।। প্রথম কলকাতা ।।
Onion price in Bangladesh: বাংলাদেশে আদার ধাঁচেই পেঁয়াজেও কারসাজি? ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরেই বাংলাদেশে হাওয়া বদল। আমদানি শুরু হতেই হুড়মুড়িয়ে আরও দাম কমছে পেঁয়াজের। যা হাতানোর হাতিয়ে নিয়েছে অসাধু গোষ্ঠীরা। প্রশ্ন উঠছে, এতো দেরি কেন? কেন আগেই ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো না? দু মাস ধরে ক্রেতাদের যে পকেট কাটা গেল, তার দায় নেবে কে? কে বলবে দুদিন আগেই বাংলাদেশে পেঁয়াজ সেঞ্চুরি হাকাচ্ছিল? পেঁয়াজের ঝাঁজে চোখের জল ফেলছিল বাংলাদেশীরা। রাতারাতি ছবিটা কিভাবে বদলে গেল জানুন।
প্রথমে ভারত থেকে পেঁয়াজ ঢোকার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাংলাদেশের বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজের দাম এক লাফে ১০০ থেকে ২০-৩০ টাকা কমে ৭০-৮০ টাকা হয়ে গেল। আর ভারত থেকে পেয়াঁজ ঢোকার পর তো সেই দাম হু হু করে কমতে শুরু করেছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে যেটা আজ করা হলো সেটা আগে কেন করা হল না? বর্তমান পরিস্থিতি থেকে খানিকটা পিছিয়ে গিয়ে বলতে হয় কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করেই গত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া বন্ধ রেখেছিল বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয়। পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া নিয়ে কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চাপানউতোর চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। তারপর, পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের মানুষের কথা ভেবে, শ্রমজীবী মানুষের কষ্টের কথা মাথায় রেখে আমদানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কদিন আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করে কৃষি মন্ত্রণালয়।
কিন্তু, পেঁয়াজের আমদানি নিয়ে এই যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল তার নেপথ্যে আছে উৎপাদনের পরিমাণ নিয়ে তথ্যগত বিভ্রান্তি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে ৩৪ লক্ষ টনেরও বেশি। যেখানে পেঁয়াজের চাহিদা ২৬ থেকে ২৮ লক্ষ টন। তাহলে, কৃষি বিভাগের তথ্য সঠিক হলে পেঁয়াজ আমদানির কিন্তু কোনো প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বাস্তবে প্রতিবছরই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করতে হয় বাংলাদেশকে। আর, বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি যদি নাই থেকে থাকে সেক্ষেত্রে দাম দ্বিগুণ কিংবা তারও বেশি হওয়ার কোনো যুক্তি নেই। কিন্তু তারপরেও পেঁয়াজের দাম শতকের ঘর পূরণ করেছে। অসাধু গোষ্ঠীরা এরই মধ্যে যা হাতিয়ে নেওয়ার নিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, মে মাসের মাঝামাঝি সময়েই যদি এই আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো তাহলে এভাবে ক্রেতাদের পকেট কাটা যেত না। সেই পেঁয়াজ ভারত থেকেই আমদানি হল, কিন্তু হলো অনেক পরে। এতে সমস্যায় পড়ল কারা? ক্রেতারা। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষকের স্বার্থ নিশ্চয়ই দেখবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ক্রেতার স্বার্থ দেখবে। কিন্তু দু পক্ষের দেখার মধ্যে বড় ধরনের গরমিল হয়ে গেলে সাধারণ মানুষের যে দুর্গতির শেষ থাকে না, পেঁয়াজের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। সে ক্ষেত্রে এখন বাংলাদেশে যে প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে, এই যে দুই মাস ধরে ক্রেতাদের এভাবে ভুগতে হলো, তার দায় কৃষি মন্ত্রণালয় এড়াবে কীভাবে?
মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশে এখন প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম চড়া। এই সময় যেখানে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাধ্যমে মানুষকে স্বস্তি দেওয়াটা ফার্স্ট প্রায়োরিটি হওয়া উচিত, সেখানে সময় নষ্ট কেন? এটা আমাদের প্রশ্ন নয়, প্রশ্নটা তুলছে বাংলাদেশের মানুষ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম