।। প্রথম কলকাতা ।।
বাংলাদেশ নিশ্চিত করবে ভারতের সর্বোত্তম নিরাপত্তা! হঠাৎ এত বড় কথা! বৈশ্বিক শক্তিতে ভারতের উত্থান, সেখানেই স্বার্থ খুঁজছে বাংলাদেশ। সামনেই নির্বাচন। কাউকে চটালে মুশকিল। তাহলে কি শক্ত খুঁটি হিসেবে চাইছে ভারতকে? শক্তিধর দেশগুলো নির্বাচন ইস্যুতে হাত ধুয়ে নেমে পড়েছে বাংলাদেশের পিছনে। এই সময় সাপোর্টের বড্ড প্রয়োজন। ঠিক সেই মুহূর্তে বারংবার বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ভারতের নাম। বাংলাদেশ স্থিতিশীল থাকল কি থাকল না তাতে কি সত্যি ভারতের কিছু যায় আসে?
একদিকে ভারতের শিলচর, অপরদিকে বাংলাদেশের সিলেট। মাঝখানে কাঁটাতারের ব্যবধান থাকলেও সম্পর্কে কিন্তু নাড়ির টান। দেশভাগ ভৌগলিক ম্যাপ পরিবর্তন করেছে মাত্র। ভাগ করতে পারেনি মানুষের আবেগ। ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে শিলচর-সিলেট উৎসবের আয়োজন করা হয়। যা প্রতিবছর একটু একটু করে উন্মোচন করছে দুই দেশের সম্পর্কের নতুন দুয়ার। লাভবান হচ্ছে দুই দেশই। শিলচরের সঙ্গে বাংলাদেশের সিলেট শহরের সড়ক সীমান্তের যোগাযোগ অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। খতিয়ে দেখা হয়, দুই দেশের স্বাস্থ্য, পর্যটন, ডিজিটাল পরিকাঠামো, শিক্ষা থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে নানান সম্ভাবনার দিক। দিল্লি এবং ঢাকা, দুই সরকারই চাইছে এই দুই শহরের মধ্যে যাতে সংযোগ আরো বৃদ্ধি পায়। গৃহীত হয়েছে সিলেট ঘোষণা পত্র। উদ্দেশ্য, পারস্পরিক লাভজনক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সুসংহত হবে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব। ঐতিহাসিক এবং সংস্কৃতিকভাবে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চল সংযুক্ত রয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে। যা বেশি করে প্রাসঙ্গিক আসামের জন্য।
কিন্তু শিলচর-সিলেট উৎসবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন এমন কিছু কথা বলেছেন যা শুনলে অবাক হতে হয়। তার কথায়, স্থিতিশীল শক্তিশালী আর্থ-সামাজিক রাষ্ট্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে এবং ভারতের জন্য সর্বোত্তম নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। সামনে সুযোগ অসীম। উপলব্ধি করতে পারলেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পৌঁছাবে অনন্য উচ্চতায়। সিলেট এবং শিলচর উৎসব, দুই দেশের অভিন্ন সংস্কৃতি, অনুরূপ খাদ্য থেকে শুরু করে বিশেষ করে উত্তর পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। মোমেনের কথায়, দুই দেশের ভাগ্য অবিচ্ছেদ্য ভাবে জড়িত। দুই দেশের ভবিষ্যৎ এর ভিত্তি অভিন্ন সমৃদ্ধির উপর। বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে ভারত যেভাবে উন্নতি করছে, ঠিক সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে খুঁজে পাচ্ছে একটা বড়সড় সুযোগ।
দেখুন, ভূরাজনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশের গুরুত্ব তো অবশ্যই রয়েছে। দেশটার দিকে কড়া নজর রেখেছে চীন। সেই ইস্যুটাকেই আড়ালে রেখে কি এমন কথা বললেন মোমেন? নাকি নির্বাচনের আগে বড় মাস্টারস্ট্রোক এভাবেই দিতে চাইছেন? শক্ত খুঁটি হিসেবে পাশে চাইছে ভারতকে। ভারত কিন্তু এখন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে একদম চুপ। মোমেন কি শুধুমাত্র দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতির জন্য বলেছেন, নাকি সামনে নির্বাচনকে টার্গেট রেখে বলেছেন, তা আপাত দৃষ্টিতে বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু এই নিয়ে শুরু হয়ে গেছে বহু আলাপ-আলোচনা। তবে যাই হোক, দুই দেশই বন্ধুত্বের নীতিতে বিশ্বাসী। একে অপরের বিপদ থেকে শুরু করে ছোটখাটো অসুবিধায় পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে যদি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা ভারতের বিন্দুমাত্র ভালো লাগবে না।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম