।।প্রথম কলকাতা।।
Narayan puja: হিন্দু শাস্ত্র মতে সত্যনারায়ণ হলেন হিন্দু দেবতা বিষ্ণু নারায়ণের একটি বিশেষ মূর্তি। নারায়ণের পাঁচালী ও ব্রতকথায় উল্লিখিত কাহিনী অনুযায়ী সত্যনারায়ণ পীরের ছদ্মবেশ ধারণ করে নিজের পুজো প্রচলন করেছিলেন। হিন্দুদের বিশ্বাস সত্যনারায়ণের আশীর্বাদ থাকলে সব বাধা বিঘ্ন দূর হয়ে যায়। তিথি নক্ষত্র দেখে এই পুজোর নিয়ম আচার পালন করা হয়।
নারায়ণ শব্দের অর্থ যিনি জলের উপর শয়ন করেন। হিন্দু শাস্ত্রমতে জল প্রথম সৃষ্ট বস্তু তাই সৃষ্টিকর্তা নারায়ণ জলেই বাস করেন। ভাগবত পুরাণে নারায়ণ কে বলা হয় সর্বোচ্চ উপায়। কথায় বলে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর। হিন্দু ধর্মে ৩৩কোটি দেবতার অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন অনেকেই। প্রত্যেক দেবতার ভিন্ন ভূমিকা রয়েছে। যেমন শক্তির জন্য মা কালীর আরাধনা করা হয়, আবার ধন-সম্পত্তি দেবতা হিসেবে পূজিত হন মা লক্ষ্মী। আবার ঠিক তেমনই বাড়ির কোনো শুভ কাজের আগে কিংবা গৃহপ্রবেশের সময় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সাধারণত নারায়ণ পূজো করে থাকেন। সত্য নারায়ণের আশীর্বাদ থাকলে বাধা-বিঘ্ন দূরে থাকে বলে বিশ্বাস মানুষের।
সত্যনারায়ণ পুজোর সঙ্গে বাঙালি ভাবে জড়িত। বাড়িতে প্রবেশের আগে সত্য নারায়ণ পুজো যে কোনো শুভ কাজে নারায়ণ দেবতার আশীর্বাদ প্রয়োজন হয়। সত্যনারায়ণ পূজোয় তেমন বাহুল্য নেই বললেই চলে তাই এই পুজোর আয়োজন খুব সহজ। যে যার সাধ্য মত আয়োজন করে থাকে এই পুজোর জন্য। যে কোনো পূর্ণিমার তিথিতে এই পুজো করা হয়। অনেকে বাড়ির পরিবেশ রুদ্ধ রাখতে প্রতিটা বড় পূর্ণিমাতে এই পুজো করে থাকে। নারায়ণ পুজোর জন্য প্রথমে নারায়ণ শিলা স্থাপন করতে হয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঠাকুর মশাই সঙ্গে করে আনেন। সেদিন সারাদিন নারায়ণ শিলা থাকে। পরের দিন ঠাকুর মশাই সুতো কেটে সেটি নিয়ে চলে যান।
নারায়ণ পুজো করতে গেলে প্রথমে পুজোর স্থান পরিষ্কার করতে হবে। তারপর ঘট পাতবেন আলপনা দেবেন। সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজাতে হবে। ঘটে আম পাতা, শিষ ডাব দেবেন। ঘটে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকতে হবে এবং সিদুরের ফোটা দিতে হবে। নৈবেদ্য সাজিয়ে দেবেন। একটি ঢালায় তিনটি জায়গায় একটু করে চাল তার সঙ্গে কলা বাতাসা অন্যান্য ফল, তার উপর সিকি মানের কয়েন পঞ্চ শস্য সাজিয়ে দিতে হবে। সিন্নির জন্য গামলায় ময়দা, গুড় ,দুধ ,খোয়া নারকেল কোরা, কাজু সন্দেশ ঠাকুরের সামনে রাখবেন। নারায়ণের ছবির দুপাশে দুটো পান পাতা রাখতে হবে, ওর উপর একটা সুপুরি একটা কয়েন একটা কলা রাখতে হবে। পুজোর পর হবে অঞ্জলি অঞ্জলি শেষ হয়ে গেলে হোম যজ্ঞ করতে পারেন।
তবে এই পুজোয় রয়েছে বিশেষ কিছু নিয়ম, এই পুজোর জন্য যে রেকাবিতে নৈবেদ্য রাখা হয়, তা প্রথমে তেঁতুল দিয়ে পরিষ্কার করে রাখলে ভালো হয়। সকালে উপবাস করে তবে এই পূজোর নৈবেদ্য সাজাবার অনুমতি মেলে। পুজোর সরঞ্জাম ঠিক করার সময় নীল কাপড় পড়াবেন না তাতে অমঙ্গল হতে পারে। সত্য নারায়নের পাশাপাশি লক্ষ্মী ঠাকুরের জন্য নৈবেদ্য সাজান। পুজোর আয়োজন করা অনেক সহজ। তবে অবশ্যই শুদ্ধ ,শান্ত মনে পুজোর আয়োজন করতে হবে। আয়োজন সামান্য হলেও দেবতা নারায়ণের আশীর্বাদ প্রবেশ করবে আপনার ঘরে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম