।। প্রথম কলকাতা ।।
বড় অভিশাপ! যুদ্ধে জিতলেও ইজরায়েলের পতন হবেই। কার্স অব এইট ডিকেড কোনও ইহুদি রাষ্ট্র ৮০ বছরের বেশি টেকেনা। এত বড় অভিশাপ ইজরায়েল খন্ডাবে কীভাবে? আমেরিকাও এযাত্রায় বাঁচাতে পারবে না তেল আভিভকে। ইজরায়েল এত গর্জন তর্জন একদিন মিটে যাবে, গাজাকে গিলে নিলেও ইজরায়েলের পতন নিশ্চিত। ইজরায়েলর বয়স এখন ৭৭। সত্যি কি তাহলে মিলে যাবে ভবিষ্যবাণী? যুদ্ধবিরতি পর যুদ্ধের গতি যে আরও বাড়াবে ইজরায়েল তা এপ্রকার নিশ্চিত। গাজা যুদ্ধের যেন এটা শেষের শুরু। বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু এত সহজে শেষ করবেন না এই খেলা। বিশেষজ্ঞদের একাংশ তো বলেই দিচ্ছেন আপসের সব সম্ভাবনা নষ্ট করে দিয়ে তারা এবার পুরো ফিলিস্তিন দখলের পরিকল্পনা করেই নিয়েছে। ইসরায়েলিরা এখন এতটাই বেপরোয়া যে স্বাধীন সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সঙ্গে পশ্চিম তীরকে যুক্ত করার যে প্রতিশ্রুতি তারা অতীতে দিয়ে আসছিল সেই প্রতিশ্রুতিটুকুও এখন আর দিচ্ছে না। নিঃসন্দেহে ইজরায়েল অনেক বেশি শক্তিশালী তাহলে এত পতন হবে কীভাবে? কে হারাবে ইজরায়েলকে? কার্স অব এইট ডিকেডের কথা শুনেছেন?
এ এক প্রাচীন অভিশাপ যা ইজরায়েলের মাথায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। গোটা গাজাকে গিলে ফেলার জন্য মরিয়া হয়ে
ইসরায়েল যা করছে তাতে ‘অষ্টম দশকের অভিশাপ’ শব্দগুচ্ছটি উঠে আসছে বারবার। ইংরেজিতে এই টার্মটিকে বলে ‘কার্স অব এইট্থ ডেকেড’। আরবিতে বলে ‘লা’নাতুল আকদিস সামিন’। ‘অষ্টম দশকের অভিশাপ’ টার্মটির জন্ম হয়েছিল ইহুদিদের অতিগুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ন্যায়শাস্ত্র তালমুদ-এর একটি ভবিষ্যদ্বাণী থেকে। এইখানে বলে রাখা ভালো তালমুদ কিন্তু ইহুদি সম্প্রদায়ের ধর্মগ্রন্থ তাওরাত নয়। আর এখানেই বলে দেওয়া হয়েছে ইজরায়েলের পতনের কথা মিলে যাবে অক্ষরে অক্ষরে। এই তালমুদের একটি ভবিষ্যদ্বাণী হলো কোনো ইহুদি রাষ্ট্র আট দশকের বেশি টিকবে না, ভেঙে যাবে। আর সে ভাঙন বাইরের কোনো শক্তির কারণে হবে না হবে নিজেদের মধ্যকার জাতি-উপজাতির কোন্দল থেকে কিন্তু এত বছর আগেকার এই ভবিষ্যতবাণীর সঙ্গে বাস্তবের মিল আদৌ আছে নাকি?
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় গত দুই হাজার বছরে বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় সার্বভৌম ইহুদি রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর মধ্যে কিং ডেভিডের ইসলামে যিনি নবী দাউদ রাজত্বয আর হাসমোনিয়ান রাজত্ব ছাড়া আজ পর্যন্ত কোনো ‘ইহুদি রাজ্য’ ৮০ বছরের বেশি টেকেনি। কিং ডেভিডের রাজত্ব ও হাসমোনিয়ান রাজত্ব ৮০ বছরে বেশি টিকে থাকলেও এই দুই রাজত্বের ভাঙন ধরেছিল ৮০ বছরের মাথায়। এরপর সে দুটো রাজত্ব টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল। ্ইজরায়েলের ওপর কি নামবে কোনও ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন ১৯৯০ দশকের শুরুর দিকে অল্প কিছু সময়ের জন্য এমনও মনে হয়েছিল যে ইসরায়েল হয়তো তাদের ঔপনিবেশিক স্বভাব বদলে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তনের একটা ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছিল তখন। তবে প্রতিবারই তাদের ঔপনিবেশিক চেহারা বেরিয়ে পড়ে দখলদারির অবসান ঘটিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের হাজারো সুযোগ তারা নষ্ট করেছে এবারও করছে।
প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনের বলা হচ্ছে শুধুমাত্র ধর্ম কিংবা ভবিষ্যদ্বাণীতে বিশ্বাসী সাধারণ মানুষের মধ্যে যদি এই ভবিষ্যতবাণী সীমাবদ্ধ থাকত তাহলে হয়তো এ নিয়ে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে কোনো চর্চা হতো না কিন্তু বাস্তবতা হলো এই ‘অষ্টম দশকের অভিশাপ’ কথাটি এমন সব নেতাদের মুখ থেকে উচ্চারিত হয়েছে যার প্রবল রাজনৈতিক প্রভাব আছে। যেহেতু ইসরায়েলের ইহুদি সম্প্রদায়ের লোক তাদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাতে বিশ্বাসী ও তালমুদের আদেশ-নিষেধ সংক্রান্ত প্রত্যাদেশের অনুসারী সেহেতু ইসরায়েলের বাসিন্দাদের একটি বিরাট অংশ ‘অষ্টম দশকের অভিশাপ’ নিয়ে নিজেদের মধ্যে সিরিয়াস আলাপ আলোচনা করে থাকেন। অনেক ইহুদি ইসরায়েলের ওপর কোনো দুর্যোগ নেমে আসলে কীভাবে সেখান থেকে সরে যাবেন তা নিয়ে আলাপ আলোচনা করছেন। তারা এই ন্যাচারাল ফেনোমেনন বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ অমোঘ নিয়মে নেমে আসতে পারে বলে বিশ্বাস করেন। তাহলে এই পতন কি সময়ের অপেক্ষা? প্রশ্নটা ঘোরাফেরা করছে ইজরায়েলের মধ্যেই।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম