।। প্রথম কলকাতা ।।
মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত সিকিম। তার দোসর হয়েছে হড়পা বান। তার জেরে বিপর্যয়ের ছবি চারপাশে। নিখোঁজ হয়েছেন সেখানে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকরা। স্বজন হারাচ্ছে পরিবারগুলি। বাড়ি ঘর খাঁ খাঁ করছে। চারদিকে হারাকার। ফুলে ফেঁপে উঠেছে তিস্তা। ভেঙে গিয়েছে বহু রাস্তা। আচ্ছা, মেঘ ভাঙা বৃষ্টি কিভাবে হয়? হড়পা বানই বা কি?
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত দেখা যাচ্ছে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি। আবহাওয়া বিজ্ঞনীদের কাছে যা ক্লাউড বার্স্ট রেন হিসেবে পরিচিত। খুব কম সময়ের মধ্যে ছোট্ট পরিসরে বিপুল পরিমাণ বৃষ্টিপাত হলে তাকে বলা হয় মেঘ ভাঙা বৃষ্টি।মূলত পাহাড়ি এলাকায় এই বৃষ্টিপাত বেশি পরিমাণ দেখা যায়। মেঘ ভাঙা বৃষ্টি অনেক সময়ই বিপর্যয় ডেকে আনে।ক্লাউড বার্স্ট রেনের সঙ্গী হয় বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি। এছাড়া কখনও কখনও মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে হড়পা বানের মতো পরিস্থিতিও তৈরি হয়। যা আশপাশের এলাকাকে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে। হঠাৎ করে আসা বন্যাকেই হড়পা বান বলা হয়।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের দাবি, মেঘ ভেঙে পড়ার সময় ঘণ্টায় একশো মিলিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টি হতে পারে। বর্ষাকালে বা তার শেষ দিকে পাহাড়ি জায়গায় জলীয় বাষ্পে ভরা বাতাস বেশি চলাচল করে। এই বাতাসের সাহায্যে অনেক সময়ই পাহাড়ের ঢাল বেয়ে তৈরি হয় উল্লম্ব মেঘপুঞ্জ। এই মেঘপুঞ্জ পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উপরের দিকে উঠতে শুরু করে। একটা সময় নিজেকে ধরে না রাখতে পেরে ফেটে যায় ওই মেঘ। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ক্ষেত্রে মেঘের মধ্যে জলকণার সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। ফলে জলকণাগুলি একত্রিত হয়ে বৃহৎ আকৃতি ধারণ করে। মেঘ ভেঙে গেলে বড় বড় ফোঁটার আকারে নীচে নেমে আসে সেগুলি। সাধারণ বৃষ্টির সঙ্গে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হল মেঘ ভাঙা বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়।
হড়পা বান কী, এবং কেন তা সাধারণ বন্যা থেকে আলাদা? দিনে নানা পর্যায়ে বা বছরের নির্দিষ্ট ঋতুতে অতিরিক্ত বা অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে জল জমে যেতে পারে। তা থেকেও হতে পারে বন্যা। হড়পা বানের পরিস্থিতি বলতে বোঝায়, যেটা খুব কম সময়ের মধ্যে হয়।বৃষ্টিপাতের ফলে ৬ ঘণ্টারও কম সময়ে বন্যার সৃষ্টি হলে তাকে হড়পা বান বলে। তবে, বৃষ্টিপাত ছাড়াও অন্যান্য কারণে হড়পা বান হতে পারে। যেমন, জল বাঁধের বাইরে যদি চলে যায় বা জলাধার ভেঙে গেলে এই বান হয়।ভারতে, হড়পা বানের বিষয়টি প্রায়ই মেঘে বিস্ফোরণের জন্য হয়ে থাকে। অর্থাৎ, অল্প সময়ের মধ্যে হঠাৎ এবং তীব্র বৃষ্টিপাত হড়পা বান তৈরি করে।
হিমালয় সংলগ্ন রাজ্যগুলোতে আবার হিমবাহের গলনের ফলেও তৈরি হওয়া হিমবাহের হ্রদের জল উপচে পড়ে বন্যা হয়। গত কয়েক বছরে এই সংখ্যা বাড়ছে। এর আগে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হয়েছে কেদারনাথে। হরপা বানে ক্ষতি হয়েছে কুলু মানালির। এবার সেই মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও হরফা বান দেখলো সিকিম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইদানিং বারে বারে ঘটছে এই রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয়। এরজন্য অনেকাংশে দায়ী আমরাই। বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে ঘটছে এমনটা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম