।। প্রথম কলকাতা ।।
হটাৎ অন্ধকার হয়ে গেলো, আর আপনি ভয়ে চিৎকার করে উঠলেন। মনে হচ্ছে যেন কেও জোড় করে নাক মুখ বন্ধ করে দিয়েছে, শ্বাস নিতে পারছেনা না। বা কোথায় যেন তলিয়ে যাচ্ছেন। এমন অনুভূতি হয়েছে আপনার?? আচ্ছা এটি কোন ফবিয়া জানেন? কাদের হয়? কেনই বা হয় এমনটা? এই ভয়ঙ্কর ফবিয়া কাটিয়ে উঠতে চাইছেন?
আলো না থাকলে ভয় করে অনেকের। রাতেও আলো জ্বালিয়ে ঘুমোন কেউ কেউ। কিন্তু এত ভয় কেন অন্ধকারে? মানুষ অনেক কিছুতেই ভয় পায়। তার মধ্যে কিছু বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করে তাড়ানো সম্ভব হয়। কিছু ভয় মনের মধ্যে থেকেই যায়। কোনও বুদ্ধি-বিবেচনা কাজে লাগে না। তেমনই একটি হল অন্ধকারের ভয়। নিজের ঘরে বসেও অনেকে এই ভয় থেকে মুক্ত থাকতে পারেন না। অন্ধকারে আতঙ্কিত হয়ে পড়ার এই সমস্যার একটি বৈজ্ঞানীক নাম রয়েছে, নিক্টোফোবিয়া। অনেকে বলে থাকেন অন্ধকারে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক বিষয়। কারণ আলো না থাকলে কিছু দেখা যায় না। কিন্তু কারও কারও এই ভয় থাকে অতিরিক্ত মাত্রায়। অন্ধকার হওয়া মাত্রই অস্থির হয়ে ওঠে মন। এক মুহূর্তও একা থাকতে পারেন না অন্ধকারে। তাঁদের এই অস্বস্তিকে নিক্টোফোবিয়া হিসাবে ব্যাখ্যা করে থাকেন চিকিৎসকরা। রোজের জীবনে অনেক অসুবিধায় পড়তে হয় এর কারণে।
অন্ধকারে কেন ভয় হয়?
এ নিয়ে নানা জায়গায় গবেষণা হয়েছে। একটি কথা প্রায় সব জায়গার গবেষকরাই মানেন। তা হল, এই নিক্টোফোবিয়ার পিছনে রয়েছে মানুষের সাংস্কৃতিক ইতিহাস। প্রাচীন যুগে যখন শহর বা গ্রামে থাকার ব্যবস্থা হয়নি, এর উৎস সে সময়ে। জঙ্গল বা গুহায় বসবাসকারীরা রাতে জন্তুর ভয় পেত। কখন বাঘ-ভাল্লুক এসে আক্রমণ করবে রাতের অন্ধকারে, তা নিয়ে আতঙ্ক থাকত। সেই উদ্বেগ জিনের সঙ্গে মিশে গিয়েছে। কারও বেশি সমস্যা হয়, কারও বা কম। কিন্তু মোটের উপর বেশির ভাগ মানুষই অস্বস্তি বোধ করে অন্ধকারের মধ্যে। অন্ধকারে বেশি অস্বস্তি হলে বলা হয় সেই মানুষটি নিক্টোফোবিয়ায় আক্রান্ত। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে, আমেরিকায় প্রায় ১১ শতাংশ মানুষ নিক্টোফোবিয়ায় ভোগে।
যে কোনও ফোবিয়ার মতো নিক্টোফোবিয়ায় উপসর্গ ব্যক্তি বিশেষে বদলে বদলে যায়। তবে অন্ধকারে অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লে সতর্ক হওয়া জরুরি। হাতের তালু ঘেমে যাওয়া, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, কাঁপুনিও নিক্টোফোবিয়ার উপসর্গ। অনেকের আবার অন্ধকার ঘরে ঢুকলে মাথা ঘোরার মতো সমস্যাও দেখা দেয় নিক্টোফোবিয়া থাকলে।
কিভাবে বেরিয়ে আসবেন এই ফোবিয়া থেকে?
এই রোগেরও চিকিৎসা হয়। এর জন্য কাউনসিলিং করাতে পারেন। বেশ কিছু থেরাপি রয়েছে সেগুলি অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে করুন। এছাড়াও আপনাকে নিজেকে পজিটিভ মাইন্ড তৈরি করতে হবে। যার জন্য ইয়োগা করুন, মেডিটেশন করুন। আর সব থেকে ভালো উপায় হল, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা। মানে অন্ধকারেই অন্ধকারের ভয় দূর করতে হবে। ভয় পাওয়া সত্বেও অন্ধকার রুমেই বেশী সময় থাকুন। চোখে যখন অন্ধকার সয়ে যাবে, তখন এই ভীতি পালাবে। তবে হাতের কাছে কোনো আলো রাখবেন, একান্তই যদি না থাকতে পারেন তখন আলোটি জ্বালিয়ে দেবেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম