।। প্রথম কলকাতা ।।
চলতি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হেরে রূপকথার সফর শেষ হয়েছে আফগানদের। এবারের বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টে আন্ডারডগ হয়েই খেলতে নেমেছিল রশিদ-নবীরা। কিন্তু ইংল্যান্ড, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে হারিয়ে গোটা ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল আফগানিস্তান। একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ক্রিকেট খেলায় যে এভাবে উন্নতি করতে পারবে, সেটা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। একটা কথা বলতেই হয়, চলতি বিশ্বকাপ থেকে আফগানরা বিদায় নিয়েছে ঠিকই, কিন্তু ২২ গজে এই তাঁদের লড়াই চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
কাবুলিওয়ালাদের দেশ আফগানিস্তান। একটা সময় ছিল যখন কলকাতায় প্রায়শই দেখা যেত কাবুলিওয়ালাদের। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাবুলিওয়ালা গল্পে রহমত শুধু একটা চরিত্র ছিল না, সমগ্র কাবুল সম্প্রদায়ের প্রতীক ছিল। কিন্তু এখন সেসব অতীত। বদলে গিয়েছে অনেক কিছুই। গুলি, বোমার আওয়াজে আফগানিস্তানের মানুষেরা এখন সন্ত্রস্ত। ২০২১ সালের ১৫ অগস্ট আফগানিস্তানের দখল নেয় তালিবানরা। বিশ্বকাপের মঞ্চে যে পতাকা নিয়ে মাঠে নেমেছিল আফগানিস্তান দল। কালো, লাল ও সুবজ রঙের সেই পতাকা আর নেই তালিবানের আফগানিস্তানে। মাঠে যে জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছেন রশিদরা। সেই জাতীয় সঙ্গীতও যে আর নেই। কারণ তালিবানের দেশে এখন আর কোনও জাতীয় সঙ্গীতও নেই।
তবে পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত না থাকলেও রয়েছেন রশিদ খান, মহম্মদ নবীরা। তাদের সাফল্যের আনন্দটুকু ছাড়া আর কিছুই নেই আফগানিস্তানের মানুষদের কাছে। তালিবানরা দেশের সব বিষয়ে ঢুকলেও, ক্রিকেটে তাঁরা নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করেনি। তবে সেটা শুধু পুরুষদের ক্রিকেটে। কারণ তালিবানের আফগানিস্তানে মহিলাদের ক্রিকেট খেলা মানা। রশিদদের ক্রিকেট খেলা নিয়ে তাদের কোন আপত্তি নেই। কারণ গোটা বিশ্বের সঙ্গে মিশে যেতে ক্রিকেট যে তাদের অন্যতম মাধ্যম তা ভালো মতই জানে তালিবানরা। চলতি বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে দেশের মানুষের হাসি ফুটিয়েছেন রশিদ খান, নবীন উল হক, মুজিব উর রহমানরা।
পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং শ্রীলঙ্কার মতো বড় দলকে হারিয়ে তাক লাগিয়ে দেয় আফগানিস্তান। প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে জয় রশিদদের নায়ক বানিয়ে দিয়েছে। মহম্মদ খান জাদরানের হাত ধরে রহমনুল্লা গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান এবং মুজিব উর রহমানের মতো ক্রিকেটারেরা উঠে এসেছেন। ২০১৫ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপের মঞ্চে পা রাখে আফগানিস্তান। সেবার মহম্মদ নবীর আফগানিস্তান ইংল্যান্ডকে হারিয়ে অঘটন ঘটিয়েছিল। পরের বিশ্বকাপে একটিও ম্যাচ জিততে পারেনি আফগানিস্তান। কিন্তু এবার নয়টি ম্যাচের মধ্যে চারটিতে জয় তুলে নিয়েছে তাঁরা। অনেকে মনে করছেন বিশ্বকাপে আফগানদের এই সাফল্য বিশ্ব ক্রিকেটের দরবারে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। আগামী দিনে যা তাদের আরও এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম