।। প্রথম কলকাতা ।।
Swami Vivekananda: স্বামীজি কাঁচালঙ্কা খেতে বড্ড ভালোবাসতেন। ভারতীয়দের তুলনা করেছিলেন ঘোড়ার সঙ্গে। যদিও তাঁর প্রিয় খাবারের তালিকায় অনেক নানান খাবার ছিল। তবে লঙ্কা প্রীতি ছিল একটু বেশি। মিষ্টি পছন্দ করলেও একবার খিচুড়িতে মিষ্টি দেওয়ার কারণে তিনি লঙ্কা চিবিয়ে খেয়েছিলেন। এমনকি শোনা যায়, লন্ডনে তিনি নাকি লঙ্কা কিনে খেতে। তিনি নিজেও খুব ভালো রান্না জানতেন। নিজে খেতে যেমন ভালোবাসতেন তেমন অন্যকে খাওয়াতেও ভালবাসতেন। যদিও তার প্রিয় খাবার মিষ্টি কিনা সেই নিয়ে নানান বিতর্ক রয়েছে। স্বামীজির সঙ্গে আরেকটি অদ্ভুত বিষয় জড়িয়ে রয়েছে, তা হল তিনি নিজের মৃত্যুর ভবিষ্যৎবাণী নিজেই করেছিলেন। শঙ্করের ‘জানা-অজানা বিবেকানন্দ’ নামক বইয়ের তথ্য অনুযায়ী ১৯০২ সালের জুলাই মাসে ভগিনী নিবেদিতাকে স্বামী বিবেকানন্দ (Swami Vivekananda) নিজের হাতে খাইয়েছিলেন। সেদিন তিনি তাঁর মৃত্যুর কথা নিবেদিতাকে আকার ইঙ্গিতে জানিয়ে দেন। অতিরিক্ত পরিশ্রম আর অনিয়মের কারণে তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছিল প্রায় ৩১ টি রোগ। গোটা ভারতবাসীর কাছে এক আবেগ আর প্রেরণার নাম বিবেকানন্দ। ১৮৬৩ সালের ১২ই জানুয়ারি তাঁর জন্ম। প্রতিবছর তাঁর জন্মদিনকে কেন্দ্র করে গোটা ভারতবর্ষে জাতীয় যুব দিবস পালন করা হয়।
স্বামী বিবেকানন্দের (Swami Vivekananda) প্রত্যেকটি বাণী আমাদের আত্মিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটায়। তাঁর কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভিন্ন বিষয় আমাদের জীবনকে অনুপ্রাণিত করে। দার্শনিক বোধে উদ্বুদ্ধ স্বামীজি ছিলেন অত্যন্ত সক্রিয় মননশীল। লন্ডনে পড়ার সময় অধ্যাপক পিটার্স একেবারেই সহ্য করতে পারতেন না স্বামীজিকে। খাবার টেবিলে তিনি স্বামীজিকে ইচ্ছাকৃতভাবে শুনিয়ে বলেছিলেন, শুয়োর ও পাখি একসাথে কখনোই বসতে পারে না। এই কথার প্রত্যুত্তরে স্বামীজি বলেছিলেন, ঠিক আছে পাখি তাহলে উড়ে চলে যাচ্ছে। এই বলে চলে গেছিলেন অন্য টেবিলে। ক্ষুব্দ অধ্যাপক পিটার্স পরেরদিন স্বামীজির পরীক্ষার খাতার পিছনে ইডিয়েট লিখে দেন। স্বামীজি বিনম্র মুখে অধ্যাপককে বলেছিলেন যে তিনি শুধুমাত্র সই করেছেন কোন গ্রেড দেননি। তাঁর অদম্য বিচক্ষণ বুদ্ধি এবং সাহসিকতা আজও গোটা দেশকে আপ্লুত করে।
একবার এক বিদেশি ব্যক্তি ভারতীয় মানুষদের ব্যঙ্গ করে জানান যে, ভারতীয়দের গায়ের রং যেহেতু ভিন্ন তাই তারা একত্রে কোন দিনও থাকতে পারে না। প্রত্যুত্তরে স্বামীজি বলেছিলেন, ঘোড়ার গায়ের রং ভিন্ন কিন্তু ঘোড়া একত্রে থাকে। অথচ গাধার গায়ের রং অনেকটা একরকম হলেও তারা একত্রে থাকতে পারে না। এই কথা শুনে সাদা চামড়ার সাহেব ব্যক্তিটি নির্বাক হয়ে গেছিলেন। স্বামীজি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউরোপে প্রচার করেছিলেন হিন্দু ধর্ম এবং ভারতীয় বেদান্ত ও যোগদর্শন। হিন্দুধর্মকে বিশ্বের সামনে অন্যতম একটি ধর্ম রূপে তুলে ধরেছিলেন শিকাগো শহরে। প্রকৃতপক্ষে তিনি ছিলেন হিন্দু পূনর্জাগরণের পুরোধা ব্যক্তিত্ব। তাঁর অদম্য জেদ, সাহসিকতা, বাণী ও বিচক্ষণতায় অনুপ্রাণিত হয়ে প্রতিবছর ভারতবাসী স্বামীজির জন্মদিনে পালন করেন ‘জাতীয় যুব দিবস’।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম