।। প্রথম কলকাতা ।।
China Myanmar Civil War: গৃহযুদ্ধের আগুনে পুড়ছে ভারতের পড়শি দেশ। আর তাতে একের পর এক ইন্ধন যোগাচ্ছে চীন। এই দেশটা বড়সড় ফাঁদে পড়ে গেছে বলে মনে করছেন বহু বিশেষজ্ঞ। জড়িয়ে পড়ছে চীনের জটিল জালে। বলা হচ্ছে মিয়ানমারের কথা। ‘নবভারত টাইমস’ এর রিপোর্ট বলছে, ভারতের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার বর্তমানে গৃহযুদ্ধের ভয়াবহ আগুনে পুড়ছে। বিদ্রোহীরা দেশের অনেক এলাকা দখল করে নিয়েছে এবং মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট নিজেই স্বীকার করেছেন যে দেশটি বহু অংশে বিভক্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এখন অবস্থা এমন যে একদিকে যেখানে মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা চীন ও ভারতের সীমান্তের কাছে তাদের দখল জোরদার করছে, অন্যদিকে জান্তার সরকারি বাহিনী অনেক এলাকা থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন মিয়ানমারে একটি বড় খেলা খেলছে এবং সরকারি সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের অস্ত্র সহায়তা দিয়ে ব্রিটিশদের ডিভাইড অ্যান্ড রুল নীতি অনুসরণ করছে। ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে মিয়ানমারে সামরিক জান্তা যখন অং সাং সু চি’র সরকারকে অপসারণ করেছিল, তখন চীন এটিকে ‘মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের পরিবর্তন’ বলেছিল। এই রক্তক্ষয়ী বিপ্লবের পর মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধে এ পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ২০ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ। এত কিছুর পরও চীন মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
শুধু তাই নয়, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা উত্তেজনাকে আরও উসকে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে চীন। বর্তমানে, চীন মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার এবং জান্তা সরকারের কাছে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে গৃহযুদ্ধের মধ্যে থাকা এ দেশে চীন তার কৌশলে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। বিদ্রোহীদের জোট থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স উত্তর মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করলে চীন এই পরিবর্তন করে। থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সঙ্গে চীনের নিরাপত্তা সেবার সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। চীন সীমান্তের কাছে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স খুবই সক্রিয়। মায়ানমারের এই পুরো এলাকাকে চীনা প্রভাবের এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখন এই জোট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জন্য সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও চীন এ বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি।
মিয়ানমারের বিশ্লেষকরা বলছেন, থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স এখন পর্যন্ত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছ থেকে ২০০টি সামরিক ঘাঁটি দখল করেছে। এ ছাড়া চীনের সঙ্গে চারটি বাণিজ্য পথ এবং ভারতের সঙ্গে দুটি বাণিজ্য পথের মধ্যে একটি এখন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন চায় না সামরিক সরকারের পতন হোক, কিন্তু একই সঙ্গে বিদ্রোহীদের অনেক সাহায্যও করছে। এটি চীনের বিভাজনের কৌশল, যা মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধকে আরও উস্কে দিচ্ছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম