।। প্রথম কলকাতা ।।
ভারতকে অয়েলিং বাটারিং করা এইতো সবে শুরু। ভারতের ডিএনএ-তে গণতন্ত্র আছে, প্রশংসায় একেবারে পঞ্চমুখ যুক্তরাষ্ট্র। জানেন মোদি বাইডের বৈঠকে ঠিক কি কি নিয়ে আলোচনা হয়েছে? কোন কোন চুক্তিতে আবদ্ধ হলো দুই দেশ? চীনকে ঠুকে ভারতকে কাছে পাওয়ার স্ট্র্যাটেজি। নয়া দিল্লির ব্যালান্সিং পাওয়ার দেখালেন নরেন্দ্র মোদিও। এই না হলে ভারত? এবার আরও শক্তিশালী, বৈচিত্র্যময় মার্কিন-ভারত সম্পর্ক। বাংলাদেশ জায়গা পেল কি? নরেন্দ্র মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফরে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা, মহাকাশ গবেষণা, সেমিকন্ডাক্টর এবং খনিজ সম্পদ নিয়ে একাধিক চুক্তি ও সমঝোতা হয়েছে।
বড় কথা বলেছেন বাইডেন। যখন বাংলাদেশের গণতন্ত্র কে বারবার প্রশ্নচিহ্নের মুখে ফেলছে যুক্তরাষ্ট্র তখন, ভারতের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। “আমেরিকা এবং ভারতের ‘ডিএনএ’র’ মধ্যে গণতন্ত্র রয়েছে” বলেছেন বাইডেন। চীনকে ঠুকে ভারতকে কাছে টানার স্ট্র্যাটেজি নিয়ে বাইডেনের সাফ কথা ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রর সম্পর্ক যে জায়গায় অবস্থান করছে, চীনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বিষয়টা কিন্তু সে রকম নয়। এর মৌলিক কারণ, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারষ্পরিক শ্রদ্ধা হচ্ছে দুই দেশই গণতান্ত্রিক। তাহলে কি কোথাও একটা গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে কোন বার্তা দিতে চাইলো। বড় কথা নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাষ্ট্রীয় সফর। রাষ্ট্রীয় ডিনারের অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, “দুটো মহান জাতি, দুটো মহান বন্ধু এবং দুটো বড় শক্তি” জবাবে নরেন্দ্র মোদী বাইডেনের প্রশংসা করেছেন বৈকি। বলেছেন, “আপনি মৃদুভাষী, কিন্তু সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে আপনি বেশ দৃঢ়”।
এককথায় দুটো দেশের মধ্যে মিউচুয়াল উন্ডারস্ট্যান্ডিং আরো বেশি দৃঢ় হয়েছে, গভীর হয়েছে। সম্পর্ক আরো পোক্ত ও মজবুত হয়েছে। সবথেকে বড় কথা যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রথমবারের মতো সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। মোদী তাঁর নয় বছরের শাসনামলে কখনোই এ ধরণের সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেননি। যেখানে যৌথ বিবৃতিতে মানবাধিকার, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা এবং আইনের শাসন-ভিত্তিক নীতির মধ্য দিয়ে আরও শক্তিশালী, বৈচিত্র্যময় মার্কিন-ভারত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষার কথা উঠে এসেছে। জাতিসংঘের রীতিনীতি, আন্তর্জাতিক আইন ও সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে বর্তমান যে বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে সেটাকে সম্মান জানানোর প্রতি জোর দিয়েছে দুই পক্ষই। পাকিস্তানকে কাছে ঘেষতে না দেওয়ার প্ল্যান করে ফেলেছে ভারত। মিয়ানমার ও উত্তর কোরিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকে জঙ্গি হামলার ক্ষেত্র হিসেবে যেন ব্যবহার না করা হয় সে বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে।
আল-কায়েদা, আইসিস, লস্কর-এ-তাইয়েবার মতো জাতিসংঘের তালিকাভুক্ত জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। এছাড়া আফগানিস্তানকে শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং স্থিতিশীল করার ব্যাপারে সমর্থন জানিয়েছেন জো বাইডেন ও নরেন্দ্র মোদী। আর যুদ্ধ? যে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে ভারত শান্তির পক্ষে দাঁড়িয়েছে, সেই যুদ্ধ নিয়ে কি কথা হলো? ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে যুদ্ধের কারণে বিশ্ব যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছে তা থেকে উত্তরণের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। অবশ্যই, বিভিন্ন ধরণের সামরিক ও প্রযুক্তি-ভিত্তিক সম্পর্ক বাড়ানোর পাশাপাশি সামরিক জোট কোয়াডকে আরও কার্যকরী করে গড়ে তোলার ব্যাপারে একমত হয়েছে দুই দেশ। প্রতিরক্ষা বিষয়ক দুই দেশের অংশীদারিত্বকে আরো শক্তিশালী করার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবারের বৈঠকে। সামরিক পর্যায়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা পরমাণু বিদ্যা সংযোজনের পাশাপাশি ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে আমেরিকার সহযোগিতার বিষয়টিও উঠে এসেছে।
বলতেই হচ্ছে, মোদীর এই যুক্তরাষ্ট্র সফর অতীতের সব সফরগুলোর চেয়ে ভিন্ন, আলাদা। কেন? কারণ, এটা ভারতীয় অংশীদারদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে আরও গভীর, প্রসারিত ও শক্তিশালী করার সফর। কিন্তু, কেন ভারতকে হাতে রাখতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র? বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং উন্মুক্ত, সমৃদ্ধ, নিরাপদ, স্থিতিশীল ও অভিঘাত সহনশীল বিশ্ব ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য ভারতের অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায় আমেরিকা। বলেই তো দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখ্য উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম