।। প্রথম কলকাতা ।।
Rambai Story: বয়স ১০৬, কিন্তু দিব্যি দৌড়াচ্ছেন। মেডেল আনছেন। এক্কেবারে সুস্থ সবল। বয়স টা যে সংখ্যা মাত্র, তা প্রমাণ করে দিয়েছেন ১০৬ বছরের এই মহিলা। এই বয়সেও সোনা জয়ের হ্যাটট্রিক। মাত্র ২ বছরে পেয়েছেন প্রায় ২০০টি মেডেল। দেখিয়েছেন একাধিক কামাল। এই জয় কীভাবে সম্ভব হল? কোন সিক্রেটে তিনি ১০৬ বছর বয়সেও এত ফিট? কি খাবার খান?
হরিয়ানা চরখি দাদরি গ্রামে রামবাইয়ের জন্ম। বিয়ের পর জীবন কাটছিল আর পাঁচটা গৃহবধূর মতোই। বাড়ির কাজের পাশাপাশি করতে হত জমির কাজ। শরীরে খুব একটা রোগ বালাই নেই। কিন্তু মাঠে দৌড়ানোর এই অনুপ্রেরণা তিনি পেলেন কোথা থেকে? তাকে একটা গল্প বলেছিলেন নাতনি শর্মিলা সাওয়ান। ২০১৬ সালে, কানাডার ভ্যাঙ্কুভারের এক প্রতিযোগিতায় ১০০ বছর বয়সে পাঞ্জাবের মান কৌর সোনা জিতেছিলেন। সেই গল্প শুনে রামবাই মনে মনে ঠিক করে নেন, তিনিও দৌড়াবেন। নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। মনে মনে প্রস্তুতিও সেরে ফেলেন। এমনকি কারোর সাহায্য পর্যন্ত নেননি। নিজেই নিজের সমস্ত কাজ করেছেন। দেরাদুনের প্রতিযোগিতায় জেতার পর নাতনি শর্মিলা দিদার পা টিপে দিতে এসেছিল। কিন্তু দিদা স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন, তার পা টিপে দেওয়ার কোন দরকার নেই। দেরাদুনের দৌড় প্রতিযোগিতায় তিনি ৩টে সোনা জিতেছেন। ১০০ মিটার, ২০০ মিটার দৌড় আর শটপাটে রীতিমত সবাইকে টেক্কা দিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
দেরাদুনের জাতীয় অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপে তিনটি সোনার পদক পেতেই তাকে কেন্দ্র করে প্রশংসার বন্যা সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানলে আশ্চর্য হবেন, রামবাই কিন্তু সারা জীবন খেলাধুলার সঙ্গে খুব একটা সংযুক্ত ছিলেন না। মাত্র বছর দুয়েক আগেই তিনি দৌড়ের মাঠে নেমেছেন। এই স্বপ্ন পূরণের জার্নি শুরু করেন ১০৪ বছর বয়সে। ভেবেছিলেন ক্রীড়াবিদ হবেন। তাই নিজের স্বপ্নকে দমিয়ে রাখেননি। বয়সটা আর তার কাছে কোন বাধাই নয়। তার খাবারের তালিকায় রয়েছে ফিটনেসের সিক্রেট। রামাবাই সম্পূর্ণ নিরামিষভোজী। প্রতিদিনের খাবারে থাকে ২৫০ গ্রাম ঘি আর ৫০০ গ্রাম দই। ভাত খুব একটা খান না। তবে দিনে দুবার খাঁটি দুধের সঙ্গে বাজরার রুটি খান। প্রতিযোগিতায় যে নামবেন তা ভেবে নিয়েছিলেন ২০১৬ সাল থেকে। সেখান থেকে ধীরে ধীরে অনুশীলন করে নিজেকে তৈরি করেছেন। দু’বছর আগে নানান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন। শুধু দেশ নয়, বিদেশের মাটিতেও তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন তার কামাল। কয়েক বছর আগে, ৮৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে ১০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় সবথেকে কম সময়ে টার্গেট পূরণ করেন। ১০০ মিটার দৌড়েছেন মাত্র ৪৫.৫০ সেকেন্ডে। ঝুলিতে বিশ্বরেকর্ড আসলেও থেমে থাকেননি।
যে বয়সে হাঁটাচলা করাও দুঃসাধ্য, অনেকেই বিছানায় শুয়ে ঈশ্বরের নাম করেন, সেই বয়সে তিনি প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন। রামবাইকে সুপারদাদি ছাড়া আর কি বলা যায় বলুন তো?
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম