।। সুচিত্রা রায় চৌধুরী ।।
Ukraine India: পুতিনের বড় অনিষ্ঠ হওয়ার আশঙ্কা বাঁচিয়ে দিল ভারত। কৃতজ্ঞ থাকতে হবে মস্কোকে দিল্লির কূটনীতির কাছে। পাকিস্তানের সঙ্গে মাখো মাখো সম্পর্কের দাম ইউক্রেনকে এবার দিতে হবে? রাজনীতির রং লাগিয়ে মূল বিষয়ের দফারফা হতে দেবে না ভারত। কড়া বার্তা দিয়ে দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভারতের ভালোমানুষীর সুযোগ আর তুলতে পারবে না ইউক্রেন৷ জেলেনস্কির স্ট্র্যাটেজিই ছিল ভারতের মাটিতে ভ্লাদিমীর পুতিনকে অপদস্ত করা। দিল্লি চান্সই দিল না এবার। ইউক্রেন কি এবার বদলা নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে আরও জোরদার করবে ঘনিষ্ঠতা। কত বড় আফটার এফেক্ট হতে পারে ভারতের কড়া জবাবের।
কূটনৈতিক মহল বলছে, একেবারেই পরোয়া করছে না ভারত৷ এবারের জি২০ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হবে না ইউক্রেনকে। অতীতের রেকর্ড জেলেনস্কির বড় আশা ভেঙে দিল। এবার ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর স্পষ্ট জানিয়েছেন এবারের জি২০ সম্মেলন আমন্ত্রণ করা হবে না ইউক্রেনকে। আপনি ভাবছেন হয়ত কতবার হবে জি২০ বৈঠক৷ বলে রাখি ভারতের বিভিন্ন শহরে বিভিন্ন পর্যায়ে চলছে এই বৈঠক। তবে সেপ্টেম্বরে এর চূড়ান্ত মিটিং হবে আর সেই বৈঠকেই ভারতের আসার জোর সম্ভাবনা রয়েছে ভ্লাদিমীর পুতিনের। ইউক্রেন এখন থেকে নয়, যবে থেকে ভারতে তাদের ডেপুটি বিদেশমন্ত্রী এমিন জাপারোপা এসেছিলেন তবে থেকে। জি২০ তে আমন্ত্রণ পাওয়ার লবি করছে ইউক্রেন। বারবার বলা হয়েছে জি২০তে আমন্ত্রণ করা হোক ভ্লাদিমীর জেলেনস্কিকে।
কেন জানেন? কারণ এটাই হতে পারে রাশিয়াকে বিশ্বের সামনে আরও বদনাম করতে ইউক্রেনের জন্য বড় প্লাটফর্ম৷ এযাত্রায় ভারত মস্কোকে বাঁচিয়ে নিল। রাশিয়া ভারতের বন্ধু, শুধু কি এটাই কারণ নাকি নেপথ্যে অন্য অঙ্ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন এখানে শুধু মস্কো ম্যাটার নয় গভীরে গেলে বোঝা যায়। ইউক্রেনের প্রো পাকিস্তানি আচরণ সব ভুল ভেঙে দিল ভারতের? যুদ্ধে লাগাতার পাকিস্তানের থেকে অস্ত্র সাপ্লাই৷ না বিষয়টা ঠিক তেমনও নয়। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর কড়া ভাষায় জানিয়েছে এটা ইউএনএসসি নয় এটা জি২০। এর মানে কী? ২০২২ ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি২০ সম্মেলনের কথা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। জেলেনস্কি সেখানে সশরীরে আসেননি কিন্তু ভিডিও কলে যুক্ত হয়েছিলেন। ব্যাস তারপরই পলিটিক্স কাকে বলে? গোটা জি২০ থেকে বিশ্বের কাছে একটাই বার্তা উঠে আসে রাশিয়া কত বড় ভিলেন যে ইউক্রেনে এভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে। কোনও গ্লোবাল কোঅপারেশন, খাদ্য নিরাপত্তা, জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়ে ফোকাস করা হয়নি কিন্তু এটাই কি আসল উদ্দেশ্য জি২০র?
কূটনীতিবিদদের মতে, ভারত এবার যেহেতু হোস্ট তাই দিল্লি একেবারেই চাইছে না জি২০তে কোনও রাজনীতির রং লাগুক। ভারত চায় এবারের জি২০ তে গুরুত্ব পাক খাদ্য নিরাপত্তা, জ্বালানি নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সহযোগীতা, পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয় এবং গ্লোবাল কোঅপারেশন। এবার যোধপুরে জি২০ সম্মেলনে উঠে এসেছিল গ্লোবাল স্ক্রিল ম্যাপিংয়ের আইডিয়া। বিশ্বের যেখানে স্ক্রিলড জনতা থাকে এবং তাদের সেই স্কিলের চাহিদা রয়েছে এই দুটোকে আলাদা আলাদা করে ম্যাপ করাটা দরকার। অবশ্য এর মানে এটা ভাববেন না ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলে গেল ভারত। যখন কিয়েভের ডেপুটি বিদেশমন্ত্রী এমিন জাপারোপা এসেছিলেন তখন ভারতের কাছ থেকে মেডিসিন, মেডিক্যাল সরঞ্জামের সাহায্য চেয়েছিলেন। ভারত বলেছিল এসবের সঙ্গে স্কুলবাসও ইউক্রেনের পাঠানো হবে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের নিজের নিজের অবস্থান কায়েম রাখুক, কিন্তু জি২০ বৈশ্বিক স্বার্থে যে যে উদ্যোগ নিচ্ছে সেটা যাতে কোনও যুদ্ধের কারণে ক্ষুন্ন না হয় সেটারই দায়িত্ব নিয়ে নিল ভারত। এবার দেখার এই চ্যালেঞ্জে কতটা সফল হয়, কতটা সফল করতে পারে দিল্লি।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম