।। প্রথম কলকাতা ।।
Ukraine-Russia Conflict: এর আগেও প্রমাণ হয়েছে, রাশিয়াকে বারংবার নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইউরোপ নিজের পায়ে নিজেই কুড়ুল মারছে। পশ্চিমা দেশগুলো বিদেশ নীতির গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছেন নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু তার ফলে গত এক বছরে রাশিয়ার খুব একটা ক্ষতি হয়নি। ২০২৩ এর ২৪শে ফেব্রুয়ারি আসলে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ (Ukraine -Russia Conflict) এক বছর পূর্ণ হবে। দশকের পর দশক রাশিয়ার সস্তা জ্বালানিতে উরোপের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অপরদিকে অর্থনৈতিকভাবে মজবুত হয়েছে রাশিয়া। এর আগেও দেখা গিয়েছিল, ইউরোপ রাশিয়ার গ্যাস থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়াতে গ্যাসের দাম প্রচুর বেড়ে যায়। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি দেশে মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে। এর মাঝে নতুন করে আবার ইউরোপে তেল রপ্তানি বন্ধ করতে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইইউ। নেপথ্যে অন্যতম কারণ হিসেবে রয়েছে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন। নতুন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে ডিজেল কিংবা পরিশোধিত তেল রাশিয়া আর রপ্তানি করতে পারবে না। এর আগেও পশ্চিমা দেশ রাশিয়ার থেকে গ্যাস, কয়লা আমদানির ক্ষেত্রে একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এত নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কিন্তু রাশিয়া প্রতিদিন মিলিয়ন মিলিয়ন ব্যারেল ডিজেল তেল রপ্তানি করছে। রাশিয়ার উপর চাপ বাড়িয়ে আদৌ কোনো লাভ হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে অন্যান্য দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে। এই সংকট রাশিয়ার পাশাপাশি গোটা বিশ্বকে গ্রাস করবে। প্রভাব পড়তে পারে বিশ্ব অর্থনীতিতে।
অপরদিকে রাশিয়া ভারতে প্রচুর পরিমাণে অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করছে, তাও রীতিমত মোটা ছাড়ে। রাশিয়া থেকে ভারতে অপরিশোধিত তেলের পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। রাশিয়া থেকে ভারতে অপরিশোধিত তেলের আমদানি মধ্যপ্রাচ্যের ঐতিহ্যবাহী সরবরাহকারী দেশগুলি চেয়ে বেশি হয়েছে। যুদ্ধের আগে ভারতে অপরিশোধিত তেল আমদানিতে রাশিয়ার অংশ ছিল প্রায় এক শতাংশের কম, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিদিন প্রায় ১.২৭ মিলিয়ন ব্যারলে বা ২৮ শতাংশে। আমেরিকা ও চীনের পর ভারত বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম তেল ক্রেতা। যুদ্ধের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদেশগুলির নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া অপরিশোধিত তেল বিক্রিতে সমস্যায় পড়েছিল। যার কারণে রাশিয়া অপরিশোধিত তেল বিক্রির ক্ষেত্রে ক্রেতাদের বিপুল পরিমাণে ছাড় দিচ্ছে। বর্তমানে ভারত তার শক্তির চাহিদা মেটাতে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল ক্রয় চালিয়ে যাবে। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের পর রাশিয়ার বেশিরভাগ অপরিশোধিত তেল রপ্তানি হচ্ছে ভারত, চীনের মতো এশিয়ার দেশগুলোতে।
অপরদিকে অভিযোগ উঠছে, রাশিয়ার তেল নাকি ঘুরপথে পৌঁছে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বহু দেশে। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার জ্বালানি তেল বাণিজ্য বন্ধে নিষেধাজ্ঞার বোঝা চাপিয়ে দিলেও ভারত এবং চীন বাজার মূল্যের থেকে অনেক কম দামে মস্কোর থেকে তেল পাচ্ছে। ডেটা ইন্টেলিজেন্স ফার্ম কেপ্লারের তথ্য অনুযায়ী, ভারত গত মাসের নিউইয়র্কে পেট্রোল এবং ডিজেল পাঠিয়েছে, যার পরিমাণ দৈনিক প্রায় ৮৯ হাজার ব্যারেল। এক্ষেত্রে ভারত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। মূলত বাজারে তেল সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কিংবা জ্বালানি খাতে রাশিয়ার রাজস্ব আয় কমাতে উঠে পড়ে লেগেছে বহু দেশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে ভারতে রাশিয়া থেকে ডিজেল কিংবা তেল রপ্তানির পরিমাণ আরো বাড়বে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম