।। প্রথম কলকাতা ।।
একদিকে মোটা আবার বেঁটেও ছোটো থেকেই বন্ধুবান্ধবরা ঠাট্টা করত চেহারা নিয়ে সেই চেহারা দিয়েই ইউরোপা আজ বিশ্ব সেরা। ৩৭ ইঞ্জির চওড়া ছাতি। ১৩০ কেজি ওজন তুলে ফেলা যাঁর কাছে মামুলি ব্যাপার বঙ্গতনয়া বলতে যে ছবি সামনে ভাসে তার সাথে ইউরোপা একদম মেলে না। সাধারণ ঘরের মেয়ে থেকে আজ মহিলা বডি -বিল্ডার। দুর্বল হয়ে বেঁচে থাকতে কখনও চাননি সমাজের সব ঠাট্টার জবাব কীভাবে দিলেন ইউরোপা? আর পাঁচজন মেয়ে যেখানে ওজন তোলার নামেই ভয় পেয়ে যায় সেখানে ইউরোপা ১৩০ কিলো ওজন নিমেষএই তুলে নিতে পারে।
মিষ্টি মুখ, চোখে কাজল, সাথে হালকা মেকআপ খোলা চুল কোমর ছুঁয়েছে। গা ভর্তি সোনার গয়না পরনে বেনারসি শাড়ি সাক্ষাৎ যেন মা দুর্গা কিন্তু কিন্তু আচমকাই আপনার চোখ আটকে যাবে সিক্স প্যাক অ্যাবসে পেটের পেশি বলে দিচ্ছে এই মেয়ে আর পাঁচটা বাঙালি মেয়ের মত নয়। বাবা, জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিলেন৷ সান্টা ইউরোপা নামের এক জাহাজে এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি দেবার সময় স্ত্রী সুপর্ণা টের পান তিনি প্রেগন্যান্ট।বাঙালি ভৌমিক পরিবারের বড় মেয়ের তাই দেওয়া হয় ইউরোপা৷
মোটা, বেঁটে ছিলেন ছোটবেলায়। জিমে গিয়েছিলেন রোগা হতে এক ধাক্কায় কমিয়ে ফেলেছিলেন ১০ কেজি ওজন ধীরে ধীরে বডি বিল্ডিংয়ের দিকে ঝোঁক বাড়তে থাকে। লড়াইটা শুনতে সহজ হলেও আদতে সহজ ছিল না মোটেও। একে তো নারীর শরীরের গড়ন ভেঙে সম্পূর্ণ নতুন ভাবে গড়ে তোলা। অনেক কথা শুনতে হয়েছে ইউরোপাকে। মেয়ে বডি বিল্ডিংয়ে নাম দেবে? প্রথমে যেন ঠিক মেনে নিতে পারেননি বাবা মা কিন্তু মেয়ের ইচ্ছায় বাধা দেননি প্রথমবার অবশ্য পুরস্কার এল না পরের বছর সেই একই প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হলেন তিনি। এবার পরিবারের আপত্তি ভেঙে গেল বরং তাঁর মা সুপর্ণাই উৎসাহ দিতে শুরু করলেন আরও বেশি করে।
২০১৭ সালে এশিয়া বডি বিল্ডিং চ্যাম্পিয়নশিপে দ্বিতীয়। ২০১৮ সালে ন্যাশানাল বডি বিল্ডিং চ্যাম্পিয়নশিপে তৃতীয় হয়েছেন এরপরও আরও শিরোপা এসেছে ইউরোপার ঝুলিতে। মনোহর আইচ বা গুণময় বাগচির নাম তো সকলেরই জানা। কিন্তু সেই তালিকায় একজন মহিলার নাম সত্যিই অবাক লাগে। বাঙালি মেয়েদের যে লক্ষ্মীমন্ত চেহারাতেই চিনতে অভ্যস্ত আমরা। কিন্তু সেই চোখকেই অন্য ছবি দেখালেন ইউরোপা ভৌমিক। মাত্র ৪ ফুট ১০ ইঞ্চির শরীরটা নিয়েই মানুষকে অবাক করে দিয়েছেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম