।। প্রথম কলকাতা ।।
Foods For Spring Time.: শীতকাল একেবারে শেষের মুখে। যাবে যাবে করেও পুরোপুরি যেতে পারছে না। এদিকে গরমটাও সেই মতো অনুভূত হচ্ছে না। এই সময়ে না খুব ঠান্ডা আবার না খুব বেশি গরম। অর্থাৎ একটা মনোরম আবহাওয়া বলাই যায়। কিন্তু এই আবহাওয়া বয়ে নিয়ে আসেন নানান ধরনের রোগ। চিকেন পক্স (Chicken Pox) থেকে শুরু করে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো একাধিক বসন্তের চেনা অসুখ এসে হাজির হবে আপনার শরীরে, শুধুমাত্র কিছুটা সতর্কতার অভাবে। বসন্তে যে সকল রোগ গুলি মানুষকে কাবু করে ফেলতে পারে তা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বিরাট কিছুর প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি শরীরে বৃদ্ধি করা যায় তাহলেই সমস্যার সমাধান হবে।
এই সময়ে বাজারে এমন কিছু শাকসবজি (Vegetables) দেখতে পাওয়া যায় যেগুলি বছরের অন্যান্য সময়ে ততটা পাওয়া যায় না। আর পাওয়া গেলেও তেমন টাটকা হয় না। কাজেই মরশুমের শাকসবজি খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন না। এইগুলি সেই মরশুমের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে আপনাকে রক্ষা করতে পারে। আর টাটকা শাকসবজি এমনিতেই মানবদেহে পুষ্টির জোগান দেওয়ার অন্যতম উৎস। তাই সুস্থ থাকতে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সুস্থ রাখতে অবশ্যই ভরসা রাখুন সবজিতে।
* সজনে ডাঁটা: এই সবজিটি বসন্ত আসতেই বাজারে জায়গা করে নেয়। আর বাঙালি তার বাজারের থলেতে অবশ্যই এক গোছা সজনে ডাঁটা (Drumstick) ভরে নিয়ে তবে বাড়ি ফেরেন। চিরসবুজ এই ডাটা মা ঠাকুমাদের কাছে দারুণ প্রিয়। শীত ও গ্রীষ্মের এই মাঝামাঝি সময়ে প্রাদুর্ভাগ ঘটে নানান ধরনের রোগের। তার মধ্যে অন্যতম হল বসন্ত বা পক্স। সজনে ডাঁটা আপনাকে সেই রোগ থেকে দূরে রাখতে পারে। এই ডাটার মধ্যে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা হজমে সহায়তা করে। গ্যাস, বদহজম, পেটে ব্যথা প্রভৃতি নিরাময় করতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ থেকে শুরু করে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ভীষণ উপকারী সজনে ডাঁটা। শুধু ডাটা নয়, সজনে গাছের ফুলও ভীষণভাবে খাওয়া হয়। এই সময়টাতে বড়া থেকে শুরু করে তরকারি সবেতেই সুস্বাদু ফুলের গুণ পাওয়া যায়।
* গাজর: গাজর হল এমন একটি সবজি যা আপনি রান্না না করেও কাঁচা খেয়ে নিতে পারবেন। গাজরের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলি শরীরে ক্যারোটিন এবং অক্সিডেন্টের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। কখনও ডালের সঙ্গে আবার কখনও আলুর সঙ্গে ভেজে এই গাজর (Carrot) খাওয়া যেতে পারে। খেতে বেশ সুস্বাদু গাজর বসন্ত রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে আপনাকে।
* বাঁধাকপি: বাঁধাকপির মধ্যে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের উপস্থিতি রয়েছে। তাই বসন্ত রোগকে যদি শরীর থেকে দূরে রাখতে হয় তাহলে বাঁধাকপি (Cabbage) খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যারা থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য বাঁধাকপি না খাওয়াই ভালো। তাঁরা বরং বসন্ত রোগ প্রতিরোধ করার জন্য অন্য শাকসবজি বেছে নিতে পারেন।
* নিম পাতা: স্বাদে তেতো যে সকল খাবারগুলি সেগুলি সাধারণত অনেকেই এড়িয়ে যেতে পছন্দ করেন। বাড়িতে নিম পাতা (Neem Leaves) ভাজা কিংবা নিমপাতা দিয়ে বেগুনের ঝোল অথবা বেগুন নিম পাতা ভাজা দেখলে অনেকেই চোখে মুখে চিন্তার ভাঁজ পড়ে যায়। কিন্তু এই নিম পাতার মধ্যেই রয়েছে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য। যেগুলি আপনার শরীরকে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করবে। রোগ জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করার জন্য শরীরে যথেষ্ট ইমিউনিটি তৈরি করবে এই সকল উপাদান গুলি। পাশাপাশি একই রকম ভাবে কাজ করবে করলা জাতীয় সবজিগুলি।
* কাঁচা হলুদ: বসন্তকালে যে বসন্ত রোগ বা চিকেন পক্স দেখা যায় তার লক্ষণ গুলি জ্বর, সর্দি -কাশি গা ম্যাজম্যাজে ভাব, গায়ে হাতে পায়ে যন্ত্রণা এবং এই ধরনের কিছু সমস্যা। যাতে চিকেন পক্স বা বসন্ত রোগ আপনাকে কাবু করে ফেলতে না পারে তার জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ (Turmeric) খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। অল্প গুঁড় দিয়ে কাঁচা হলুদ খেলে আপনার লিভার থাকবে তরতাজা। এছাড়াও কাঁচা হলুদের মধ্যে থাকে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। সর্দি-কাশি এবং বসন্তকালে হওয়ার চর্মরোগ থেকে আপনাকে দূরে রাখবে এই উপাদানটি।
* কাঁচা পেঁপে ও আমলকি: পেঁপে কাঁচা হোক কিংবা পাকা হোক সব রূপেই এটা মানুষের শরীরে কোনো না কোনো পুষ্টিগুণ পৌঁছতে থাকে। বসন্ত রোগীদের ক্ষেত্রে কাঁচা পেঁপে (Papaya) খুবই ভালো কাজ করে। এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপাদান শরীরকে ভেতর থেকে সেরে উঠতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও যদি রোগ মুক্ত শরীর স্বপ্ন থাকে তাহলে রোজ সকালে খালি পেটে এক টুকরো আমলকি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। শুধু বসন্ত কালের বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচার জন্য নয়। নানান ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের হাত থেকেও বাঁচাতে পারে টাটকা আমলকি (Amlaki/Emblic) এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে পারে। কারন আমলকি হল ভিটামিন সি-এর একটা উৎকৃষ্ট উৎস।
প্রতিবেদনে উল্লেখিত প্রত্যেকটি সবজি সহ নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। জল শরীরের অপ্রয়োজনীয় বর্জ্য পদার্থ গুলিকে বাইরে বের করে দিতে সাহায্য করে। তেল মশলাযুক্ত খাবার যতটা এড়িয়ে চলা যায় ততটাই শরীরের পক্ষে ভালো। পুষ্টিকর খাবার সারা বছর খেতে পারলে শরীর এমনিতেই থাকবে সুস্থ। কাজেই খুব সহজে কোন সংক্রমণ বাসা বাঁধতে পারবে না শরীরে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম