।। প্রথম কলকাতা ।।
Bangladesh: সামনেই রোজা, তাকে কেন্দ্র করে ভারত থেকে বাংলাদেশে (Bangladesh) চিনি আমদানি (Sugar Import) শুরু করেছে। প্রতি বছর বাংলাদেশে চিনির যে চাহিদা রয়েছে তার মাত্র ১০ শতাংশ দেশটিতে উৎপন্ন হয়। বাকি ৯০ শতাংশ চিনি অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা হয়। যারা অধিকাংশ যায় ভারত (India) থেকে। এবার চিনি বিপাকে পড়তে পারে বাংলাদেশের আমজনতা। এমনিতেই দেশটির মূল্যবৃদ্ধি চরমে। বাজারে চিনির দাম বাড়তে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ বেনাপোল (Benapole) স্থলবন্দরে আটকে রয়েছে প্রায় ১২৫০ মেট্রিক টন চিনি। ৪২টি ট্রাকে প্রায় দেড় মাস ধরে আটকে থাকায় এই বিপুল পরিমাণে চিনির গুনমান ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বেশিদিন আটকে থাকলে তা পরবর্তীকালে খাওয়ার উপযোগী থাকবে না।
বেনাপোল বন্দরে আটকে রয়েছে ভারতীয় ট্রাক। সেই ট্রাকে বোঝাই প্রচুর পরিমাণে চিনি। প্রায় দেড় মাসের বেশি হয়ে গিয়েছে। একই ভাবে বন্দরে দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রাক গুলি। যেখানে রয়েছে প্রায় এক হাজার আড়াইশো মেট্রিক টন চিনি। অপরদিকে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ আমদানিকারকদের কপালে। সেই ২৫শে ডিসেম্বর থেকে বন্দরে ভারতীয় টার্মিনালে ট্রাক গুলি আটকে রয়েছে। প্রচন্ড শীতের চরম ভোগান্তির মধ্যে দিন কাটছে ট্রাকচালক আর শ্রমিকদের। ২৫শে ডিসেম্বর ছয়টি চালানের মাধ্যমে ৮৪টি ট্রাকে আড়াই হাজার মেট্রিক টন চিনি আমদানি করা হয়। যার মধ্যে এই ৪২ টি ট্রাকে ট্রাক এখনো পর্যন্ত সাড়ে বারোশো মেট্রিক টন চিনি নিয়ে একই অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।
প্রতি মেট্রিক টন চিনির ক্ষেত্রে ৪৩০ ডলার মূল্যে আমদানিকারকদের খালাস নিতে হয়। কিন্তু পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনারি অ্যাসোসিয়েশন কম মূল্যে শুল্কায়নের অভিযোগ তোলে। সেই অভিযোগ পৌঁছায় শুল্ক কর্তৃপক্ষের কাছে। তারপরে বলা হয় চিনির খালাস নিতে গেলে প্রতি মেট্রিক টন খরচ পড়বে প্রায় ৫৭০ ডলার। অথচ এই চড়া মূল্যে খালাস নিতে গেলে আমদানিকারকদের প্রচুর লোকসান হবে। তাই বন্দরে আটকে পড়ে রয়েছে ৪২টি ট্রাক। ট্রাক চালকরা মনে করছেন, ঠান্ডার মাঝে মাঝেই গরম পড়ছে, যার কারণে চিনির মান নিম্নমুখী। খুব দেরি হলে খাওয়ার উপযুক্ত থাকবে না। অপরদিকে প্রতিদিন ট্রাক ভাড়া বাবদ আমদানিকারকদের লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ গুনতে হচ্ছে। এমত পরিস্থিতিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, একটি অভিযোগের কারণে চালানের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তবে ৫৭০ ডলার মূল্যে আমদানিকারকরা খালাস নিতে পারবেন। অপরদিকে আমদানিকারকরা মনে করছেন, এতটা দামে চিনি খালাস করে বাজারে বিক্রি করা সম্ভব হবে নয়। সেক্ষেত্রে কয়েক লক্ষ টাকার আর্থিক লোকসান হতে পারে।
বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অর্থাৎ এনবিআর প্রতি টনে চিনি মূল্য নির্ধারণ করেছিল ৪৩০ মার্কিন ডলার। কিন্তু চলতি বাজেট এই আমদানি মূল্য কম দেখানোর অভিযোগ তোলে সুগার রিফাইনারি অ্যাসোসিয়েশন। যার কারণে শুল্ক কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করে প্রতি টন চিনিতে ১৪০ ডলার বাড়িয়ে দিয়েছে। বেনাপোল শুল্ক ভবনের কর্তৃপক্ষরা মনে করছেন, যেহেতু অভিযোগ পত্র এসেছে তাই বিষয়টি শুল্ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অপরদিকে চরম ভোগান্তিতে ট্রাকচালকরা। এই প্রচন্ড শীতের মধ্যেও তাদের ট্রাকের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। পাশাপাশি রয়েছে স্নান খাওয়ার কষ্ট। ভারতীয় ট্রাক বন্দরে আটকে থাকায় প্রতিদিন ট্রাক প্রতি ডেমারেজ দিতে হচ্ছে প্রায় ২০০০ টাকা, এছাড়াও রয়েছে বন্দরের চার্জ। যদি সমস্যার সমাধান দ্রুত না হয় তাহলে আমদানিকারক সেতু এন্টারপ্রাইজ লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম