।। প্রথম কলকাতা ।।
Japan Special Restaurant: আপনি রেস্টুরেন্টে (Restaurant) গিয়ে মন পছন্দের খাবার অর্ডার করলেন, তারপর দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর দেখলেন যে খাবারটি অর্ডার করেছিলেন সেটি আসেনি। তার পরিবর্তে অন্য খাবার এসেছে। নিশ্চয়ই ওয়েটারের উপর বিরক্ত হবেন কিংবা অর্ডারটি ফিরিয়ে দেবেন। কিন্তু জানেন কি, জাপানে এমন এক রেস্টুরেন্ট রয়েছে যেখানে যাই অর্ডার করুন না কেন তিনি সঠিক খাবার নিয়ে আসবেন না। ওই রেস্টুরেন্টে যারা খেতে যান তারা কিন্তু ভুল করে আসা ওই খাবার বেশ উপভোগ করে খান। উপরন্তু অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন, তাদের জন্য ঠিক কোন খাবার আসতে চলেছে।
জাপানের (Japan) টোকিয়োতে রয়েছে একটু অন্যরকম রেস্টুরেন্ট। যেখানে কর্মরত সব ওয়েটার ডিমেনশিয়া (Dementia) রোগে আক্রান্ত অর্থাৎ তারা প্রত্যেকেই ভুলে যাওয়া রোগে ভুগছেন। এই রেস্টুরেন্টে যারা খাবার খেতে আসেন তারা তাদের অর্ডার করা খাবারটি না পেলেও কোনো অভিযোগ নেই। বরং হাসিমুখে ভুল খাবারটি খেয়ে নেন। রেস্টুরেন্টের নাম ‘দ্য রেস্টুরেন্ট অফ মিসটেইকেন অর্ডারস’। গ্রাহকরা জানেন তাদের খাবারের যারা অর্ডার নিচ্ছেন তারা খাবারের টেবিল থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত পৌঁছানোর আগেই সব গুলিয়ে ফেলবেন কিংবা ভুলে যাবেন।
আসলে যারা ডিমেনশিয়া অর্থাৎ ভুলে যাওয়া রোগে ভোগেন তারা অতীতের ঘটা কোন কথা বা ঘটনা মনে রাখতে পারেন না। খুব দ্রুত তারা ভুলে যান। তাহলে তো ওই রেস্টুরেন্টের খাবার খেয়ে অনায়াসেই টাকা না দিয়ে চলে আসা যায়, সেটা মানবিকতার ব্যাপার। কিন্তু এই রেস্টুরেন্টে সেই কাজ একেবারেই করা যাবে না। কারণ ক্যাশিয়ারে যিনি বসে আছেন তিনি কিন্তু সুস্থ। ওয়েটারদের চোখ ফাঁকি দিলেও তার চোখ ফাঁকি দেওয়া একেবারেই সহজ নয়। এই বিষয়টি নিয়ে অনেকেই হাসি ঠাট্টা করলেও প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছে বিশ্বের বহু মানুষ। কারণ এই রেস্টুরেন্ট রয়েছে বলেই ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত বহু মানুষ চাকরি পেয়েছেন। আসলে তাদের পরিকল্পিতভাবে ওই রেস্টুরেন্টে কাজে নেওয়া হয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সব কাজ সহজে করতে পারেন না। উপরন্তু সমাজের নানা রকম ভাবে কোণঠাসা হয়ে থাকতে হয়। ওই রেস্টুরেন্ট মালিক সমাজের উদ্দেশ্যে দিয়েছেন এক বিশেষ বার্তা। রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্য ডিমেনশিয়া বা ভুলে যাওয়া রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে আর পাঁচটা স্বাভাবিক মানুষের পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করা।
রেস্টুরেন্টের মালিক ওগুনি জানান, তথ্য অনুযায়ী আজ পর্যন্ত প্রায় ৩৭ শতাংশ অর্ডার ভুল ছিল। যদিও এখন পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আগে গ্রাহকরা সমস্যায় পড়তেন কিংবা অভিযোগ জানাতেন, কিন্তু এখন ভুল হলে সবাই বিষয়টি উপভোগ করেন। রেস্টুরেন্টের সমস্ত খাবার অত্যন্ত সুস্বাদু। তার মতে, এই উদার দৃষ্টিভঙ্গি আর সহমর্মিতার মনোভাব সমাজের ক্ষত সারিয়ে আনতে পারে নতুন আশার আলো। ‘দ্য রেস্টুরেন্ট অফ মিসটেইকেন অর্ডারস’ রেস্টুরেন্টে গ্রাহক এবং ওয়েটারদের পারস্পরিক সহযোগিতামূলক মিথস্ক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম