।। প্রথম কলকাতা ।।
২০২৩ এর আইসিসি বিশ্বকাপ হয়ে গেছে। ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়েছে অস্ট্রেলিয়া আর ভারত। পরপর ১০ টা ম্যাচ জেতার পরে ফাইনালে গিয়ে পরাজয় ঘটেছে ভারতের। কিন্তু বিষয়টা মিটে গেলেও এখনো রেশ কাটেনি ভারত আর বাংলাদেশে। খেলার মাঠে ভারতের পরাজয়কে কেন্দ্র করে উল্লাসে ফেটে পড়ে বাংলাদেশের কিছু ভক্ত। কেউ কেউ সেলিব্রেট করেছে, আবার কেউ বা মেতেছে ‘পৈশাচিক উল্লাস’ এ। তারপর থেকেই শুরু হয় তীব্র গুঞ্জন। যা পরিণত হয়েছে তুমুল বিতর্কে। বাংলাদেশের কনটেন্ট ক্রিয়েটর কনটেন্ট বানাচ্ছে, আবার তারই জবাব দিচ্ছেন ভারতের কিছু কনটেন্ট ক্রিয়েটর। তার আবার পাল্টা জবাব আসছে ওপার বাংলা থেকে। এরকম পাল্টাপাল্টি জবাব চলতেই থাকছে। ট্রোলিংয়ের ঝড়ে ছড়াচ্ছে প্রচুর গুজব।
বাংলাদেশিদের জন্য নাকি ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে ভারত, আবার কেউবা বলছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের ব্যান করেছে ভারত। আগুনের স্ফুলিঙ্গের মতই গুজব এখন ছড়িয়ে পড়েছে দুই দেশে। যা তিক্ত করে তুলছে দুই দেশের শত শত বছরের ঐতিহ্যগত সম্পর্ককে। ইতিহাস কে না জানে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল ভারত। বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিবছর চিকিৎসার জন্য ভারতে আসেন। দুই দেশ একদম কাছাকাছি থাকায়, স্থলবন্দরের মাধ্যমে কম সময়ে কাঁচা মাল থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কাছে ফার্স্ট চয়েজ ভারত। ওদিকে বাংলাদেশও ভারতকে নিজেদের বন্দর ব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছে। যার কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের বাণিজ্য। এক কথায়, দুই দেশ একে অপরের সমস্যায় বারংবার পাশে দাঁড়িয়েছে। দুই দেশের কূটনৈতিক আলোচনা থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীদের সফরে, বারংবার উঠে এসেছে দুই দেশের পারস্পরিক বন্ধুত্ব এবং সহযোগিতার কথা।
সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিতর্ক কিংবা ট্রোলিংয়ে কেউ মজা নিচ্ছেন, আবার কেউ বিরক্ত হচ্ছেন। আঘাত লাগছে ভাবাবেগে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের একের পর এক হারে এমনি থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটপ্রেমীদের মন একটু খারাপ ছিল। তারপর ভারতের মাটিতে বাংলাদেশি কয়েকজন ক্রিকেটপ্রেমীদের সঙ্গে নাকি দুর্ব্যবহার হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ ওঠে। বিশ্বকাপের ফাইনালের পরেই আমুল বদলে যায় গোটা চিত্র। সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই ভারতকে নিয়ে ট্রোলিং ভিডিও। যার জেরে, দার্জিলিংয়ের কিছু হোটেল বাংলাদেশি পর্যটকদের কাছে সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে তাদের দরজা। বেশ ক্ষুব্ধ ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরাও।
খেলায় হারজিত থাকবেই। দর্শক বিভক্ত হবে দুটো পক্ষে। এটা কিন্তু একেবারে অস্বাভাবিক বিষয় নয়। কিন্তু খটকাটা অন্য জায়গায়। ফাইনালের দিন মনে হয়েছিল, খেলার কৌশল নয়, বাংলাদেশের কিছু মানুষ অস্ট্রেলিয়াকে সাপোর্ট করেছে শুধুমাত্র ভারতের বিপক্ষে খেলেছে বলে। বাংলাদেশের কিছু ক্রিকেটপ্রেমীদের উল্লাসে এপার বাংলায় কেউ কেউ ডাক তুলেছে ‘বয়কট বাংলাদেশ’ এর। প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো, ভারতকে নিয়ে বাংলাদেশের সমস্ত মানুষের যে একই ধারণ এমনটা কিন্তু নয়। তবে এই সমালোচনা বিতর্ক ট্রোলিং কোনভাবেই কাম্য নয়। ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে ক্রিকেট আবেগ এবং ভালোবাসা জায়গায়। খেলায় হার জিৎ তো থাকবেই, কিন্তু সেটা নিয়ে এবার অন্তত ট্রোলিং বন্ধ হওয়া দরকার।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম