।। প্রথম কলকাতা ।।
ইমারজেন্সি অ্যালার্ট! এবার কী পুরো নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে আইসল্যান্ড? মাটি ঠেলে উঠছে ফুটন্ত লাভার স্রোত? ২৪ ঘন্টায় ১৪০০ বার, ব্যাক টু ব্যাক ভূমিকম্প। গ্রামের পর গ্রাম খালি হয়ে যাচ্ছে? প্রাণ বাঁচাতে অসহায় মানুষগুলো ছোটাছুটি করছে?এভাবেই কি পৃথিবীর অতলে হারিয়ে যাবে আইসল্যান্ড? সামনের দুটো দিন খুব ভাইটাল। কোন ভয়ংকর ইঙ্গিত দিচ্ছে আগুন আর বরফের দেশ? আইসল্যান্ড ম্যাপ থেকে পুরো গায়েব হয়ে যাবে? তুরস্কের চেয়েও ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে? জোরালো ভূমিকম্প, টানা কাঁপছে আইসল্যান্ড টেনশন বাড়ছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, গত ১৪ ঘণ্টায় দেশের নির্দিষ্ট অংশে অন্তত ৮০০ বার ভূমিকম্প হয়েছে। ২৪ ঘন্টায় কেঁপেছে ১৪০০ বার। ৩৪ ঘন্টায় ২২০০ বার। যার মধ্যে বেশ কয়েক বার অনুভূত হয়েছে জোরালো কম্পন। রিখটার স্কেলে সবচেয়ে তীব্র কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.২।এরপরেও আইসল্যান্ডের আর কিছু অবশিষ্ট আছে?
মানুষগুলো ভয়ে সিঁটিয়ে আছে। বার বার ভূমিকম্প হওয়ায় আইসল্যান্ডে জরুরি অবস্থা জারি করেছে সরকার। ভূবিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। যে কোনও মুহূর্তে জেগে উঠবে আগ্নেয়গিরি। শহর-গ্রামকে পুড়িয়ে ছারখার করে দেবে গলিত গরম লাভা। প্রকৃতির রোষে তবে কি বিশ্ব মানচিত্র থেকে মুছে যাবে গোটা একটা দেশ? এই প্রশ্নই বারংবার ভাবাচ্ছে। উত্তর ইউরোপের ছবির মতো সাজানো দেশ আইসল্যান্ড। অক্টোবর মাসের শেষ দিক থেকেই ঘন ঘন ভূমিকম্পে কাঁপতে শুরু করেছে দেশটা। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে রেকজেন্স মালভূমিতে অক্টোবর থেকে এখনো পর্যন্ত অন্তত ২৪ হাজার বার কম্পন অনুভূত হয়েছে। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব। শুক্রবার থেকে কম্পনের মাত্রা আরও বেড়েছে। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে মুহুর্মুহু কম্পন। পর পর ভূমিকম্পে বাড়িঘর কেঁপে ওঠে। দরজা, জানলায় প্রবল ঝাঁকুনি ক্যামেরাবন্দীও করেছেন অনেকে। ওই এলাকতে শীঘ্রই কোনও আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঘন ঘন ভূমিকম্প কী তাহলে সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে?
পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি জরুরী অবস্থা জারি করেছে আইসল্যান্ড প্রশাসন। আইসল্যান্ড সরকারের তরফে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যে ভাবে পরপর ভূমিকম্প হয়েছে, তাতে নাগরিক জীবনে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। প্রবল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মাটি ফুঁড়ে জন্ম নিতে পারে নতুন আগ্নেয়গিরি। জরুরি অবস্থা জারি করে দেশের মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে। যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তাঁদের তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, নাগরিকদের নিরাপদ জায়গায় সরানোর কাজ শুরু করেছে আইসল্যান্ড সরকার। কারণ, রেকজেন্স মালভূমিতে গ্রিনডাভিক গ্রাম রয়েছে, যে গ্রামটা ভূমিকম্পের উৎসস্থল থেকে যার দূরত্ব মাত্র তিন কিলোমিটার। ওই গ্রামেই চার হাজার মানুষের বাস।আইসল্যান্ডের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রেকজেন্স মালভূমির গভীরে ভূমি থেকে পাঁচ কিলোমিটার নীচে ম্যাগমা জমে রয়েছে।
তা যদি উপরের দিকে উঠতে শুরু করে, তা হলে অগ্নুৎপাত হবেই। তবে আবহবিদেরা বলছেন, কোনও আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্নুৎপাত হলেও তাতে আরও কিছু দিন সময় লাগবে। সেই সময়টাই এখন আইসল্যান্ডের জন্য ভীষণ দামী। তার মধ্যে এই গ্রামটা খালি করার তোড়জোড় চালাচ্ছে আইসল্যান্ড প্রশাসন। রেকজেন্স উপদ্বীপের গ্রিন্ডাভিক গ্রামের জন্য আগামী দু তিনটে দিন খুব ভাইটাল। তার মধ্যেই অগ্নুৎপাতের চান্স বাড়ছে।আর গ্র্যানভিল?আইসল্যান্ডের ওই এলাকায় তো পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। তাহলে কি পর্যটকরাও সেফ নয়? সেখানে রয়েছে একাধিক বিলাশবহুল হোটেল। আপাতত সেগুলোকে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। পর্যটকদের অন্যত্র সরাতে পাঠানো হয়েছে কপ্টার। পাশাপাশি আশ্রয় কেন্দ্রগুলিকে প্রস্তুত রাখছে প্রশাসন।
বিজ্ঞানীদের একাংশের দাবি, কোনও একটা ফাটল পেলেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসবে ম্যাগমা। যা এগোতে থাকবে দক্ষিণ-পূর্ব ও পশ্চিম দিকে। ফলে গ্র্যানভিলের রক্ষা পাওয়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে।কিন্তু, প্রকৃতির রোষানলে পড়ে যদি এভাবেই বারংবার তছনছ হতে থাকে আইসল্যান্ড তাহলে দেশটার সর্বনাশ রোখে কার সাধ্য?
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম