।। প্রথম কলকাতা ।।
Gallbladder Stone: গ্যাসের সমস্যা কে পাত্তা দিচ্ছেন না! পেটে কিংবা পিঠের দিকে ব্যথা হচ্ছে! গলব্লাডারে স্টোন নয় তো? কোনো লক্ষণ ছাড়াই গলব্লাডারে স্টোন হতে পারে। অপারেশনে বাদ দেওয়া হয় গলব্লাডার। কি কি সমস্যা হয়? অপারেশনের খরচই বা কত? মুক্তির উপায় কি? একটু জানুন, জানা দরকার। এখন ঘরে ঘরে পরিচিত গলব্লাডার স্টোন। আপনার বাড়িতেই যদি এই রোগের পেশেন্ট থাকে তাহলে এই প্রতিবেদন আপনার অনেক কাজে লাগবে।
গলব্লাডারে পাথর বলতে সোজা কথায় পিত্তথলিতে পাথর। পিত্তথলি পিত্তনালীর সঙ্গে যুক্ত থাকে। গলব্লাডার স্টোন হলে অঙ্গটি কেটে বাদ দেওয়া হয়। অনেকে মনে করেন, গলব্লাডার বাদ দিলে হজমের গন্ডগোল হতে পারে। কিন্তু এমনটা নয়। ভয়ের বিষয় হল, কিছু কিছু গলব্লাডার স্টোনের ক্ষেত্রে কোনো সিম্পটম দেখা দেয় না। এক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি কোন সিম্পটম দেখা দেয় তাহলে কিন্তু মুশকিল। পাথর একটা হতে পারে, ছোট্ট হতে পারে বা অনেকগুলো হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক্ষেত্রে গলব্লাডার স্টোন বাদ দেওয়াই উচিত। পিত্তথলিতে প্রথমে বালির মতো কণা জমে, পরে ধীরে ধীরে স্টোনের আকার নেয়। এখান থেকেই তৈরি হয় নানান সমস্যা, যাকে বলা হয় গলব্লাডার স্টোন। পেশেন্টের শরীর দুরকম ভাবে জানান দেয়। প্রথমত ব্যথা বা যন্ত্রণা হবে এমনটা নয়। অনেক সময় স্টোনগুলো পিত্তনালীর মুখ বন্ধ করে দেয়। দ্বিতীয়ত, ইনফেকশন সহ প্রচন্ড ব্যথা, জল জমে পুঁচ হতে পারে। কখনো স্টোন পিত্তনালীতে ফুটো করে পিত্তথলিতে প্রবেশ করে। অনেক সময় কোলনের সাথে ফিসচুলা হতে পারে কিংবা প্যানক্রিয়াটাইটিস হতে পারে। পেটের তীব্র যন্ত্রণা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে গোটা পিঠে। বিদেশে প্যানক্রিয়াটাইটিসের জন্য প্রথম কারণ হিসেবে অ্যালকোহলকে দায়ী করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এই রোগের জন্য প্রথম কারণ গলব্লাডার স্টোন এবং দ্বিতীয় কারণ অ্যালকোহল। যদি বহুদিন গলব্লাডার স্টোন ফেলে রাখেন সেক্ষেত্রে ক্যানসারও হতে পারে। যদিও এই স্টোন থেকে ক্যানসার হচ্ছে কিনা তা এখনো প্রমাণিত নয়, বিষয়টি বিতর্কিত। গলব্লাডার স্টোন অনেকভাবে হয়, প্রথমত রক্ত ভেঙে গিয়ে, দ্বিতীয়ত মিক্সড স্টোন, তৃতীয়ত খুবই কমন, কোলেস্টেরল স্টোন। বেশিরভাগ মানুষ এই শেষ ভাগের সমস্যাতেই ভোগেন। বলা হয় একটু শরীরচর্চা, প্রয়োজনীয় ঘুম, বাইরের খাবার এড়িয়ে চললে এই সমস্যা থেকে এড়িয়ে চলা যায়, কিন্তু কোন গ্যারান্টি নেই । তবে প্রতিদিনের ছোট্ট ছোট্ট ভালো অভ্যাসগুলো লিপিড প্রোফাইলে কোলেস্টেরল জমতে না। অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের কারণে গলব্লাডারে স্টোন হতে পারে। এক্ষেত্রে ১০০% এ মাত্র ৫ থেকে ১০ জনের পেট কেটে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের মাত্র ছয় ঘন্টার মধ্যে লিকুইড খাবার দেওয়া হয। পরের দিন রোগীকে ছুটিও দেওয়া হয়। যদিও সবার ক্ষেত্রে এক নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপারেশন জটিলও হতে পারে। এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করবে শুধু গলব্লাডারে স্টোন নাকি তার সাথে আরও অনেক কিছু অপারেশন রয়েছে, তার উপর। গলব্লাডার স্টোন হলে এক্কেবারে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। দক্ষ সিনিয়র সার্জনের কাছ থেকে অপারেশন করলে ভবিষ্যতে কোন সমস্যাই হবে না। এই অপারেশনের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন প্যাকেজ। ২৫ হাজার থেকে এক-দেড় লাখ টাকারও প্যাকেজে রয়েছে। আসলে এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনি কোথা থেকে করাচ্ছেন, সেখানে কোন কোন সুবিধা রয়েছে এবং সেই চিকিৎসকের চার্জ কত। এই পাথর বেশিরভাগ জায়গাতেই বের করা হয় ল্যাপ্রোস্কোপির মাধ্যমে।
যদি দেখেন তলপেটে বা উপরের দিকে ব্যাথা হচ্ছে, শরীরে অস্বস্তিকর অনুভব করছেন এমনকি এই ব্যথা পিঠের দিকেও ছড়িয়ে গিয়েছে তাহলে একটু সাবধান। গলব্লাডার স্টোন একদমই ফেলে রাখা উচিত নয়। গলব্লাডারে পাথর হওয়া এখন প্রতিটি বাড়ির গল্প। যদি কোন কারণে রক্তের কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি হয় তখন পিত্তরসের ক্ষরণে বাধা দেখা দেয়। সেই পিত্তরস জমতে থাকে পিত্তথলিতে। সেখান থেকেই তৈরি হয় ছোট ছোট পাথর। এই পিত্তথলিতে পাথর জমার অনেক কারণ রয়েছে। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস তো জানলেনই, এছাড়াও যারা দীর্ঘদিন হরমোন জাতীয় ওষুধ খাচ্ছেন বা অতিরিক্ত ওজন, কোলেস্টেরল বেড়ে গিয়েছে, দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকছেন তারা একটু সাবধান। এর ফলে থলিতে পাথর জমতে পারে। আবার অনেকেই রোগা হওয়ার চক্করে সঠিক ডায়েট করতেই ভুলে যান। ঘনঘন উপোস করেন। নিয়ম মত খাওয়া-দাওয়া করেন না। এসব করা মানেই গলব্লাডার স্টোনকে নিজের শরীরে আমন্ত্রণ জানানো। যখনই দেখবেন সামান্য তেল মশলা খাবার খেলেই বমি, অ্যাসিডিটি, গ্যাস অম্বলের মত সমস্যা দেখা দিচ্ছে, পেটে ব্যথা, পিঠে ব্যথা, গলা জ্বালার মত সমস্যা লেগেই রয়েছে, আর দেরি করবে না সোজা চিকিৎসকের কাছে যান। দেরি হয়ে গেলে গলব্লাডার থেকে স্টোন বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে। তখন বিপদ আরও বাড়বে। আপনার যদি ইতিমধ্যেই গলস্টোন অপারেশন হয়ে থাকেন তাহলে চেষ্টা করবেন ফাইবার সমৃদ্ধ শাকসবজি একটু বেশি করে খাবার অপারেশনের পর ভুলেও জাঙ্ক ফুড খাবেন না। এছাড়াও কম ফ্যাট যুক্ত খাবার যেমন শাক-সবজি, ডাল, গোটা শস্য এবং ফল বেশি করে খাবেন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম