।। প্রথম কলকাতা ।।
Depression: মন খারাপ বা কারন-অকারণে মেজাজ বিগড়ে থাকা, মানসিক স্থিতি ঠিক না থাকারই লক্ষণ। প্রতিটি মানুষের শরীরের সঙ্গে মনের এবং মস্তিষ্কের একটি গভীর যোগসূত্র রয়েছে। শরীর কম বেশি নারীর পুরুষ সকলেরই খারাপ হয়ে থাকে। রোগও দেখা দেয় বিভিন্ন ধরনের। কিন্তু মানসিক অবসাদের (Depression) শিকার হন বেশিরভাগ মহিলারা। এক্ষেত্রে পুরুষদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। এমনটাই বলছে বেশ কিছু গবেষণা। প্রতিদিনের দৌড়ঝাঁপ, কাজের চাপ, ব্যক্তিগত জীবনের ওঠাপড়া সবকিছু সামাল দিতে গিয়ে শরীরে ক্লান্তি চলে আসা একেবারেই স্বাভাবিক।
কিন্তু সেই ক্লান্তি যখন আপনার মনকে কাবু করে তখনই তৈরি হয় সমস্যা। যেকোনো ছোটখাট বিষয়ে মন খারাপ হতে দেখা যায়। একা থাকতে ভালো লাগে। পছন্দের মানুষ কিংবা কাছের মানুষদের সাথেও অতিরিক্ত কথা বলতে ইচ্ছা করে না। চারিদিক থেকে অন্ধকার ঘিরে আসছে এমনটাই অনুভব করেন অবসাদগ্রস্থ মানুষেরা। কিন্তু মহিলাদের মধ্যে মানসিক অবসাদ বেশি হওয়ার কারণ কী ? কোন কোন বিষয়গুলি নিয়ে সচেতন থাকা দরকার ? আজকের প্রতিবেদনে রইল সেই তথ্য।
১. ঋতুবন্ধের প্রভাবে : মহিলাদের একটি নির্দিষ্ট বয়সের পরে ঋতুস্রাব (Menstruation) বন্ধ হয়ে যায়। এটি একেবারেই স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু ঋতুবন্ধের কারণে মহিলাদের শরীরে একাধিক ভালো হরমোন ক্ষরণ হওয়াও বন্ধ হয়। শুধুমাত্র এই কারণে প্রায় কুড়ি শতাংশ মহিলা মানসিক অবসাদের মধ্যে তলিয়ে যান। স্ত্রীদেহে এর পর ইস্ট্রোজেন, সেরোটোনিনের মত উপকারী হরমোন গুলি ক্ষরিত হয় না। যার কারণে শরীরে ক্লান্তি ভাব আসে এবং শরীর ভালো না থাকলে মন ভালো রাখা সম্ভব হয় না। যদিও চিকিৎসকরা ঠিক এই সময়ে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির পরামর্শ দেন। এতে মূলত মনের যত্ন নেওয়া হয়।
২. পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া : মানসিক অবসাদের একটা বড় কারণ হল পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম (Sleep) না হওয়া। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে । সেখানে জানানো হয়েছে, বিশ্বের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মহিলা বর্তমান সময়ে অনিদ্রার শিকার। তাদের বাড়ির কাজ অফিসের কাজ পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব এবং সংসারের সমস্ত দায়িত্ব সামলিয়ে নিজের যত্ন নেওয়ার মতো সময় তাঁরা বের করতে পারেন না। শরীরের সঠিক যত্ন না নেওয়ার কারণে এই অনিদ্রা ( Insomnia) দেখা দেয়। সারাদিন ব্যস্ততার পরে ক্লান্তিতে ঘুম এসে যাওয়া একেবারেই স্বাভাবিক কিন্তু তারপর মাঝ রাতের দিকে ঘুম ভেঙে যাওয়া কিংবা ভোর রাতের দিকে ঘুম না হওয়ার মতো ঘটনা প্রায়ই ঘটে বহু মহিলার সাথে। প্রতিদিন একটা মানুষের সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়। তাতে খামতি হলেই একাধিক সমস্যা যেমন দেখা দিতে পারে পাশাপাশি ঘিরে ধরতে পারে মানসিক অবসাদও।
৩. ওজন কমানোর ব্যর্থ চেষ্টা : বহু মহিলা যারা মোটা (Fat) হয়ে গিয়েছেন তাঁরা রোগা হওয়ার প্রাণপণে চেষ্টা করছেন। কিন্তু ফল কিছুই হচ্ছে না । শারীরিক পরিশ্রম করার পরেও ওজন ঝরছে না যা তাদেরকে মানসিকভাবে ভেঙে দিচ্ছে। এর কারণে মানসিক অবসাদ জন্ম নিচ্ছে বহু মহিলার মধ্যেই। হঠাৎ হঠাৎ মন খারাপ হয়ে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া এই ধরনের লক্ষণ গুলি দেখা দিচ্ছে।
৪. উইন্টার ব্লুজ বা শীতকালীন অবসাদ : ঋতু পরিবর্তনের পাশাপাশি পরিবর্তন আসে মানুষের শরীর এবং মনে। শীতকাল এমন একটি ঋতু যেই সময়ে বহু মানুষ মানসিক অবসাদে চলে যান। পুরুষদের ক্ষেত্রে শীতকালীন অবসাদের পরিমাণ কম হলেও মহিলাদের ক্ষেত্রে এটা অনেকটাই বেশি হয়। আর যারা গৃহবধূ তাদের ক্ষেত্রে এই উইন্টার ডিপ্রেশন (Winter Depression) ভীষণভাবে লক্ষ্য করা যায়। ডাক্তারি পরিভাষায় শীতকালে সূর্যালোকের অভাবে এই ধরনের সমস্যা গুলি দেখতে পাওয়া যায় । তাই এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই শরীরে ভিটামিন ডি পৌছে দেওয়ার চেষ্টা করুন। বর্তমান সময়ে ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ছয় জন মহিলা শীতকালীন অবসাদে ভুগছেন, এমনটাই বলছে সমীক্ষা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম