।। প্রথম কলকাতা ।।
বাংলাদেশীদের হাতে চাঁদ, সৌদির বুকে সুবর্ণ সুযোগ। দেখুন কিভাবে চাকরির বাজার ঢেলে সাজাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশ। ভরিয়ে দেবে অভিবাসীদের, একসঙ্গে এতোগুলো চাকরি, গাড়ি বাড়ি? প্রবাসী আয়ের গতিপথ বদলে দেবে সৌদি আরব? নিয়মে কোন পরিবর্তন আনলো দেশটা? খুশির হাওয়া ওপার বাংলায়, এই একটা কারণেই বাংলাদেশীদের মুখের হাসি চওড়া হচ্ছে। কর্মীদের জন্য ঢালাও সুযোগ সুবিধা। সৌদির জন্য বিরাট বেনিফিটেড বাংলাদেশীদেরা। সৌদি আরবের শিল্প খাতের উন্নয়ন দেশটির চাকরির বাজারকে আরও সম্প্রসারিত করছে। উপসাগরীয় দেশটির সরকার যেসব উন্নয়নমূলক প্রকল্প হাতে নিয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নিওমে ৭৫-মাইলের মেগা-সিটি নির্মাণ সহ দেশজুড়ে ক্রমবর্ধমান শপিংমল, দোকানপাট স্থাপনের প্রবণতা সৌদির চাকরির বাজারকে আরও সম্প্রসারিত করে তুলবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
কারণ এই প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে দেশটির বিভিন্ন শিল্পখাতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। সৌদি আরবের অর্থনীতি দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। আর এবার এলো চাকরিজীবীদের জন্য বিশাল সুযোগ। এবার সৌদিতে একসাথে দুটো চাকরি করতে পারবেন চাকরিজীবীরা। প্রাইভেট সেক্টরে কাজ করা মানুষদের একসাথে দুটো চাকরি করার অনুমতি যা বাংলাদেশীদের জন্য সত্যিই অনেক বড় সুখবর বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। জানিয়ে রাখি, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরব নিজেদের চাকরির বাজার ঢেলে সাজাচ্ছে। এমনকি তারা তাদের চাকরির বাজারকে আরও প্রতিযোগীতামূলক ও আকর্ষণীয় করে তুলতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে। তাই, আগে একাধিক কাজ করার ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা আর থাকছে না। তাছাড়া অভিবাসী কর্মীরা প্রতিবছর নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়াই দেশের বাইরে আসা-যাওয়ার সুযোগ সুবিধা পাবে। অভিবাসী শ্রমিকেরা বিদেশে ভ্রমণের জন্যও নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়া বিদেশে যাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবে।
অর্থাৎ, একসঙ্গে অনেকগুলো বেনিফিট। যা বাংলাদেশীদের জন্য সোনায় সোহাগা। আগেও বলেছি, বিদেশে কাজের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আগে পিছে না ভেবেই মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি দেয়। ১৯৭৬ সালে সৌদি আরব সংযুক্ত আরব আমিরাত কুয়েত ওমান কাতার বাহারাইন ও লিবিয়ায় ৬০৮৭ জনকে পাঠানোর মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রবাসী কর্মসংস্থানের জার্নিটা শুরু হয়েছিল। প্রবাসী আয়ের প্রধান অঞ্চল হিসেবে ধরা হয় মধ্যপ্রাচ্য কে কিন্তু সেই ছবিটা বদলে যেতে বসেছিল। বলা হচ্ছিল বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের গতিপথে যে পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে তাতে শীর্ষস্থানে থাকা সৌদি আরব কে ডিঙিয়ে সেই জায়গা দখল করে নিচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব। চলতি অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা প্রবাসীরা বাংলাদেশে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে শীর্ষস্থানে পৌঁছে গেছে! তুলনামূলক কম প্রবাসীর দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আয় বেড়ে যাওয়া স্বস্তি দিলেও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, যা সৌদি আরব খুব তাড়াতাড়ি মিটিয়ে দিতে পারবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি বলছে, সৌদি আরব মূলত বাংলাদেশি শ্রমিকদের লো-প্রোফাইল চাকরি যেমন নির্মাণ শ্রমিক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, গৃহকর্মী ইত্যাদি কাজে নিয়োগ করে। সৌদি তাদের স্থানীয় লোকদের কর্মসংস্থানের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিলেও বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাহিদাও সেখানে অব্যাহত থাকবে। আর, সৌদি আরবে একসঙ্গে দুটো চাকরির সুযোগের মতো খবর মূলত বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ লুফে নেওয়ার একটি সম্ভাবনা তৈরি করেছে, করছে, করবে। তথ্য বলছে, গত বছর প্রায় ৬ লাখ ১২ হাজার কর্মী উপসাগরীয় দেশটিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন। চলতি বছরের শুরুতেই রেকর্ড ১৫ লাখ কর্মী বিদেশে পাঠানোর টার্গেট ছিলই বাংলাদেশের। পরিমাণটা দিনকে দিন বাড়ছে। বলাই বাহুল্য দেশটায় সরকারের মেগা-প্রজেক্টগুলোতে শুধু স্থানীয় নয়, বরং সারাবিশ্ব থেকেই দক্ষ লোক নিয়োগের প্রয়োজন।
সৌদি সরকারের ভিশন ২০৩০-এর আওতায় এই উন্নয়ন প্রজেক্টগুলো পরিচালিত হচ্ছে; এর মাধ্যমে হাইড্রোকার্বনের ব্যবহার কমিয়ে সৌদি অর্থনীতিকে অন্যান্য কর্মখাতে বৈচিত্র্যময় করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিগত চার বছরে ১০ হাজারেরও বেশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে দেশটিতে। এবার তাদের জন্যই এতো সুযোগ সুবিধার বন্দোবস্ত করলো সৌদি। যাতে ওপার বাংলার মানুষ হাতে চাঁদ পেল। আর এতেই আগামীদিনে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহও বাড়বে বই কমাবে না বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম