।। প্রথম কলকাতা ।।
Iran and Saudi Ministers Meet in China: প্রায় সাত বছর পর একসঙ্গে বৈঠকে বসল ইরান(Iran) আর সৌদি আরব (Saudi Arabia)। বহু রাষ্ট্রনেতার কাছে এটা যেন একেবারে অবিশ্বাস্য ব্যাপার। তাহলে কি ইরান আর সৌদি আরব নিজেদের মধ্যেকার সমস্ত বৈরিতা ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়েছে? সম্প্রতি বেইজিংয়ে ইরান আর সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি আনুষ্ঠানিক বৈঠকে যোগ দেন, যা প্রায় সাত বছর পর দুই দেশের শীর্ষ কূটনৈতিক বৈঠক। বৈঠকে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানকে একসঙ্গে হাত মেলাতে দেখা গিয়েছে। ছবিতে দেখা যায় পিছনে রয়েছে প্রথাগত চীনা পেন্টিক আর দুই রাষ্ট্রনেতার সামনে রয়েছে দুই দেশের পতাকা। বৈঠকে দুই দেশ ঠিক করেছে, তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করবে। তাই রমজান মাসের মাঝেই তারা বৈঠক করলেন।
ইরান আর সৌদি আরবের মধ্যে তিক্ততার সম্পর্কের কথা বারংবার শোনা যায়। ইরানের সঙ্গে চিড় ধরা সম্পর্ক কিছুটা ঠিক হলেও সব সমস্যা যে মেটেনি, তার ইঙ্গিত দিয়েছেন সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ২০১৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই দেশ তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল। সেই সময় দেখা দিয়েছিল এক উত্তাল পরিস্থিতি। তেহেরানে থাকা সৌদি দূতাবাসে বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দিলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়ে ওঠে।
২০১৬ সালের পর ২০২৩-এ এসে এই প্রথমবার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করল মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ। চীনের মধ্যস্থতায় এক চুক্তির অধীনে দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে উঠছে, এমনটাই মনে করছে বহু বিশেষজ্ঞ মহল। এই বৈঠকে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের দূতাবাস ও কনস্যুলেট পুনরায় চালু করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে থাকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরায় গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। দুই দেশের মধ্যস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে চীন।
দুই দেশ শত্রুতা ভুলে আবার হাত মেলালো, আর তার মধ্যস্থতা করল চীন। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে চীন কি তাহলে বিশ্ব রাজনীতিতে নিজের পাল্লা ভারি করতে চাইছে? এমনি থেকেই গোটা বিশ্ব জুড়ে এখন স্নায়ুযুদ্ধের দামামা বাজছে। কে কোন দলে বোঝা যায়। যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ভাগ হয়ে গিয়েছে গোটা পশ্চিমা বিশ্ব। গত মাসে চীনের দৌলতে দুই দেশ তাদের সম্পর্ক আবার আগের মতো করতে সম্মতি জানায়। সম্প্রতি হওয়া বৈঠকে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ইঙ্গিত মিলল। এর মাধ্যমে হয়ত চীন কূটনৈতিক আর অর্থনৈতিক দিক থেকে মধ্যপ্রাচ্যকে হাতে রাখতে চাইছে। যা আমেরিকার কর্তৃত্বের প্রতি একটা বড়সড় চ্যালেঞ্জ। চীনের সঙ্গে এই দুই দেশের সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ, তবে সাম্প্রতিক সময় সৌদি আরবের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। গত চার দশকে আমেরিকার সাথে ইরানের সম্পর্কেও চিড় ধরেছে। আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে আরো শক্তিধর হতে চাইছে চীন। বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, আবার দুই দেশের মধ্যে হওয়া বৈঠক চীনের জন্য একপ্রকার কূটনৈতিক বিজয়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম