
এর মাঝেই ভারত সিন্ধুর জল চুক্তি নিয়ে সংশোধনের জন্য নোটিশ পাকিস্তানের কাছে একটু চাপের হতে পারে। পাকিস্তান সেই ২০১৭ থেকে ২০২২ পর্যন্ত স্থায়ী সিন্ধু কমিশনের প্রায় পাঁচটি বৈঠকের সময় এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে বারংবার অস্বীকার করেছে। অবশেষে ভারত পাকিস্তানকে নোটিশ পাঠিয়েছে। যখন সিন্ধু জল চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল তখন কিন্তু বিশ্ব ব্যাঙ্কও মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অংশ নেয়। পাকিস্তানের তরফ থেকে ক্রমাগত চুক্তির নিয়ম এবং আলোচনা উপেক্ষা করাকে আর মানতে পারল না ভারত। এবার দেখার পাকিস্তান এই নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে কোন স্টেপ নেয়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম