।। প্রথম কলকাতা ।।
হামাসের ছায়ায় ঢাকছে চীন? পাতাল ফুঁড়ে তৈরি করেছে রহস্যে ভরা আস্ত শহর। গোপন শহরে ইঁদুরের মতো কী পুষেছে বেইজিং? জানেন “র্যাট ট্রাইবেল” কারা? কতটা ভয়ঙ্কর? সুড়ঙ্গ শহরে কিভাবে কিলবিল করে এরা? অসময়ের অস্ত্র নাকি চীনের ডার্ক সাইড? একের পর এক নিখোঁজ নেতা মন্ত্রী থাকেন কী মাটির নীচের এই কাল কুঠুরিতে? অন্ধকারে ঢাকা “ডিক্সিয়া চেং” কী অন্য গ্রহ? চেনা পৃথিবীর বাইরের হিসেব চলে এখানে। দেখুন বেইজিং এর মাটির নীচে কিভাবে বাঁচে রাশিয়ার ভয়ে জবুথবু এক প্রাণীকূল। তিন তলা সুড়ঙ্গ মাটির নিচে। হামাসের পথ ধরে এতদূর পৌঁছে গেছে চীন? কোন অজানার রহস্য আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে চীনের মাটির তলার এই গোপন সুড়ঙ্গে? সেখানেই গিজগিজ করছে ১০ লক্ষ “র্যাট ট্রাইবেল”। পৃথিবীর আলো পৌঁছয় না মাটির তলার ওই অন্ধকার শহরে। তাহলে কি ঘটে সেখানে? কেন শি এর দেশ পাতাল ফুঁড়ে বানিয়েছে এত বড় একটা ভুতুড়ে শহর?
বেইজিং কে চেনে জানে গোটা বিশ্ব। বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহর চীনের রাজধানী বেইজিং। জাঁকজমক ও কোলাহলপূর্ণ এই শহরে রয়েছে একাধিক সরকারি ভবন। তবে, এই শহরের মাটির নিচেই রয়েছে আরেকটি ‘গোপন’ শহর যা হয়তো অনেকেরই অজানা। অদ্ভুত এই শহরের নাম ডিক্সিয়া চেং। আয়তন ৭৮ বর্গকিলোমিটার। ডিক্সিয়া চেংয়ের অবস্থান বেইজিংয়ের ১০ থেকে ১৮ মিটার গভীরে। সেখানেই বাস করে ‘র্যাট ট্রাইবাল’ নামের এক জাতি। মাটির নীচে থাকেন বলে তারা এই নামে পরিচিত। অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব। মাটির ওপরের মানুষের ভিড় বা আলোর ছটা নেই এখানে। “র্যাট ট্রাইবাল” রা বাঁচে অন্ধকারে অন্য জগতে। শুরুটা ১৯৬৯ সালে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের মধ্য উত্তেজনা চরমে ওঠে। সেই সময় এই ভূগর্ভস্থ শহর নির্মাণের নির্দেশ দেন কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান মাও সে তুং। খাদ্য সঞ্চয় ও যুদ্ধের জন্য এই শহরকে প্রস্তুত করতে বলেন তিনি।
যেমন কথা, তেমন কাজ। ডিক্সিয়া চেং শহরের নকশা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল, যাতে শহরটিকে যে কোনো হামলা থেকে রক্ষা করা যায়। এমনকি বেইজিংয়ের ওপর হামলা হলেও দেশটির নেতা, সরকারি কর্মকর্তা, সাধারণ মানুষ যাতে আশ্রয় নিতে পারে এই গোপন শহরে সেই জন্য একাধিক প্রবেশপথও তৈরি করা হয়েছিল। এই শহরে একসঙ্গে প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষ থাকতে পারবেন বলে তখন দাবি করেছিল চীনা সরকার। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি বদলেছে। তাই, চীনের রাজধানী শহরের বিপুল জনসংখ্যা, সীমিত জমি ও ভবনের দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় প্রায় ১০ লক্ষ। মানুষ এখন এই ভূগর্ভস্থ শহরে বসবাস করে। অর্থাৎ যে প্ল্যানিংয়ে তৈরি করা হয়েছিল এই শহর সেই উদ্দেশ্য সাধন হয়নি। তার জন্য শহরের সুড়ঙ্গগুলোও কখনওই ব্যবহার করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে এই শহরে বসবাস করা মানুষ সুড়ঙ্গের বাকি বাড়িগুলোকে কম টাকার হোটেল এবং অন্যান্য ব্যবসায় কাজে লাগাতে শুরু করে।
এই ডিক্সিয়া চেং এর যে সুড়ঙ্গপথ রয়েছে, সেগুলো তিন তলা এবং শহরের সমস্ত কেন্দ্রীয় সরকারি ভবনের সঙ্গে যুক্ত। মনে করা হয় ডিক্সিয়া চেংয়ে ঢোকার জন্য প্রায় ৯০টি প্রবেশপথ রয়েছে। যার অনেকগুলো এখনও রয়েছে লোকচক্ষুর আড়ালে।সিএনএনের রিপোর্ট অনুযায়ী, দিনের আলো না গেলেও এই শহরে দোকানপাট, খেলাধুলার জায়গা, রেস্তোরাঁ, সেলুন, থিয়েটার ও অন্যান্য সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এই গোপন শহরের বাড়ি ভাড়া খুব কম হওয়ায় বাইরে থেকে কাজের খোঁজে আসা অনেক তরুণ-তরুণী প্রথমে ডিক্সিয়া চেংয়ে আশ্রয় নেন। টাকা জমিয়ে বেইজিংয়ের বুকে সুস্থ জীবনযাপন করার আশায় বুক বেঁধে অনেকে সারা জীবনই এই শহরে কাটিয়ে দেন। বছরের পর বছর ধরে এই শহর, অন্ধকার গলি পর্যটকদের কাছেও অন্যতম আকর্ষণের জায়গা হয়ে উঠেছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম