।। প্রথম কলকাতা ।।
এই সিজন চেঞ্জের সময় ঘরে ঘরে ফ্লু’র অ্যাটাক। একরকম মারাত্মক সর্দি-জ্বর। শ্বাসকষ্ট হলেই আপনার সঙ্গে কিন্তু বড়সড় একটা বিপদ ঘটে যেতে পারে। ৩ দিনের বেশি হলেই রিস্ক? একদম হালকাভাবে নেবেন না! কখন আপনার ভেতর এই মারাত্মক রোগটা জাঁকিয়ে বসবে, টের পারবেননা। সিম্পটম গুলো মাথায় গেঁথে নিন। কী করলে তাড়াতাড়ি সেরে উঠবেন? জানাটা আপনার দরকার। গলাব্যথা কমাতে একটা স্যুপ অব্যর্থ। খাদ্যতালিকায় কয়েকটা জীনিস মাস্ট, হেমন্তের এই সাঙ্ঘাতিক ফ্লু’তে দুর্দান্ত কাজ করবে। ইমিউনিটি সিস্টেমের দিকে নজর দিন। ভয় নয়, সচেতন হোন। শিশু থেকে বয়স্ক, সকলকে সাবধানে রাখুন। জ্বর। নাক থেকে ঘনঘন জল পড়া। সঙ্গে গলা ব্যথা, খুসখুসে কাশি আর তা থেকেই শ্বাসকষ্ট। কাবু করে দিচ্ছে হেমন্তের এই ফ্লু।
শীত শীত ভাব এসে গেছে, ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি-কার্শিতে ভুগছে ছোট থেকে বড়। সঙ্গে নাক ও চোখ দিয়ে জল পড়া, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, সারা শরীরে ব্যাথা, শারীরিক ক্লান্তি, দুর্বলতা, মাথা ব্যাথা এই ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম লক্ষণ। এরমধ্যে কিছু লক্ষণ দেখে বুঝে আগে থেকেই সাবধান হোন। কারো কারো ক্ষেত্রে জ্বর ১০২-৩ অব্দি উঠছে, কারোর আবার জ্বর কম, সর্দি কাশি, নাক দিয়ে জল পড়াতে নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে। প্যারাসিটামল খেয়ে জ্বর কমলেও গলা ব্যথা, কাশি থেকে যাচ্ছে। শুকনো কাশিতে মারাত্মক কষ্ট। সেখান থেকে শ্বাসকষ্টহলেই বিপদ হতে পারে। এই শীতকালে বয়স্কদের হাঁপানির সমস্যা কিন্তু বেড়ে যায়। তাছাড়া যাদের শ্বাসে সমস্যা রয়েছে, হৃদরোগে ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রেও এটা খুব ভাইটাল একটা সময়। সেক্ষেত্রে রোগীকে বাড়িতে ফেলে না রেখে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ফ্লু’র অবস্থার অবনতি ঘটলে নিউমোনিয়ার মতো মারাত্মক রোগও বাসা বাঁধে শরীরে। তাই আগেভাগেই সাবধান হয়ে যান।
আপনি চাইলে প্রথম থেকেই নিউমোনিয়া বা শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি এড়াতে পারবেন। এর জন্য ডায়েটে রাখুন মরশুমি কিছু সবজি-ফল। পালং শাক, বাঁধাকপি, ব্রকোলি, ফুলকপি, বিটরুট, গাজরের মতো সবজি খেতে পারেন। এগুলো শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। শরীরকে জীবাণুমুক্ত রাখতে খেতে পারেন পাতিলেবু, কমলালেবু, বেরি, কিউই। বিশেষ করে কো-মর্বিডিটি থাকলে এই মরসুমে বেশি সাবধানে থাকা জরুরি। যেমন রাতের দিকে বাইরে বেরোলে গায়ে মাথায় কিছু জড়িয়ে বেড়ানো, যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তারা ছাতিম ফুলের গাছ রয়েছে এমন জায়গায় মাস্ক পড়া, ঠান্ডা পানীয় এড়িয়ে চলা, আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে টক দই খাওয়া। এই সময় খাদ্যতালিকায় রাখতে ভুলবেন না হলুদ, আমন্ড, রসুন, তুলসী পাতা, আদার মতোর কতগুলো “সুপারফুড”। এছাড়া জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল খেলেও, সেটা খালি পেটে নয়।চিকিৎসকরা বলছেন, এই ফ্লু’কে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। বারবার জ্বর আসতে থাকলে ঘরে বসে নিজেই ডাক্তারি করবেন না। মানে, ইচ্ছেমতো ওষুধ না খেয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। মাথায় রাখুন, জ্বর ৩ দিনে না সারলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর অবশ্যই এই সময় বিশ্রাম নিতে হবে।
কথায় বলে, ওষুধের চেয়ে পথ্য বড়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি গলা ব্যথা কমাতে একটা স্যুপ দুর্দান্ত কাজ করে। বাড়িতে গাজর, ধনেপাতা আর চিকেন স্টক থাকলেই এই স্যুপটা নিয়ে খেলে আরাম মিলতে পারে তাছাড়া জ্বর হওয়ার আগে থেকে কিছু প্রিকশন নিন। যেমন
- বাইরে বেরোবার সময় মুখে মাস্ক লাগান, হাত সানিটাইজড করুন।
- শ্বাসনালীকে পরিষ্কার রাখতে সময় বের করে একটু স্টিম নিন।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রোটিন এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর খাবার খান, ইমিউনিটিকে মজবুত করুন।
- তেল মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন।
- নিয়মিত শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করুন, নিজেকে ফিট রাখুন। ঘুমের দিকে নজর দিন।
- বেশি করে জল খেতে হবে, শরীরে জলের পরিমাণ কমে গেলে যে কোনও সংক্রমণ জাঁকিয়ে বসে। তাই শরীর আর্দ্র রাখা জরুরি। শরীরে জমে থাকা টক্সিনকে বের করতে পর্যাপ্ত পরিমানে জল খান।
ফ্লু হল শীতকালের সাধারণ একটি সমস্যা। মূলত ভাইরাস সংক্রমণের ফলেই এমন হয়। তাই, বিশেষ উইন্টার কেয়ারে থাকুন। শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারলে এই ধরনের সমস্যা অনেকটা এড়িয়ে চলা যায়। সঙ্গে সুস্থ অবস্থাতেও গার্গেল করতে পারেন মাঝেমধ্যেই, তাহলে গলার সমস্যা, ঠাণ্ডা লাগা এগুলো অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম