।। প্রথম কলকাতা ।।
Padma Bridge: পদ্মা সেতু বাংলাদেশের স্বপ্নের উড়ান। মজবুত করেছে দেশটার পায়ের তলার মাটি। সমৃদ্ধ হচ্ছে অর্থনীতি। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের গর্ব। দেখতে দেখতে প্রায় এক বছর কেটে গেল। স্বপ্ন বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে। সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ভেবে নিশ্চিন্ত একুশ জেলার মানুষ। শত শত যুবককে আর বেকারত্বের জ্বালা সহ্য করতে হচ্ছে না। একটা সেতু বদলে দিয়েছে দেশটার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বহু জনপদ। মাদারিপুর, শরীয়তপুর, জাজিরা, ফরিদপুরের অজ পাড়াগাঁয়ে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে নতুন নতুন বাণিজ্যিক ভবন। পদ্মা সেতু থেকে দেশটার অর্জন চমকে দেওয়ার মতো।
আজ থেকে ঠিক এক বছর আগের কথা। তখন রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনের একমাত্র বাধা ছিল নদী। কম ঝঞ্ঝাট পোহাতে হত না। অসুস্থ ব্যক্তিকে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হতো নদীর ঘাটে। ক্লান্তি আর একরাশ বিরক্ত নিয়ে বাড়ি ফিরত মানুষ। দেখতে দেখতে পদ্মা সেতুর চালু হওয়ার পর প্রায় এক বছর কেটে গিয়েছে। ২০২২ এর ২৫শে জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর, ২৬ শে জুন জনসাধারণ জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। যার মাধ্যমে সাবলীল হয়েছে গ্রামের মানুষের সঙ্গে শহুরে মানুষের যোগাযোগ। খুব সহজেই মানুষ রাজধানী ঢাকায় থেকে নিজের গ্রামের বাড়িতে ফিরে যেতে পারছে। আগের মতো আর ফেরিঘাটে অসহনীয় ভোগান্তি নেই। কাজ শেষ হলে ফেরি ধরার তাড়াও নেই। চাইলেই একটা গাড়িতে চেপে সহজে নদী পারাপার করা যায়। একটা সময় বাড়ির জন্য মন টানলেও শহর থেকে গ্রামের বাড়িতে আসা যেত না। সেই আক্ষেপ মানুষের মিটেছে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষগুলোকে নতুন প্রাণ দিয়েছে এই সেতু।
৬. ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের নভেম্বরে। তখন থেকেই মানুষের মনে একগুচ্ছ স্বপ্ন জড়ো হতে থাকে। যার বাস্তবায়ন হচ্ছে এখন। আগের থেকে যোগাযোগ এতটাই সহজ আর দ্রুততর হয়েছে যে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আয় অনেকটা বেড়েছে। আগের সেই দরিদ্র নাওডোবাকে চিনতেই পারবেন না। যেন ঝাঁ চকচকে শহর। গত এক বছরে ম্যাজিকের মতো বেড়ে গিয়েছে জায়গার দাম। বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মানুষও এই সেতু তৈরি হওয়ায় বেশ উপকৃত। পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্যের নানান কাজে বাংলাদেশে যান। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর ঢাকা আর কলকাতার মধ্যে দূরত্ব কমেছে প্রায় দেড়শ কিলোমিটার। যেখানে আগে যেতে হত প্রায় চারশো কিলোমিটার। বিশ্ব যোগাযোগের ক্ষেত্রেও ঠিক একই ভাবে পদ্মা সেতুর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সেতু নিয়ে বাংলাদেশের স্বপ্ন আকাশচুম্বী। আশা রয়েছে, পদ্মা সেতু একদিন ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের অংশ হবে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশের পদ্মা সেতু পেরিয়ে ভারত পাকিস্তান ঘুরে ইউরোপ যাবে ট্রেন। এই স্বপ্ন হয়তো সত্যি হতে আর বেশি দেরি নেই।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম