।। প্রথম কলকাতা ।।
Russia President Vladimir Putin: পুতিনকে আগে কখনও এতোটা বিচলিত দেখা যায়নি। কেন? কী কারণে এতোটা দুর্বল মনে হচ্ছে পুতিনকে? চারিদিকে এটা নিয়েই আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। তাহলে, সত্যিই কি রাশিয়ায় পুতিনের শাসন নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে? বড় প্রশ্ন! রাশিয়ার কাঠামো কতটা দুর্বল সেটাই কী বুঝিয়ে দিল ওয়াগনার বিদ্রোহ? এত বড় অপমানের মুখে পড়ে গেল রাশিয়া, উপায় নেই চুপ করে বসে বসে দেখলেন পুতিন। যা হলো, তাতে রাশিয়ায় নিজের ক্ষমতা, কর্তৃত্ব আর কি টিকিয়ে রাখতে পারবেন পুতিন? রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী, তাদের ভূমিকাটা কী ছিল? তাঁরা কতটা দুর্বল? চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ওয়াগনার বিদ্রোহ। ওয়াগনারের সঙ্গে কী এমন সমঝোতা হল রাশিয়ার, যাতে পুতিনকে এতটা নাজুক মনে হচ্ছে? এবার কী করবেন পুতিন? পুতিনের যে নিষ্ঠুর ভাবমূর্তি দেখে মানুষ অভ্যস্ত তাদের কাছে এখন ঠিক কি মেসেজ পৌঁছাচ্ছে? এটাই মোক্ষম সময়, ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে বড় বিপদ। কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
রাশিয়ার জন্য এটা খুবই ক্রুশিয়াল টাইম। ওয়াগনার গ্রুপের সঙ্গে এরকম একটা অপমানজনক সমঝোতায় আসতে বাধ্য হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট পুতিন এখন কী করবেন, তা নিয়ে নানান বিশ্লেষণ চলছে, লেখালিখি শুরু হয়ে গেছে। ক্রেমলিনকে সামনের দিনগুলোতে খুবই অস্থির একটা পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। সাফ কথা বিশেষজ্ঞদের একাংশের। মুখে মুখে একটাই কথা ফিরছে। এই সমঝোতার পর পুতিনকে আর মোটেই শক্তিশালী বলে মনে হচ্ছে না। অনেকেই বলছেন ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর পুতিনকে এতো বিচলিত কখনো দেখায়নি। সত্যিই তো একদল সশস্ত্র লোক যখন কোনও বাধা ছাড়াই রাশিয়ার ভেতরে শত শত কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে পারে, সেটা পুতিনের দুর্বলতার চিত্রটাকে বেশ ভালোভাবেই উন্মোচিত করে, এটা তো বলাই বাহুল্য। তাছাড়া এই বিদ্রোহ রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর দুর্বলতাও স্পষ্ট করে দিয়েছে। পুতিন যে তাঁর দেশের ভেতরের হুমকি মোকাবেলায় সময়মতো নিজের নিরাপত্তা বাহিনীকেও ব্যবহার করতে অক্ষম ছিলেন, সেটাও এই সংকটে প্রকাশ পেয়েছে।
কেউ কেউ বলছেন এসব বাহিনীর ওপর তার সর্বময় কর্তৃত্ব যেন অনেকখানিই ক্ষয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে পুতিন এখন কি করতে পারেন? পুতিন এখন তাঁর ক্ষমতা জাহির করতে শুদ্ধিকরণ অভিযান চালাতে পারেন, যাদেরকে তার ‘দোদুল্যমান বলে মনে হবে, তাঁদের বিরুদ্ধে শক্ত হাতে ব্যবস্থা নিতে পারেন। এর ফলে তাঁর শাসন এখন আরও বেশি কর্তৃত্ববাদী এবং নিষ্ঠুর হয়ে উঠতে পারে। এমনকি, দেশের ভেতরে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের ওপর আরও কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারেন। আসলে, এই ওয়াগনার বিদ্রোহ প্রেসিডেন্ট পুতিনের যে ভাবমূর্তি স্পষ্টতই ক্ষুণ্ণ করেছে, আর তা ফেরাতে পুতিন যে উদ্যোগী হবেন এটাই তো স্বাভাবিক। নাহলে, গণমাধ্যমে পুতিনের যে ‘নিষ্ঠুর’ ভাবমূর্তি তুলে ধরা হয়, যা মানুষের মনে ভয় তৈরি করে, সেইসব মানুষ এবার একটু অন্য বার্তা পেতে শুরু করবে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের জন্য যা খুব একটা সুখকর হবে না। বরাবর এটা বোঝাতে চেয়েছেন পুতিন, যে তিনি এমন একজন মানুষ, যে রাশিয়ার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। কিন্তু, সত্যিই কি তাই? সবকিছু আসলে তাঁর নিয়ন্ত্রণে নেই, এবারের ঘটনা সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী রাশিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কাসিয়ানভ বলছেন।
পুতিনের জন্য এটা পতনের শুরু মাত্র, পুতিন এখন গভীর সংকটে। কিন্তু এই সব কিছুর শুরু কোথা থেকে? সেই যুদ্ধ। তাহলে কি পুতিনের ইউক্রেন দখলের সিদ্ধান্ত মূলত একটা কৌশলগত ভুল? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ তো বলছেন এই ভুল এখন হোক কিংবা পরে পুতিনকে ক্ষমতা ছাড়া করতে নাকি বাধ্য করবে। কারণ, ওয়াগনার প্রধান প্রিগোশিনের এই ক্ষমতা দখলের চেষ্টা যুদ্ধের হিসেব-নিকেশ পাল্টে দিল। যা, ইউক্রেনের জন্য দারুণভাবে ফিরে আসার সম্ভাবনা তৈরি করল। কিরকম? কেউ কেউ বলছেন, রাশিয়ার এই চরম বিপদসংকুল পরিস্থিতিতে। যদি সম্মুখ যুদ্ধে রুশ সৈনিকদের মনোবল ভেঙে পড়ে, তারা যদি আর যুদ্ধ করতে না চায়, তাহলে অধিকৃত অঞ্চল দ্রুতই পুনরুদ্ধার করতে পারবে ইউক্রেন। ফলে, পুরো বিষয়টাই ঘুরে যেতে পারে ১৮০° অ্যাঙ্গেলে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম