।। প্রথম কলকাতা ।।
Turkey And Syria Earthquake: গোটা বিশ্বের মানুষ এখন প্রার্থনা করছে তুরস্ক (Turkey) আর সিরিয়ার (Syria) জন্য। সোমবারের ঘটা ভূমিকম্পের (Earthquake) পর এখনো পর্যন্ত উদ্ধারকার্য চলছে, মৃত্যুর সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় ১৫ হাজার। আশঙ্কা করা হচ্ছে যাদের উদ্ধার করা হবে তাদের অধিকাংশই হবে মৃত। মাঝে মাঝে এমন সব ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে আসছে যা দেখে চোখে জল ধরে রাখা যাচ্ছে না। উদ্ধারকর্মীরাও পর্যন্ত কেঁদে ফেলছেন। ভয়াবহ মৃত্যুর তাণ্ডব লীলার কাছে তুচ্ছ হয়ে গিয়েছে মানুষের প্রাণ। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে হাজার হাজার বাড়ি। যার নিচে চাপা পড়েছে অজস্র মানুষ।
ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এক সাত বছরের শিশু করুণ আর্তনাদ করে বলছে “আমাদের উদ্ধার করুন, আমি আর আমার ভাই সারা জীবন আপনার সার্ভেন্ট থাকব”। পাশাপাশি নিজের হাত দিয়ে ভাইয়ের মাথা আগলে রাখার চেষ্টা করছে। শরীরের উপরে রয়েছে ধ্বংসস্তূপের বিশাল বোঝা। ছোট্ট ভাই ইলাফকে (Elaf) নিয়ে সে নিশ্চিন্ত বাড়িতে ঘুমাচ্ছিল। এছাড়াও বাড়িতে ছিল পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। আচমকা ভূমিকম্প এসে ওলট-পালট করে দিয়েছে তাদের জীবন। প্রায় টানা ৩৬ ঘন্টা পর তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। টানা ৪০ ঘন্টা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে ছিল মোহাম্মদ নামক একটি শিশু, শরীরের উপর ছিল ধ্বংসস্তূপের বোঝা। অস্ফুট স্বরে সে জলের আশায় আর্তনাদ করছিল। উদ্ধারকর্মীরা তার মুখে জল দিতেই সে যেন প্রাণ ফিরে পায়। করুণ কণ্ঠস্বরে বাঁচার আকুতি জানায়। সিরিয়া থেকে উঠে এসেছে আরেকটি মর্মান্তিক ভিডিও, যেখানে এক বালক ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে একটি ভিডিও করছে। সে জানায় আদৌ সে বেঁচে ফিরবে কিনা তা জানে না। কারণ পুনরায় আবার ভূমিকম্প শুরু হয়েছে। তার সাথে আরো কয়েকজন আটকে রয়েছে। পরবর্তীকালে সেই বালকের পরিণতির কথা জানা যায়নি। এক অসহায় বাবার সামনে উদ্ধার করা হয়েছে তার নবজাতক শিশুর মৃতদেহ। সেই বাবা শিশুকে জড়িয়ে পাগলের মত ধ্বংসস্তূপের উপর দাঁড়িয়ে কাঁদছেন। তার কাছে হারানোর বলে অবশিষ্ট আর কিছু নেই। এই এক রাশ দুঃখের মাঝেও কিছু কিছু সফলতার ছবিও দেখতে পাওয়া যায়। তুরস্কের ভয়াভয় ভূমিকম্পের এক দিন পরে জীবন্ত উদ্ধার হয়েছে ছয় মাস বয়সী শিশু এবং তার মাকে। দুর্ঘটনার ২৯ ঘণ্টা পর অলৌকিকভাবে উদ্ধার করা হয়েছে দু মাসের একটি শিশুকে। যাকে জড়িয়ে ধরে আবেগে কেঁদে ফেলেন উদ্ধারকর্মীরা।
মারণ ভূমিকম্পে আহতদের সংখ্যা গোনা বৃথা চেষ্টা। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি আর আদৌ হয়ত জানা যাবে না সোমবারের ভোররাত্রে কার ভাগ্যে কি ঘটেছিল। তুরস্কের এই ভূমিকম্পের জেরে নিখোঁজ ১ ভারতীয়। এছাড়াও দেশটির প্রত্যন্ত এলাকায় ১০ জন ভারতীয় আটকে রয়েছেন, যদিও তারা এখন সবাই সুস্থ এবং নিরাপদে রয়েছেন। এই ভূমিকম্পে কত বাবা মা যে সন্তান হারা হলেন কিংবা কত সন্তান যে অনাথ হয়ে গেল তার হিসেব হয়ত এই মুহূর্তে করাটা বেশ মুশকিল।
সোমবার ভোরে হঠাৎ করেই তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বে গাজিয়ানটেপ (Gaziantep) এলাকা কেঁপে ওঠে। মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভিসের (US Geological Service) তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ভোর ৪টে ১৭ মিনিট নাগাদ এই এলাকার প্রায় ১৭.৯ কিলোমিটার অঞ্চল তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে। আপাতত গোটা দেশ জুড়ে ভূমিকম্পের আতঙ্ক। মাত্র ১৫ মিনিটের ব্যবধানে দেশটি পেয়েছে ভূমিকম্পের আফটার শক। দ্বিতীয় ভূমিকম্পের মাত্রাটিও কম জোরালো ছিল না, রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৬.৭। এর ৯ ঘন্টার মধ্যে আবার তুরস্ক কেঁপে ওঠে। দেশটি এক দিনের মধ্যে প্রায় ১০০ টার কাছে আফটার শক পেয়েছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম