।। প্রথম কলকাতা ।।
Life on four legs: চার পায়ে হাঁটে বানর কিংবা অন্যান্য পশুরা। কিন্তু জানেন কি, এই আধুনিক প্রযুক্তির আলোতে এসেও এক বিশেষ গ্রাম রয়েছে যেখানে রয়েছে চার পেয়ে মানুষ। শুনতে অবাক লাগল এটাই সত্যি। এই গ্রামের মানুষরা বানরের মতো হাঁটে। হাঁটার জন্য ব্যবহার করেন দুটি হাত এবং দুটি পা। এদের গড় আয়ু স্বাভাবিক মানুষের গড় আয়ু তুলনায় প্রায় ১০ বছর পিছিয়ে। চার পায়ে হাঁটার কারণে হাতের চামড়াও পায়ের মতো পুরু শক্ত। এই আশ্চর্য গ্রাম রয়েছে তুরস্কে (Turkey)। কোটি কোটি বছরের পৃথিবীর জীবজগতের বিবর্তনের ইতিহাসে একটার পর একটা ধাপ পেরিয়ে মানুষ আছে দু পায়ে হাঁটতে শিখেছে। কিন্তু তুরস্কের এই গ্রামের মানুষ এখনো পর্যন্ত সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তারা চার হাত পায়ে বন্য জন্তুদের মতোই হেঁটে বেড়ান।
আসল রহস্যটা কী ?
তুরস্কের বহু বিজ্ঞানী তাদেরকে নিয়ে গবেষণা করেছেন। চলেছে বিস্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা। গবেষণায় দেখা যায়, তুরস্কের দুর্গম পাহাড়ি জায়গায় ইলনেস নামক এক ব্যক্তি তার স্ত্রী সহ ১৮ জন সন্তান নিয়ে রয়েছেন। যাদের ছয় জন বিশেষভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার স্বীকার। তাদের মস্তিষ্ক স্ক্যান করা হয়, সেখানে ধরা পড়ে বড়সড় সমস্যা। তাদের মস্তিষ্কের সমস্যার পাশাপাশি জিনের কিছু সমস্যা রয়েছে। যা তাদের বংশভিত্তিক শারীরিক বিকৃতির কারণ। তুরস্কের গ্রামবাসীরা একই পরিবারের বা একই বংশের মানুষ। তাই শারীরিক ভাবে তারা প্রত্যেকে চার হাত-পায়ে হাঁটাচলা করেন। তাদেরকে বারংবার আধুনিক চিকিৎসা কিংবা ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে সঠিক পদ্ধতিতে হাঁটা শেখানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। যারা অল্প বয়সী তাদের সঠিক প্রশিক্ষণ দিয়ে সোজা ভাবে হাঁটার অভ্যাস করানো হচ্ছে।
দ্রুত হামাগুড়ি দিতে অভ্যস্ত!
সোজা হয়ে হাঁটাকে আধুনিক মানুষের লক্ষণ হিসেবে মনে করা হয়। অথচ তুরস্কের প্রত্যন্ত গ্রামের এই মানুষরা এখনো পর্যন্ত দুই হাত এবং দুই পায়ে হামাগুড়ি দিয়ে চলাচল করেন। তারা অত্যন্ত দ্রুত হামাগুড়ি দিতে পারে। স্বাভাবিক মানুষ যে গতিতে চলাফেরা করে তারাও সেই গতিতেই চলাফেরা করে। এই বিশেষ গ্রাম এখন পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে। এই গ্রামের প্রত্যেকটি মানুষের হাতের চামড়া পুরু, যা দেখে স্পষ্ট বোঝা যায় তারা হাঁটার ক্ষেত্রে হাত ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু হাতে কোন ধরনের সুরক্ষা ব্যবহার করেন না। হামাগুড়ি দিয়ে চলাফেরার কারণে তাদের পিঠ আর কোমরের হাড় গুলো বেঁকে গিয়েছে, প্রশস্ত হয়েছে নিতম্ব। এক চীনা সংবাদ মাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, এই গ্রাম সম্পর্কে জানতে গ্রামের জল থেকে শুরু করে সব ধরনের খাবারের উপর গবেষণা করা হয়েছিল। কিন্তু আলাদা ভাবে বিশেষ কিছু পাওয়া যায়নি। গ্রামবাসীদের বক্তব্য খুব একটা স্পষ্ট নয়। তারা অত্যন্ত ধীরে কথা বলে। বিশ্বের অন্যান্য মানুষ বা দেশের সম্পর্কে তাদের যোগাযোগ খুব কম। গ্রামবাসীরা তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ওই গ্রামের মধ্যেই আবদ্ধ রেখেছেন। যার কারণে বিশেষভাবে সক্ষম শিশুর জন্ম বেশি হয়।
টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলের প্রধান ওয়াশিংটন পোস্টে নিশ্চিত করেছিলেন, এই গ্রামবাসীরা সেরিবেলার অ্যাটাক্সিয়া নামক রোগে আক্রান্ত। তারা এভাবেই চলাফেরায় অভ্যস্ত। এক্ষেত্রে তাদের কোন অস্বস্তি নেই। এই গ্রামে কোন শিশু যদি জন্মায় তাদের বাবা-মা তাকে হামাগুড়ি দিতে শেখায়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম