।। প্রথম কলকাতা ।।
Jade Stone treatment: নানা ধরণের ক্রিম মেখেও মুখের বলিরেখা দূর করতে পারছেন না? পার্লারে মাসাজ করিয়েও মুখ, চোখের নিচের ফোলাভাব কমাতে পারছেন না? ময়েশ্চারাইজার, নামী দামি প্রোডাক্ট ব্যবহার করেও মুখের সেই তারুণ্য ফিরিয়ে আনতে পারছেন না? তাহলে আপনার জন্য বিশেষ কাজের হয়ে উঠতে পারে জেড স্টোন ট্রিটমেন্ট।এই ট্রিটমেন্ট ঠিক কি ? কিভাবে তা কাজ করে? আজকাল সৌন্দর্যপ্রেমী মানুষের মাঝে বেশ জনপ্রিয় একটি রূপচর্চা অনুষঙ্গ হলো এই জেড জেড স্টোন ট্রিটমেন্ট। এক্ষেত্রে হাতের স্পর্শ ছাড়াই রোলার দিয়ে মুখের ত্বকের ট্রিটমেন্ট করা হয়।
এখন এই ট্রিটমেন্ট বিশেষ জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও প্রাচীন এশীয় এবং চৈনিক সৌন্দর্যচর্চায় এর ব্যবহার হয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকেই। জেড বা কোয়ার্টজ পাথর দিয়ে তৈরি হয় জেড স্টোন ও জেড স্টোন রোলার। এই পাথর ফ্যাকাশে সবুজ থেকে ফিরোজা রঙের হতে পারে। এই পাথর মূলত আমাদের ত্বকের রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে ত্বকের চাপ কমায়।এই ট্রিটমেন্ট তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে ত্বককে প্রশান্ত করে। এতে ত্বক দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়। এই ট্রিটমেন্ট কিভাবে কাজ করে?
প্রাচীন চৈনিক বিশ্বাস অনুযায়ী জেড স্টোন রোলার কোনো সাধারণ পাথর নয়। এর রয়েছে নিরাময়ের ক্ষমতা। অর্থাৎ এটি আমাদের ত্বকের ক্লান্তি দূর করতে খুবই কার্যকরী। জেড স্টোন এমনিতে একটি ঠান্ডা পাথর।বরফ ঘষলে যেমন ত্বক প্রশান্ত হয়, ক্লান্তি দূর হয়, জেড স্টোন ঠিক এই কাজটিই করে। সারা দিনের পরিশ্রম, দূষণসহ নানা কারণে আমাদের ত্বক ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাতে ত্বকের মধ্যকার রক্তসঞ্চালন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়।ফলে ত্বক ঔজ্জ্বল্য হারায়। জেড স্টোন ট্রিটমেন্ট বিভিন্নভাবে আমাদের ত্বককে স্বাভাবিক ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। দুশ্চিন্তা, ঘুম ঠিকমতো না হওয়া, ক্লান্তি, দূষণ, রোদ ইত্যাদির কারণে আমাদের ত্বকের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে ত্বকের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
জেড স্টোন ট্রিটমেন্ট করলে রক্তসঞ্চালন ঠিক হয় অতিরিক্ত তাপমাত্রাও বের হয়ে যায়। ত্বকের ওপর চাপ কমে। ত্বকের নিচে থাকা রক্তনালিগুলো বাধাগ্রস্ত হলে রক্তসঞ্চালন ঠিকমতো হতে পারে না। ফলে আমাদের মুখমণ্ডল ও চোখ বিশেষ করে চোখের নিচের অংশ ফুলে থাকে। জেড স্টোন ট্রিটমেন্ট এই বাধাগ্রস্ত নালিগুলোকে স্বাভাবিক প্রবাহে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। এতে ফোলাভাব কমে এবং ত্বকে সতেজতা ফিরে আসে। এই ট্রিটমেন্ট তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকলে ত্বকে সহজে বলিরেখা পড়তে পারে না। জেড স্টোন ম্যাসাজ ত্বকের টানটান ভাব বজায় রেখে ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখে দীর্ঘদিন। অনেকেই ত্বকে সিরাম, ফেসিয়াল অয়েল, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন। জেড স্টোন রোলারের সাহায্যে ম্যাসাজ করলে এই সব স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট খুব ভালোভাবে ত্বকের সব জায়গায় ভালোভাবে মিশে যায় এবং তাদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।
জেড স্টোন ট্রিটমেন্ট কতখানি কাজ করবে সেটা অনেকাংশে নির্ভর করছে আপনারা কীভাবে ব্যবহার করছেন তার ওপর। এই পাথর এমনিতেও বেশ ঠান্ডা, তবে আরও ভালো কুলিং এফেক্ট পেতে অনেকেই ফ্রিজে রেখে এটি ব্যবহার করেন। সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চারবার ৫-৭ মিনিট ধরে ম্যাসাজ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এটি ব্যবহারের কিছু নিয়ম আছে যা না মানলে হিতে বিপরীত হতে পারে। যেমন, রোলার কখনোই ওপর থেকে নিচের দিকে নয় বরং নিচ থেকে ওপরের দিকে টানবেন। তা না হলে উল্টো চামড়া ঝুলে যেতে পারে। শুকনা ত্বকে এই রোলার ব্যবহার করা যাবে না।ম্যাসাজের আগে অবশ্যই তেল, ময়েশ্চারাইজার বা সিরাম মাখিয়ে নিতে হবে।
প্রতিবার ব্যবহারের পর অবশ্যই একে ভালোমতো উষ্ণ জল ও সাবান দিয়ে ধুয়ে রাখতে হবে, যাতে কোনো জীবাণু না ছড়ায়। আপনি অনলাইনে জেড স্টোন রোলার আনিয়ে এই ট্রিটমেন্ট করতে পারেন। মনে রাখবেন, বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় বাজারজুড়ে বিশেষ করে অনলাইনে নকল ও নিম্নমানের জেড স্টোন রোলারের ছড়াছড়ি। তাই দাম একটু বেশি হলেও দেখেশুনে আসল পণ্যটি কেনাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। আরেকটি বিষয় জেনে রাখা ভালো, জেড স্টোন রোলার একটি সৌন্দর্যচর্চা সামগ্রী মাত্র, চিকিৎসা উপকরণ নয়। তাই যদি কোনো কারণে ত্বক অস্বাভাবিক রকম ফুলে যায় বা দীর্ঘদিন ফোলাভাব থাকে, তাহলে জেড স্টোন রোলারের ওপর ভরসা না করে ডাক্তার দেখানো উচিত।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম