।। প্রথম কলকাতা ।।
Russia-Ukraine Conflict: রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ (Russia-Ukraine Conflict) প্রায় এক বছর হল। এখনো পর্যন্ত থামার নাম নেই। আজ থেকে এক বছর আগে অর্থাৎ ২০২২ এর ২৪শে ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া যুদ্ধের পর গোটা বিশ্ব দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই যুদ্ধের কারণে আমেরিকা (America) সহ ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়াকে রীতিমত বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। সেই যুদ্ধের মোড় ঘুরতে চলেছে। বারংবার দেখা গিয়েছে আমেরিকা প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে ইউক্রেনকে সাহায্য করছে। এবার রাশিয়া হাত মেলাবে দক্ষিণ আফ্রিকা (South Africa) আর চীনের (China) সঙ্গে। প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কি পুতিন যুদ্ধের চাল বদলাচ্ছেন? বিষয়টি একেবারেই ভালো চোখে দেখছে না আমেরিকা।
১৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে ২৭শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে সামরিক মহড়া। যেখানে ভারত মহাসাগরে রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ মহড়া চালাবে দক্ষিণ আফ্রিকা আর চীন। এই মহড়ার উদ্দেশ্যে, এশিয়ার দেশগুলো সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার সম্পর্ক আরও মজবুত করে তোলা। দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের তথ্য অনুযায়ী, তাদের সেনাবাহিনীর প্রায় ৩৫০ জন সদস্য এই মহড়ায় অংশ নিতে চলেছে। এই বিশেষ যৌথ সামরিক মহড়া নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন মসি। আয়োজিত হবে দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্ব উপকূলের ডারবান এবং ভারত মহাসাগরের রিচার্ডস বে এর কাছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা কোন দিকে?
বিশ্বের প্রচুর দেশ প্রকাশ্যে রাশিয়ার বিরোধিতা করে ইউক্রেনকে সমর্থন করেছিল। একটা সময় ছিল যখন পশ্চিমা বহু দেশ রাশিয়াকে প্রায় এক ঘরে করে দিতে চেয়েছিল। গত বছর জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাবও আনা হয়েছিল। যেখানে ইউক্রেন হামলার নিন্দা করা হয়। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সেই প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত থাকে। দেশটি ইউক্রেনের বিষয়ে তার নিরপেক্ষ অবস্থানে ছিল। এই যৌথ সামরিক মহড়ার ঘোষণার আগে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেছেন। তিনি জানান, বিশ্বের সব দেশেই তাদের বন্ধুপ্রতিম দেশগুলি সঙ্গে সামরিক মহড়া করে। অপরদিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ডেভিড ফেল্ডম্যান জানান, ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ও চীনের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকার এই যৌথ সামরিক মহড়া নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। কারণ রাশিয়া এখনো পর্যন্ত ইউক্রেনের বিরুদ্ধে নৃশংস এবং অনৈতিক যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
রাশিয়ার নতুন জলঅস্ত্র
এই যৌথ নৌ মহড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। কারণ এখানে অংশগ্রহণ করবে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ, যা নতুন প্রজন্মের হাইপারসনিক ক্রুজ অস্ত্রে সজ্জিত। রুশ প্রতিরক্ষা এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, নতুন প্রজন্মের এই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র গুলো শব্দের থেকে প্রায় নয় গুণ বেশি দ্রুতগতিতে ছুটতে পারে। এদের রেঞ্জ প্রায় এক হাজার কিলোমিটারেরও বেশি। ভূ-রাজনৈতিক কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মোটামুটি পশ্চিমা প্রায় সব দেশগুলোই দক্ষিণ আফ্রিকাকে পাশে চায়। অপরদিকে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী নালেদি পান্ডর জানান, বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে এই রকম যৌথ সামরিক মহড়া দক্ষিণ আফ্রিকা মাঝে মধ্যেই করে থাকে। এটা একেবারেই নতুন নয়। আবার সমালোচকরা মনে করছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা হয়ত সরাসরি রাশিয়াকে সমর্থন করছে। ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত আফ্রিকার দেশগুলো যত অস্ত্র কিনেছে তার মধ্যে প্রায় ১৮ শতাংশ এসেছে শুধুমাত্র রাশিয়া থেকে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম