।। প্রথম কলকাতা ।।
অন্য কোনও আঙ্গুল নয়! ভাইকে কড়ে আঙুল দিয়েই কেন দেওয়া হয় ফোঁটা? ভাইফোঁটার থালায় চন্দন, কাজল, দই রাখেন কিন্তু সিঁদুর রাখা কেন জরুরি জানেন? পুজোর থালাতে আর কী কী রাখবেন? ভাইফোঁটা দেবেন দাদা-ভাইকে দুপুরে জমিয়ে মটন বা চিকেন অজান্তেই ভাইয়ের বিপদ ডেকে আনছেন! বাড়িতে নয়! মৃত্যুর দেবতার সামনে ফোঁটা দিন কলকাতাতেই বাস করেন স্বয়ং যমরাজ। এই মন্দিরে গেলে বিপদ ধারে কাছে আসবে না। যেখানে এখনও হয় ভাইফোঁটায় বিশেষ পুজোর আয়োজন। পুজোর প্রসাদ বা হাত দিয়ে নিলে ছোটবেলায় বকা দিতেন বড়রা। তবে ভাই ফোঁটার মত এমন পবিত্র একটি কাজ কেন বা হাতের কড়ে আঙুল দিয়ে দিতে হয়?
আমাদের হাতের পাঁচটি আঙুল পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের প্রতীক। কড়ে আঙুল হল ব্যোম। শাস্ত্র মতে ব্যোম বা কড়ে আঙুল মহাশূন্যের প্রতীক। অন্য দিকে ভাইবোনের ভালোবাসা আকাশের মতো উদার, অসীম এ কারণে বাঁ হাতের কড়ে আঙুল দিয়েই কপালে তিনবার ও দুই কানের লতিতে দুটো টিকা দেওয়া হয়। শেষে কণ্ঠনালিতে ফোঁটা দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিতে ভাইয়ের মঙ্গল ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন বোনেরা। তবে বলা হয় এদিন ভুলেও মাংস খাবেন না তাহলে নাকি ভাইয়ের অমঙ্গল হয়। যমের কুনজর থেকে ভাইকে রক্ষা করার জন্যই এই আচার-অনুষ্ঠান। কেন এই তিনটি জিনিস দিয়ে ফোঁটা দেওয়া হয়, তা জানেন কি?
যে কোনও শুভকাজে চন্দ্ন, কাজল ও দই অত্যন্ত শুভ। কপালে চন্দনের ফোঁটা দেওয়া হলে মাথা থাকে ঠান্ডা ও শান্ত। হিন্দু ধর্মে কাজল হল অত্যন্ত শুভ ছোট থেকেই পায়ে, কপালের পাশে কাজলের
ফোঁটা দেওয়ার রীতি রয়েছে এখনও কিন্তু জেনে রাখুন ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় সিঁদুর রাখতেই হয় বোনেদের। একটি তামা অথবা মাটির ঘট নিতে হবে
তাতে সিঁদুরের পাঁচটি ফোঁটা দিতে হবে। চন্দন, কাজল ছাড়াও রয়েছে দইয়ের ফোঁটা। হিন্দু ধর্মে দইকে অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয়। এজন্য যে কোনও শুভ কাজে দইয়ের ব্য়বহার করতেই হবে
থালায় রাখতে হবেফুল, সুপারি, পান, রুপো, মুদ্রা
শুকনো নারকেল। কলকাতাতেই বাস করছেন স্বয়ং যমরাজ। ভাইফোঁটার দিন পুজো দিলে পূণ্য অর্জন করবেন।
বাগবাজারে এখন যেখানে গিরিশ ঘোষের বাড়িটি রয়েছে তার কয়েক ফুট দূরেই যমের একটি মন্দির আছে। কালো মোষের পিঠে যমদেবতা হাতে রুপোর দণ্ড। হিন্দুদের কাছে তিনি মৃত্যুর দেবতা
তাঁকে ভক্তির থেকে বেশি ভয় করে মানুষ। বাগবাজারের এই মন্দিরে যমরাজ ভীষণ জাগ্রত।
মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে অনেকে। মন্দিরে এসে যমরাজকে নারকেল দিয়ে পুজো দেন বোন যমুনা নাকি ভাইয়ের মঙ্গলকামনায় ফোঁটা দিয়েছিলেন যমের কপালে। তাই প্রতিবছর ভাইফোঁটায় বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। ভবিষ্য পুরাণে লেখা আছে যে এই দিনে যমুনা তার ভাই যমকে তার বাড়িতে রাতের খাবারের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
এই দিনে ভাইয়েরা তাদের বোনদেরকে উপহার দেয়। যতদূরেই থাকুক না কেন, ভাইফোঁটার দিন দিদি বা ভাইয়ের বন্ধন যে আরও বেড়ে যায়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম